:::: MENU ::::
  • slider image 1

    Take my hand, take my whole life too.

  • slider image 2

    I never want to live without you

  • slider image 3

    I am who I am because of you.

বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫

  • ৬:০৮:০০ PM

দেখতে দেখতে জীবনের ২৬ টি বছর কিভাবে পার হয়ে গেল কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না।জন্ম থেকে দুরন্ত শৈশব,শৈশব পেরিয়ে ডানপিটে কৈশোর, তারপর কিশোর বয়সের উন্মাদনা পেরিয়ে যৌবনের সাতটি বছর কেটে গেছে দেখতে দেখতেই।
বড় আদরে বেড়ে উঠা শৈশবের দিনগুলিকে আজো মনে হয় চোখের সামনে দেখতে পাই।কিছুটা ফ্যাকাসে-বিবর্ণ হয়ে গেলেও সেই শৈশব যেন আজো স্মৃতিতে বারবার ফিরে আসে! যে শৈশব ছিলো দুপুরের কাক ফাটা রৌদ্রে পুকুরে সাতার কাটার শৈশব,পাখি আর প্রজাপতিদের পেছনে সারাদিন ঘুরে বেড়ানোর শৈশব কিংবা রঙিন ঘুড়ির আবদারে সারাদিন বায়না ধরার শৈশব ! 
প্রতি সপ্তাহের শনিবার,মঙ্গলবারে  হাটুরে ব্যাগ হাতে দাদার আঙুল ধরে হাটে যাওয়া আর
খয়ের কিংবা সুধীব হালাইকারের নানা জীবজন্তুর আকৃতিতে বানানো বাতাসা খাওয়ার শৈশব।
আহা! কোথায় আমার হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি....!!
তারপর হঠাৎ করেই একদিন বুঝতে পারলাম আমি বড় হয়ে গেছি। পড়নের সুতি, জিন্স কিংবা পলিস্টারের হাফ-প্যান্ট,গেঞ্জি আর জামা গুলো খুব দ্রুত ছোট হয়ে যাচ্ছে(আমার কাছে সেসময় তাই মনে হত।মনে হত কাপড় গুলোই ছোট হচ্ছে!)। তারপর কোন এক সময় হাফ প্যান্ট ছেড়ে ফুল প্যান্ট পড়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল। আর সেই ছিলো আমার জীবনের দ্বিতীয় পর্যায়,ডানপিটে সেই কিশোরবেলা।
বাবা-মা,দাদা-দাদী,চাচা-চাচী,ফুফুদের খুব আদরে আদরেই হয়ত কিশোর বয়সের ডানপিটে জীবন পেয়েছিলাম।লেখা পড়ায় মন্দ ছিলাম না কিন্তু দুষ্টোমিতেও কম ছিলাম তা বলা যায় না! :P  (তবে আমার দুষ্টোমি কখনোই বাড়াবাড়ি পর্যায়ের ছিলো না বা আমার দ্বারা কারো ক্ষতিও হয়নি কখনো।)
কৈশোরের দুরন্তপনা ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরে এসেছিলো নিজের অজান্তেই। নিজের প্রতি নিজের ভাললাগা তারপর ভাললাগার ক্লাসিফিকেশন। সেটাও শুরু হয়েছিলো জীবনের তেরো কি চৌদ্দতম বছরে। :) সেই তো শুরু জীবনের গতির উঠা নামার। আর এই জীবনের এক্সিলারেটরে কখনো এক গতিতে এগুনো হয়নি।বার বার ব্রেক কষে গতি কমিয়েছি রং ড্রাইভে। রং রুটে চলতে গিয়ে পিছনে পড়েছি বহুবার তারপর যখন সিধে রুটে ড্রাইভ করতে শিখলাম জীবনের গাড়িটা তখন কৈশোরের ভুল ড্রাইভিং এর মাশুল গুনতে হলো খুব বাজে ভাবে।
বুঝলাম, আমি আর সেই কিশোর নই।যৌবনের প্রথম ধাপে আমার পদার্পন হয়েছে।কিন্তু তাও খুব বাজে ভাবে! :( নিজেকে একটু সামলে নিয়ে লক্ষ্যে যাওয়ার শেষ প্রচেষ্টায় এখন রত আছি।যদিও জানি লক্ষ্য আমার থেকে অনেক দূরে সরে গেছে।কিন্তু শেষ প্রচেষ্টা, একটু দেরী হলেও লক্ষ্যে পৌছানো।আর সেটা অবশ্যই ভুল পথে এবং বাজে ড্রাইভিং এ নয়।।যাই হোক,
এটুকু বুঝতে বুঝতে জীবনের ২৫/২৬ বছর কেটে গেছে। চোখের সামনে একবিংশ শতাব্দীর শুরু হয়ে হয়ে ধীরে ধীরে একবিংশ শতাব্দীর পনেরতম বছর কেটে গেলো।
২০১৫:
এই শতাব্দীর পনেরতম বছর ছিলো আমার জীবনের ভালো মন্দের এক অপূর্ব সংমিশ্রন।
বছরের শুরুতে প্রিয় মানুষের সাথে অপূর্ব কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছি,যা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে মধুর সময় গুলো। বছরের মাঝামাঝি ঠিক ততটাই মন্দ সময় কাটিয়েছি যতটা সুন্দর সময় ছিলো বছরের প্রথমটা।
আর ২০১৫ এর শেষটায় যা পেয়েছি তা অবশ্যই বছরের মাঝামাঝির অপ্রাপ্তিগুলোকে ঢেকে দিয়েছে।
বিশেষ করে ২৯ ডিসেম্বর আমার জন্মদিনে আমার শত শত শুভাকাঙ্ক্ষীর শুভেচ্ছা বার্তায় আমি মুগ্ধ,কৃতজ্ঞ এবং ধন্য হয়েছি।
বিশেষ করে পুলিশ সুপার Mozammel Haque স্যার,Iftekhar Ahmed sir, Somaji নানু, Rajibul ronie ভাই,আব্দুল বারী মৃধা ভাই,জিয়া ভাই,মিঠু সিদ্দিক ভাই,ফারহানা দি,সুমাইয়া আপু সহ আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুদের ভালবাসা পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত,কৃতজ্ঞ। 
#আমি সবার নিকট দোয়া প্রার্থী,আমার জন্য দোয়া রাখবেন যেন আমার কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতে পারি।।
#ওভার অল, ২০১৫ টা আমার জীবনের জন্য আশীর্বাদেরই।আর ২০১৬? জানিনা কি হবে । তবে সৃষ্টিকর্তা যা করেন তা অবশ্যই ভালোর জন্যই করেন,করবেন।

মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

  • ৯:০৫:০০ PM
বাংলাদেশি চ্যানেল গুলোর প্রতি মানুষের অনীহার কারন কি??
যারা এবারের বিপিএল নিয়িমিত দেখলেন তারা হয়ত এর কারন এতক্ষণে টের পাচ্ছেন।শুধু যে একটি চ্যানেলেই এরকম হয় তা না।প্রত্যেকটা বাংলা চ্যানেলেরই একই সমস্যা।
আর সেটা হলো,
পাঁচ মিনিটের অনুষ্ঠানে দশ মিনিট বিজ্ঞাপন। অসহ্য একটা ব্যাপার এটা।আমরা যারা দর্শক তারা কি শুধু বিজ্ঞাপন দেখার জন্য টিভির সামনে বসে থাকব!!কখনোই না।
আমরা জানি এবং বুঝি যে,বিজ্ঞাপন একটা চ্যানেলের আয়ের অন্যতম প্রধান  উৎস।কিন্তু তাই বলে এরকম বিরতিহীন বিজ্ঞাপন!!! যা দর্শকের বিরক্তির উদ্রেক করে,চ্যানেল পাল্টাতে বাধ্য করে!
দেখুন, আমরা দেশি চ্যানেলের উন্নতি কামনা করি।আমরা চাই বাংলাদেশের জনগন ভারতীয় চ্যানেল নির্ভর না হয়ে দেশি চ্যানেল দেখুক।কিন্তু দর্শকের উপর চ্যানেল গুলোর এরকম অত্যাচার চলতে থাকলে সেটা কি করে সম্ভব??
আমি জানি আমার এই কথাগুলো কোন চ্যানেল মালিকের দৃষ্টি গোচর হবে না। কিংবা হলেও তা মূল্যহীন  ।
কিন্তু সত্যিকারেই যদি আপনারা দেশীয় চ্যানেলকে বাংলাদেশি জনগনের নিকট গ্রহনযোগ্য করতে চান তবে এরকম অতিরিক্ত এবং বিরক্তির উদ্রেক করা বিজ্ঞাপন প্রচারের পরিমান কমান।
খুব দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে,চ্যানেল নাইন বাংলাদেশের একমাত্র স্পোর্টস চ্যানেল।কিন্তু বাংলাদেশের জনগনের বহু আকাঙ্খার বিপিএল ফাইনাল ম্যাচেও যেরুপভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে তা সত্যি বিরক্তিকর। প্রতি ওভারের শেষ বল হোক বা না হোক, বল ব্যাটে লাগুলো কি লাগলো না তার আগেই বিজ্ঞাপন চলে আসে।উইকেট পড়ল কি পড়লো না তার আগেই বিজ্ঞাপন চলে আসে। উইকেট টা কিভাবে পড়লো তার রিপ্লেটা আর দেখা হয় না!! এই ত অবস্থা!
জনাব চ্যানেল কর্তৃপক্ষ,
দয়া করে আমাদের মত সাধারণ দর্শকের কথাও ভাবুন! বাংলাদেশি চ্যানেল বিমুখী হতে বাধ্য করবেন না।।

শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫

  • ১:৫৪:০০ AM
ডিসেম্বরের এই কনকনে শীতের মধ্য রাতে টিনের চালায় শিশিরের নৃত্য আর মাঝে মাঝে দুর থেকে পাহারাদার কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ ছাড়া পুরো পৃথিবীটা নিস্তব্দ।যেন কুয়াশার চাদর গায়ে  গাছের পাতারাও ঘুমিয়ে আছে অঘোর ঘুমে, তোর মত ।
শুধু আমি জেগে আছি শিশিরের মত,ঘন কুয়াশার মত একশত বিশ শতাব্দীর স্মৃতিদের সাথে। রাঙানো লেপের কাভারের উষ্ণতাকে বুকে জড়িয়ে যে স্মৃতিরা খেলা করেছিলো, যে স্মৃতির কোন এক অধ্যায়ে আমি হয়েছিলাম সাত মাথায় দাঁড়িয়ে থাকা ফুচকাওয়ালা কিংবা চুড়ুইভাতির ভ্যান্যা তলায় কলার পাতার ঘর।  সেই স্মৃতিদের সাথে জেগে আছি আধারের বুকে কুয়াশায় ধোয়াসা হওয়া তোর স্বপ্ন হয়ে।
বড় জানতে ইচ্ছে করে,
ঘুমের ঘোরে একলা ঘরে বুকের ভেতর মোচর দিলে,
আমায় ভেবে বালিশটাকে কখনো কি
জাপটে ধরিস?
একলা আমি তোর বিরহে কেমন করে একলা ঘরে
নষ্ট হওয়ার কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছি,
বুঝতে পারিস?
#নীলকান্ত ®

রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৫

  • ৮:১০:০০ AM
HELLO GUYS,
I would like to tell you a story.Would you mind, if i want to borrow some time from u? If not then scroll down and read the full story.
Lets start:
Ancient Story: Black Blocked facebook day
Long long ago,it was going the golden period of information technology in Digital Bangladesh and It was also a golden period of  facebook to Bangladeshi people . People had thousands of friends and followers. They used to post their thoughts,Like and comments to other's.Even they were able to communicate with their kith and kin,able to make new relations,promote their business products,able to buy and sell different goods, able to arrange life saving health campaigns etc etc.In a word, facebook was very much known as a platform of social and business relationship. Over all everyone was also very much happy then.
But one day,Suddenly Bangladesh government blocked facebook.No user could use facebook as usual. People thought, it may be technical problem or phone data had been run out.But when they came to know that facebook has been blocked, they were surprised and shocked.
Oh!
Before i telling you the rest,i want to know,
Do you guys curious to know the date of "black blocked fb day " and why government blocked facebook??
Then listen up,the day was 18 November 2015.
And Facebook had been blocked because of a worse thought of some Political people like mp,minister bla bla bla....
Mainly they thought that people of opposite party or the people who were against the judgement taking place that time titled "(War crime) " could use social media to spread violence. Although the so called violence which wasn't taken place and which was only a thought that it can be risen through facebook became the suffering and headache of facebook users. 
Do you know,what the facebook users used to do then??
They found out alternative way of using facebook. They started to use VPN and Proxy Server,Proxy IP to log in facebook and used it.
"Sir,
Was Using of facebook in Bangladesh prohibited /illegal? "One of the listener asked.
No,no dear,certainly not. Using of facebook wasn't prohibited /illegal. Government only blocked facebook from their server/banned local IP to connect with facebook but didn't force over people or didn't force them not to use.So, only a primary level users were remained out of facebook because they didn't know how to use proxy ip/server.. But intermediate and expert level users were able to use facebook via VPN,Proxy ip/server. . Except all these a large number of users couldn't able to use facebook.
Hey guys,
do you know what was the impact of  blocking facebook?
Ok ok.... I'll tell you rest of the story tomorrow. But before leaving a want to ask you something . Are you guys ready?
Then,for a while walk into your imagination and guess, what were the good and bad effects of blocking social media like facebook that time?
Keep thinking.. Write down the good and bad effects . I'll ask you the same question tomorrow. ..
#nilkanto

শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫

  • ৩:৫২:০০ PM
কিছু মানুষের তেল মারার দক্ষতা থাকে অসাধারণ এবং তাদের এই দক্ষতা দেখে আমি যারপরনাই মুগ্ধ।মাঝে মাঝে আফসোসও হয় তাদের সেই মন ভুলানো, প্রাণ মাতানো চাটুকারিতা দেখে। আহা!  কেন যে এসব আমি করতে পারি না! :(
বৌ পটানো থেকে বস পটানো এমনকি স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাকেও এরা পটাতে এতটা দক্ষ যে,খোদ ইবলিস শয়তানও তাদের কাছে হার মানতে বাধ্য।উপরুন্ত, ইবলিস সেই বেচারার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় স্বীয় লেজ আপন পদে ঢুকিয়ে সেলাম ঠুকে চলে যায়!! :P
যাই হোক,ব্যাপার হলোঃ
ধরুন,আপনি একজন নামী দামী ব্যক্তি। স্বাভাবিকভাবেই আপনার চারপাশে মানুষজন মাছির মত ভন ভন করে।আর আপনিও নানা স্বাধের মিষ্টি দিয়ে তাদের চারপাশে রাখেন।এদের মধ্যে কিছু মাছি আছে যারা মৌমাছি আর কিছু আছে যারা কেবলি মাছি। আপনার চারপাশে যেসব মৌমাছি আছে তারা আপনার পাশে থাক বা না থাক আপনার মৌচাকে  ঠিকই মধু সরবরাহ করে যাচ্ছে।কিন্তু তাদের একটাই প্রবলেম আর তা হলো, "চাটুকারিতায় তারা বন্ধা তাই তাদের জমানো মধু আপনি দেখতে পান না এবং হুলওয়ালা। "অতএব, আপনার সুনজর হয়ত তাদের দিকে আছে কিন্তু তারা আপনার কাছ ঘেষতে পারে না।
কারন,
১) তারা চায় না আপনাকে তোষামোদ করতে।
২) তারা আপনার মঙ্গল চায় কিন্তু মনে মনে যা তারা প্রকাশ করতে চায় না।এককথায়, তারা নিঃস্বার্থ ভাবে আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী।
অথবা,
৩) তারা স্বার্থপর হিংসুটে স্বভাবী না।
এবার এই মৌমাছি বাদে যারা আপনার পাশে সারাক্ষণ ভনভন করে তারা হলো সেই সব মাছি যারা উড়ে এসে জুড়ে বসে।তারপর মৌচাকে জমা মধুর সাধ গ্রহন করে।
আর সারাক্ষণ আপনার কানের কাছে সুমিষ্ট সুর তুলে(যদিও মাছির ভনভনানি কারোই ভাল লাগে না।)এরা আপনাকে নানাভাবে বুঝাতে সক্ষম হয় যে,আপনি তার/তাদের কাছে দেবতা কিংবা দেবতুল্য।  আপনিও খুব সহজেই তার তোষামোদিতে ভুলে তার প্রতিটি কথাকে অমৃত সদৃশ মনে করেন ।
"আহা! এরকম ভক্ত আর কেউ হতেই পারে না! আহা!!"
আপনি মনে মনে হয়ত এরকম করেই ভাবেন,ভাবতে থাকেন।
এবার সেই ভক্ত যাই বলুক না কেন তা আপনার মনে হবে, বোধহয় কোন ফেরেশতা আপনার উপর ওহী নাযিল করছে!! কিন্তু,আসলেই কি তাই????
#যদিও_পাম_তবুও_আরাম#যে_দেয়_তারও_আরাম_যে_নেয়_তারও_আরাম

বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫

  • ৭:৩৯:০০ AM
প্রিয়তমা,
মুখনিঃসৃত নিকোটিনের সাদা ধোয়ার কুন্ডলীতে বেদনার হলদে রং হয়ত আজ আমার খুব প্রিয়।তবে চিরদিন এটা আমার প্রিয় ছিলো তা কিন্তু না।এমনকি একটা সময় ছিলো যখন তোমার মত আমার কাছেও এটি ছিলো সবচেয়ে ঘৃণ্য এবং অসহ্য। কিন্তু সেই অপ্রিয় বস্তুটাকেই আজ সব কিছুর উপরে আগলে রেখেছি ।। কেন? হয়ত জানতে চাও। কিংবা তার কারন তুমি নিজেও জানো। তারপরেও তুমি বারবার আমাকে প্রতিজ্ঞা করিয়েছ যেন আমি এসব ছাই পাশ ছেড়ে দেই  । আমিও তাই ভেবেছিলাম। ছেড়েও দিয়েছিলাম বহুবার । কিন্তু কখনো একেবারে ছেড়ে দেয়া আর হয়ে উঠেনি।জানিনা আর কখনো হবে কিনা! তবে ধীরে ধীরে যে মৃত্যু আমাকে টেনে গ্রাস করছে তাকে ত্যাগ করি কোন সাহসে? এ যে চিরন্তন, এটাই তো শ্বাস্বত সত্য। আর বাকি সব মিথ্যে মায়া বৈ আর কিছু নয়।
যাই হোক, তবুও ছেড়ে দেব এটাকে।কিন্তু নিকোটিনের সাদা ধোয়ার কুন্ডলীতে বেদনার হলদেটে যে আস্তরণ পড়ে আছে তাকে ছেড়ে দেব কি করে,বলতে পারো?
অনেক বার তোমাকে ছেড়ে,ফেলে আসা স্মৃতির মায়া কাটিয়ে বাঁচতেও চেয়েছি,পারিনি। বরং যতবার ভুলে গিয়ে সুখি হবো ভেবেছি ততবারই একশত বিশ শতাব্দীর পরতে পরতে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো আমার হৃদয়ের আকাশে তারা হয়ে জ্বলেছে। তুমিই বল,যে তারা গুলো আমার নাগালের বাহিরে,দূর আকাশে জ্বেলে থাকে আপন ইচ্ছায় ;তাকে কি জোর করে টেনে হিচড়ে থলিতে ভরা যায়? নাকি ফটোশপের এডিটর দিয়ে মুছে ফেলা যায়? যায় না।আর কখনও যাবেও না।আর তাই হয়ত কখনো ভুলে থাকা হবে না তোমাকে। সত্যি কথা বলতে, আসলে আমিই ভুলে থাকতে চাই না।
তবুও মাঝে মাঝে সব কিছু ভুলে যাবো বলে ঠোটের কোনে নিকোটিনে ভর্তি শলাকা জ্বালাই,তার তাপ নেই,ফু দিয়ে সাদা ধোয়ার কুন্ডলী আকাশে ছেড়ে দেই সাদা মেঘ ভেবে। তারপর এক বুক আশা নিয়ে চেয়ে থাকি তারার পানে। মনে মনে বলি,"ও তারা,তুই নেমে আয়।এ বুকে এসে বাসা বাঁধ যেভাবে বেঁধেছিলি গত শত শতাব্দী ধরে।"
কিন্তু তারারা আসে না।না আসো তুমি।কেউ বলেনা,"তুমি কখনো মানুষ হবে না।"কিংবা রাগ করে কেউ মুখ ফিরিয়ে থাকে না।শুধু স্মৃতির তারাগুলো মিটিমিটি জ্বলে থাকে হৃদয়ের আকাশে। আর আমি?? মিস করে যাই।মিস করে যাই ফেলে আসা একশত বিশ শতাব্দীর শীতের কুয়াশা,রাঙানো লেপের কাভার,সকালের সোনালী রোদ,রাতের উষ্ণ আলিঙ্গন।।
#নীলকান্ত ®
  • ৭:৩৩:০০ AM

সাদা-মাটা গ্রাম্য জীবন ছেড়ে জীবন ও জীবিকার তাগিদে আজ হয়ত ইট পাথরের শহরে অচেনা-অজানা মানুষের চিড়িয়াখানায় ঢুকেছি।আর যান্ত্রিক এ জীবনের চিড়িয়াখানায় অনুভূতি গুলো যেমন ভোতা হয়ে যায়,তেমনি আবেগগুলো একে একে টলে পরে মৃত্যুর কোলে।সময়ের ৩৬০ ডিগ্রীর আবর্তনে সেকেন্ডের কাটা ধরে দৌড়াতে হয়, পিছিয়ে পড়লে পৃষ্ট হতে হয় সময়ের যাঁতাকলে।
কিন্তু কি আশ্চর্য! যে আমি আমার অনুভূতিকে জীবনের সবচেয়ে বড় বলে মনে করি,অনুভূতি ছাড়া যার কাছে জীবন অসম্পূর্ণ,সেই আমাকেও আজ ভোঁতা অনুভূতি নিয়ে চলতে হবে??কিংবা অনুভূতিহীন ভাবে??
সত্যিই, হয়ত ভোতা অনুভূতিগুলোও এক সময় শূন্যে এসে দাঁড়াবে আর আমিও হয়ে যাব অন্য সব যন্ত্র মানবের মত!!!
ইট -পাথরের শহরে যেখানে ভোরের সূর্য জানালার পর্দার ফাঁক গলে চোখে এসে পড়ে না, কাক ডাকা ভোরে দূর্বা ঘাসে শিশির জমে না, বাস-ট্রেন -রিক্সার টুনটুন-প্যা পু তে অনুভূতির আর্তনাদ কারো কানে যায় না, যেখানে কর্মক্লান্ত ঘামে ভেজা মুখের উপর বসুন্ধরা টিস্যুতে ছাড়া মৃত্তিকার ছোয়া পাওয়া যায় না, সেখানে আমার মত বিল পাড়া গাঁয়ের- মাটির মানুষের স্থান আছে কি??
হয়ত নেই।হয়ত হবে।কিন্তু একটা প্রার্থনা করি,"সেই বিল পাড়া গাঁয়ের মানুষের মাঝে যেন বিধাতা কখনো অনুভূতিহীন যান্ত্রিক শহুরে মানুষ ঢুকিয়ে না দেন।আমি যে যান্ত্রিক,অনুভূতিহীন,বদ্ধ,ইট-পাথরের বিলাসী জীবিকার চেয়ে বিল গাঁয়ের এই কাদা মাখা জীবনকেই বড্ড বেশি ভালবাসি। "

শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৫

  • ১:৫০:০০ AM
নারীর ক্ষমতায়ন নারীকে যতটা স্বাধীনতা দিয়েছে,বিশ্বকে এগিয়ে নিচ্ছে ঠিক ততটাই জগত সংসারে অশান্তি নিয়ে এসেছে,পারিবারিক শান্তি বিনিষ্ট হচ্ছে।
আজ ২৪ অক্টোবর ২০১৫। আমি  বলে রাখলাম, সেদিন খুব বেশি দূরে নেই যেদিন পরিবারে সুখ-শান্তি বলে কিছু থাকবে না।পৃথিবী ফিরে যাবে বর্বর,অশান্তি ও বিশৃংখলার যুগে।
আমাকে নারী বিদ্বেষী ভাববেন না।এটাই সত্য হবে।কারণ,
"এক বন্দুকে দু'জন শিকারি কখনো একই হরিণকে একসাথে শিকার করতে পারে না।হয় বন্দুক হাত বদল করতে হয় নতুবা দু'টি বন্দুক দুজনের হাতে থাকতে হয়।কিন্তু দু'টি বন্দুক দুজনের হাতে হলেও শিকার যখন একটিই তখন শিকারের কৃতিত্বটা কার, তা নির্ণয় করতে গেলেই বাঁধে বিশৃংখলা।আর এ বিশৃংখলাই জন্ম দেয় অশান্তির।"
রবি ঠাকুরের কথা খুব মনে পড়ছে।বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে তিনি যে কথা উপলব্ধি করেছিলেন,যে চিরন্তন বাণী লিখে গিয়েছেন, আজ একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের মধ্যেই আমরা তার আঁচ পাচ্ছি খুব ভালভাবেই । আগামী শতাব্দী তে একথার প্রমাণ পাবে গোটা বিশ্ব।কিংবা  তার অনেক আগেই।।
#নারীর ক্ষমতায়ন ভয়ংকর।
#নীলকান্ত

বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৫

  • ১১:০১:০০ PM
তুমি মিষ্টি হেসে যদি বল,"চিন্তা কি,আমি তো আছি । "
তখন চির কাঙাল এই আমি পৃথিবীর রাজা।
ইচ্ছে করলেই নেপোলিয়ন বোনাপার্ট 
কিংবা জুলিয়াস সিজারের মত দ্বিগ্বিজয়ী বীর হতে পারি,
হেমলকের বিষের পেয়ালা এক চুমুকেই  করতে পারি শেষ। 
মহাকাশ আর জগত কে ব্যাখ্যা করতে পারি
 তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে এক নিমিষেই।
প্রাণের স্পন্দনের কারন খুঁজে বলতে পারি জীবনটা কি!
  • ১০:৫৯:০০ PM
জীবনটা ঠিক এতটা সহজ না,যতটা আগে ভাবতাম।এটা অনেকটা মরুভূমির মত। মরুভূমি তে যেমন মাথার উপর প্রচন্ড রৌদ্রতাপে পায়ের নীচের বালুকারাশিকে পথিকের চোখে দূর থেকে অনন্ত জলরাশি  মত দেখায়,তেমনি জীবনের কিছু কিছু আশা মরিচিকার মত হৃদয়ে সুখের পুলক ছড়িয়ে যায়। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ অন্তিম মুহুর্তে উপনীত হলে বুঝা যায়,তা কেবলই একটা দূরাশা ছিল।
জীবনের সাদাকালো ক্যানভাসে স্বপ্নের রঙ ছড়ানো যতটা সহজ, বাস্তবে তা রাঙিয়ে তোলা ততটাই কঠিন।এখানেই জীবন আর সুমদ্রের মধ্যে এক দারুন ঐক্যতান । গভীর সমুদ্রে দূরের কোন স্থল চিহ্ন দেখে নাবিকের মন চঞ্চল হয়ে উঠে,"এই তো, তটরেখায় নব জীবনের আহ্বান।"
কিন্তু সে দূর যে কতটা দূর তা আন্দাজ করা নাবিকের পক্ষে সম্ভব হয়না।নাবিকের এটাও জানা হয়না,সেই তটে পৌঁছতে এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে,এখনো  সহস্র যুদ্ধ আছে বাকি।হয়ত সে পথ ধীরে ধীরে নাবিকের কাছে ছোট হয়ে আসে অথবা সময়ের উল্টো স্রোতে গভীর থেকে গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যায়।দৃষ্টির সীমানায় তখন শুধু অনন্ত লোনাজল আর হতাশা ছাড়া আর কিচ্ছু থাকে না!!বুঝতে পারে স্বপ্নগুলো আসলেই মরিচীকা ছিলো।
তবুও আরেকবার পাল তুলে দেয় সে।আরেকবার এগিয়ে চলে অজানা কোন দ্বীপে একটু খানি সুখের প্রত্যাশায়।তারপর ......
  • ১০:৫৭:০০ PM
দেশে জিনিসপত্রের দাম উর্ধ্বগতি।জনাব অর্থমন্ত্রী সাহেব অনায়াসে বলতে পারেন, "মানুষের আয় বেড়েছে।গ্যাস বা জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এমন কিছু না। "
কিন্তু আমাদের মত বেকারদের সংখ্যাও দিন দিন বেড়েছে।বেকারদের জন্য চাকুরীর বাজার মন্দা। (অর্থ্যাৎ চাকুরী নাই অথবা থাকলেও আগে অভিজ্ঞতা চাই।তারপর সেলসম্যানের পদবী)।
মাত্র ১৫ লক্ষ সরকারি কর্মচারীর বেতন বাড়লেও ১৫ কোটি  ৮৫ লাখ সাধারন মানুষের বেতন বাড়েনি। এদের আবার ৮০%-৮৩%(আনুমানিক)  বেকার,নিম্ন বা মধ্য আয়ের বেসরকারি চাকুরে কিংবা শ্রমজীবী কৃষক এবং দিন মজুর।এদের আয় কতটুকু বেড়েছে? নাকি বাজারদরের তুলনায় আয় কমেছে??হয়ত মাননীয় মন্ত্রী সাহেবের পাওয়ার গ্লাসে এগুলো ধরা পরে না।পরেনি।তাই ৩০০ কোটি টাকার হেরফের তার কাছে কিছু মনে হয়না এমনকি ৩০০০ কোটি টাকাও!! তিনি মন্ত্রী হয়েছেন শুধু বড় বড় ব্যবসায়ী, এলিটিদের ভোটে।আর দেশে কোন দরিদ্র নেই, সবাই এলিট শ্রেনীর এটাই তার ধারনা।
তার ভাষায় তাকে "রাবিশ" বলা ছাড়া আর কোন শব্দ পেলাম না। (সরি,মি. অর্থ মন্ত্রী)
যাই হোক,
আজ বাবাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম ধানের দাম কেমন? বাবা একটু হতাশ হয়ে বললেন ৫৫০-৫৬০ নতুন আমন ধান, আর পুরাতন টা ৬০০-৬৫০ টাকা/মণ।
কিন্তু এই ৫৫০ টাকার ধানের পেছনে কায়িক শ্রম,মজুরের অর্থ আর অন্যান্য খরচ বাদ দিলে ৫০ টাকাও কৃষকের হাতে আসে না।  তাদের বেতন/আয় বৃদ্ধি হয়নি।কিন্তু তবুও তাদের ২০ টাকার পেয়াজ ২০০ টাকা/কেজি দরে কিনতে হয়,তেল,লবন অতিরিক্ত দামে কিনতে হয়,ফসলের পানি সেচের জন্য ডিজেল ৭৪ -৭৫টাকা/লিটার কিনতে হয়!! মজুরকে ৩০০-৪০০ টাকা/দিন দিতে হয়।।
তাদের আয় বাড়ে না।মধ্য বিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক এখন দরিদ্র কৃষকের পর্যায়ে পৌছেছে।তারা মান সন্মানের ভয়ে রিক্সা ভ্যানও চালাতে পারেনা কিংবা মজুর খাটতেও পারে না!
বলি, মাননীয় মন্ত্রী মহাদয় তাদের জন্য কি করলেন? কিছুই না।বরং  পারলে সারের দাম আরো কিছু বাড়িয়ে দেবেন,প্রয়োজনে মন্ত্রী আর এমপি দের পকেট ভরাতে কৃষকের গোয়ালের গরুর উপর "পশু ভ্যাট" ধার্য করবেন কিন্তু তাদের উন্নয়নের জন্য কিছুই করবেন না!
আর আমার মত যারা এই কৃষক পরিবারের সন্তান তাদের জন্য এই অউন্নয়নমূলক অর্থনৈতিক রাহুর কালো ছায়া পরে পড়ালেখা থেকে শুরু করে চাকরি বাকরি সব ক্ষেত্রে।।
অর্থ্যাৎ পরিবেশ টা এমন হয়ে যাচ্ছে যে,লেখাপড়া এবং চাকুরী শুধুমাত্র পুঁজিপতি ব্যবসায়ী ও বড় বড় বড়লোকের অধিকার।কৃষক এবং গরীবের জন্য চাকুরী হারাম,নাযায়েজ।
কারণ গরীব কৃষকের ছেলে মেয়েরা যখন অতি কষ্ট করে, দিন মজুরী করে,টিউশানি করে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেন তখন বিলাসী পুঁজিপতির সন্তানেরা আরাম আয়েসে পড়া লেখা করে, এ নেতা, ও নেতা, ওমুক এর ছেলে,তমুকের নাতির রেফারেন্সে দিব্যি চাকুরী পেয়ে যায়।কিংবা চাকুরীর ধার না ধেরে অনায়াসে নিজস্ব ব্যবসা দাঁড় করাতে পারে।
আর বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত হয় সাধারন ছেলে মেয়ে, যাদের বাবা নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক বা চাকুরে।(ভাগ্যক্রমে দু একজন অদম্য মেধাবীরা ব্যাতীত।)
এসব পরিবারের ছেলেরা ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হবে, সে চিন্তাও করতে পারে না। কারন ব্যবসা করতে পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয়।বিনা পুঁজি তে ফটকা ও অবৈধ ব্যবসা করা যায় কিন্তু সৎ ও সুন্দরভাবে জীবন যাপন করা যায় না। এদিকে হত দরিদ্র পিতা তার শিক্ষিত বেকার সন্তানের জন্য জমি বেঁচে ব্যবসায় বিনিয়োগ করানোর ঝুঁকি কখনোই নিতে চান না।তাদের একটাই আশা,সন্তান চাকুরী করবে।লোকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলবে,"এটা অমুকের ব্যাটা তমুক।ওমুক চাকরী করে,এত বেতন পায় "ইত্যাদি।
এদিকে সরকারের এক পেশে অর্থনৈতিক নীতিতে পুঁজিপতিরা স্বাভাবিকভাবেই অর্থমন্ত্রী সাহেবের প্রসংশায় পঞ্চমুখ। কারন, তিনি যে তাদেরই প্রতিনিধিত্ব করছেন!!
আর মন্ত্রীর সিদ্ধানন্তে চাটুকার, তোষামোদ কারীরা যখন বলে,
"বাহ বাহ! মন্ত্রী সাহেব তুলনা হয়না।"
তখন মন্ত্রী সাহেব নিজের মেধা ও সিদ্ধান্তে তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন এই ভেবে যে,"আহ! লোক জন কত সুখে আছে! "
কিন্তু আসলেই কি তাই????
(বি.দ্র. এটাকে রাজনৈতিক ভাবে নিবেন না।যে কোন দল কিংবা ব্যক্তির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভাবে এমনি বলতাম আমি।)
[ত্রুটি ক্ষমা করবেন।]
  • ১০:৫৪:০০ PM
জীবনটা কে দূর থেকে দেখে কত সহজ,সুন্দর মনে হত! আহা!
কিন্তু আজ যখন জীবনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি তখন বুঝতে পারছি, এ জীবন বাহিরে থেকে যত সহজ, ভেতরে ততটাই কঠিন।
এত দিন জীবনকে আমি চোখ রাঙিয়েছি,আজ জীবন আমাকে চোখ রাঙায়।এত দিন জীবনকে আমি বলেছি,হে জীবন, তুমি আমার পিছে পিছে আসো।
আজ জীবন আমাকে বলে তার পিছু পিছু হাটতে,যখন আমি জীবনের পাশাপাশি হেটে যেতে চাই।।
জীবনের ঘাত প্রতিঘাত থেকে বহু দূরে ছিলাম আমি।কিংবা ছোট খাটো যেসব আঘাত এসেছিলো, তাদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাড়িয়েছি।কিন্তু জীবনের এ পর্যায়ে এসে জীবন আমাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলে,"সেসব ভুল ছিলো। "
আর সেসব ভুল গুলো আজ চোখের সামনে পরিস্কার আয়নার মত ধরা দিয়েছে। কতই না ভুল করেছি জীবনে! জীবনের সাথে বাজি ধরেছি কতবার। আজ বাজির সে ফলাফল হাতে এসেছে।যা পেয়েছি তা "শূন্য" ছাড়া আর কিছু না।।
  • ১০:৫১:০০ PM

সুনসান নীরবতা চারিদিকে।গাড়ির মধ্যে যে ক'জন যাত্রী আছে তারাও সবাই অঘোর ঘুমে অচেতন। শুধু নীলের চোখে ঘুম নেই।সাধারণত গাড়িতে উঠলে ঘুম-টুম আসে না ওর।কিন্তু শরতের নাতিশীতোষ্ণ এমন এক রাতে বাহিরের খোলা হাওয়া যখন মুখে এসে লাগে তখন ঘুম আপনা আপনি চলে আসে।নীলও খানিকটা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়েছিলো বৈ কি! কিন্তু হঠাৎ করে চেতনা ফিরে সামনে তাকাতেই রাতের অপূর্ব সৌন্দর্য ওর ঘুম কেরে নিলো।সত্যি অপূর্ব সুন্দর লাগছে। যতদূর চোখ যায় টানা রাস্তা। একদম ফাঁকা।
শা শা করে গাড়ি এগিয়ে চলছে কিন্তু
ফাঁকা রাস্তার দু পাশে দাড়িয়ে থাকা গাছ গুলোর উপর গাড়ির হেড লাইট পড়ে মনে হচ্ছে কোন গুহার মধ্যে স্থির দাড়িয়ে আছে গাড়িটা আর দু পাশের গাছ গুলো দ্রুত সরে যাচ্ছে পেছন দিকে। বহুদূর পর্যন্ত কোন যানবাহনের চিহ্ন চোখে পড়ছে না।যেন অন্য কোন পৃথিবীতে, অন্য কোন রাস্তা এটা।কিন্তু ছোট বেলা থেকে কতবার যে এ রাস্তায় যাতায়াত করেছে তার হিসেব নেই। আসে পাশের সব কিছু নীলের নখ দর্পণে। তারপরেও সব কিছু অচেনা, ভারী অচেনা লাগছে আজ।
নীল ওর ব্যাগ থেকে হেডফোন টা বের করে কানে লাগালো।এই মুহূর্তে ও কোন গান শুনবে না, ওর নাকি গভীর রাতে গান শুনার চেয়ে ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক শুনতে ভালো লাগে। তাও সলো মিউজিক।বিশেষ করে গিটার কিংবা সেতারের । ফোন ঘেটে ঘুটে বেশ কয়েকটা মিউজিক সিলেক্ট করে রিপিট অল করে দিলো। হেডফোনের ভলিউম টা মাঝামাঝি রেখে হেলান দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে এই প্রকৃতি উপভোগ করার মজাটাই আলাদা।এর আগেও যতবার কোথাও গেছে সে ট্রেনেই হোক আর বাসেই হোক,এই মজাটা নিতে ভুলে নি।
ওর মতে,
"যদি দু'চোখ ভরে পৃথিবীকে দেখতেই না পেলাম তবে এ দু'চোখের মূল্য কি!  প্রাণ ভরে কোন কিছু দেখার চেয়ে আনন্দের কিছু নাই।সে রমনীই হোক আর প্রকৃতিই হোক।তাই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এই আনন্দ আমি মিস করতে চাই না।"
গাড়ি দ্রুত বেগে এগিয়ে চলছে সামনের দিকে,আর দু'পাশের গাছ গুলো সরে যাচ্ছে পেছনে। অনেক ক্ষন পরপর দু'একটা নাইট কোচ কিংবা ট্রাক হেড লাইট উচু করে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে শা শা করে। ওর কানের মধ্যে এখন অনুপমের "প্রিয়তমা" গানটার "গীটার" বাজছে।অসাধারণ সুন্দর গানের লিরিকটা।
"চলে এসো আজ এ রাতে,
চলে এসো আমার কাছে...  প্রিয়তমা। "
গানটা প্রথম ওকে কান্তা শুনিয়েছিলো।বলেছিলো, "তুমি এ গানটা শুনলে পাগল হয়ে যাবা! "
সত্যি গানটা ওকে পাগল করে দিয়েছিলো।  পাগল করে দিয়েছে কান্তার প্রেমে।
গান শুনতে শুনতে হঠাৎই স্মৃতির দরজায় বিগত দিনগুলি এসে একে একে জমা হতে শুরু করলো।যেন স্মৃতিরা ওকে ডেকে ডেকে বলছে,"এই নীল,দেখো আজ আমি নীল শাড়ি পড়েছি! "
"এই,আমার একটা ছবি তুলো না, প্লিজ? "
"ওভাবে না,এভাবে । দুজন এক সাথে উঠবো। "
"তোমার গালটাকে খুব মিস করছি।তোমার গালে একটা কামড় দেই? "
নীল স্মৃতির রাজ্যে যেন এক নবাগত সওয়ারী। চোখের পাতায় দিনগুলি ভাসছে ফাস্ট ফরওয়ার্ড মুডে। আর ও মিটিমিটি হাসছে কান্তার পাগলিপনা দেখে! আর এই পাগলির জন্য একটু আধটু কেন, পুরো পাগল হওয়া যায়।
স্মৃতির দরজায় বিগত দিনগুলি একটা একটা করে ভীর করছে।আর কান্তার অশরীরী উপস্থিতি ওর সমস্ত সত্তা জুড়ে।হঠাৎ কান্তা যেন ডেকে উঠলো-
"এই যে দেখো দেখো, সেই পুরোনো রেস্তোরাটা।
মনে আছে,প্রথম যেদিন তোমার সাথে বেড়িয়েছিলাম সেদিন এখানেই খেয়েছিলাম?"
সাথে সাথে গাড়ি ব্রেক করলো। নীলের স্মৃতির রাজ্য অদৃশ্য হয়ে ধরা দিলো বাস্তবতায়। ইতোমধ্যে গাড়ির ভেতরের দু একটা লাইট জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে ।গাড়ির স্পিড ক্রমশ কমে আসছে। নীল একটা হেলে সামনে তাকিয়ে বুঝতে পারলো খাবারের জন্য হোটেল ব্রেক।
কিন্তু কি আশ্চর্য!
সেই হোটেল! হোটেল নূরজাহান,কুমিল্লা। কান্তা শখ করে এটাকে বলত "পুরোনো রেস্তোরা "।আর এই তো এই মাত্র কান্তা ওকে বলেছিলো "দেখো দেখো,সেই পুরোনো রেস্তরাঁ। "
এখনো সে কথা নীলের কানে বাজছে।একটু হেসে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে মনে মনে বলল,"কান্তা,আই মিস ইউ।আই মিস ইউ সো মাচ।"
হোটেল ব্রেক শেষ।গাড়ি ধীরে ধীরে গড়িয়ে হাই ওয়ে তে উঠে টানতে শুরু করলো।  এখন রাত প্রায় দু'টো বাজে।গাড়ি চট্টগ্রাম পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকাল প্রায় সাতটা আটটা বেজে যাবে।কান্তা প্রেগন্যান্ট, আর তিন চারদিনের মধ্যে ওদের ঘর আলো করে নতুন অতিথি আসবে। কিন্তু  কি জানি,এই ক্লান্ত-শ্রান্ত,শতত বিধ্বস্ত শরীর দেখে কান্তা কি বলবে! নিশ্চয়ই অভিমানের সুরে বলবে,"খুব কষ্ট হয়েছে না! আই এম সরি, আমার জন্য তোমাকে এতটা কষ্ট করতে হলো।"
কিন্তু কান্তা জানে,নীলের কাছে পৃথিবীর সব কিছু একদিকে আর কান্তা অন্যদিকে। ও সব কিছুকে ছেড়ে তুড়ি মেরে চলে আসতে পারে,কিন্তু কান্তাকে না।ওর জন্য পৃথিবীকে অবলীলায় ছেড়ে দিতে পারে নীল।এতটাই ভালোবাসে কান্তাকে।
কান্তার যেবার টাইফয়েড হয়েছিলো, সেবার প্রায় এক মাস কান্তাকে ছেড়ে কোথাও যায়নি ও।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি। বসের কাছে ছুটি চেয়ে যখন পেলো না তখন অর্ধ লক্ষের উপরের সেলারিকে পায়ে দলে কান্তার পাশে পাশে ছিলো। কান্তা বারবার ওকে বলেছিলো, "চাকরী টা ছেড়ে দিও না,কর।আমি ঠিক হয়ে যাব।"
কিন্তু নীলের একটাই কথা, চাকুরী জীবনে বহু পাবো।কিন্তু তোমাকে পাবো না।আর আমার সামান্য চাকুরীর জন্য তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনা।অবশ্য মাস খানেক পর যখন কান্তা সুস্থ হয়ে উঠলো তখন নীল আবার চাকুরীর জন্য চেষ্টা করতে শুরু করলো। মাস না যেতেই আরেকটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে নিয়োগ পেলো।  শুনেছি,ভাইভা বোর্ডে নাকি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলো,আগের চাকুরী টা কেন ছেড়েছে।ও সরাসরি বলেছিলো, "আমার ওয়াইফ অসুস্থ ছিলো তাই ছুটি চেয়েছিলাম । দেয়নি তাই ছেড়ে দিয়েছি । " ভাইভা বোর্ড নীলকে আবার যখন জিজ্ঞাসা করলো, "আপনি কি তবে এ চাকুরীও ছেড়ে দিবেন, যদি আপনাকে ছুটি না দেয়া হয়? "
নীল বলেছিলো, "কান্তার জন্য ওর কাছে অন্য সব কিছু তুচ্ছ ।অন্য কোন কারনে ছুটি না পেলেও তার ওয়াইফ এর অসুস্থতার ব্যাপারে কোন কম্প্রোমাইজ করতে পারবে না। "
তারপর
কোম্পানি ওকে শুধু চাকুরীই দেয়নি বরং কোম্পানির এম ডি সাহেব ও তার ওয়াইফ নিজে এসেছিলেন কান্তার সাথে দেখা করতে।নীল কোম্পানির এমপ্লয়িদের মধ্যে সবচেয়ে স্মার্ট,হ্যান্ডসাম এবং জিনিয়াস হিসেবে ইতোমধ্যে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মাসে সোয়া লাখের উপর সেলারি।কোম্পানির নিজস্ব বাসা পেয়েছে নীল। কান্তার বাবু হবে, নীল বারবার বলেছিলো, ঢাকা তেই থাকতে কিংবা ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করতে।কিন্তু কান্তা রাজি হয়নি।ওর একটাই কথা, প্রথম বাচ্চাটা বাবা-মার বাড়িতে হবে। ও বলে,"আমার বাচ্চা হবে আমার বাবা-মায়ের আশীর্বাদের হাত মাথায় নিয়ে।আমি হাসপাতালে যেতে চাই না।"
নীল অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে ওকে রাজি করাতে পারেনি।এমনকি এটাও বলেছিলো, "দরকার হলে আব্বা-আম্মাকে ঢাকায় নিয়ে আসি।এত বড় বাসা।আরো দশজন মানুষ থাকলেও কোন সমস্যা নেই।"  কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে কান্তাকে চট্টগ্রাম পাঠানো হলো। এছাড়া নীলের বাবা-মা নেই। দু'জনেই ইহলোক ত্যাগ করেছে বহু আগে তাই কান্তার কথা ও ফেলতেও পারলো না।নিজেও হয়ত এরকম একটা কিছু অনুভব করেছিলো সে। কিন্তু নীল কান্তাকে চট্টগ্রাম পাঠিয়েই যে ক্ষান্ত হয়েছে তা নয়। সেখানে সার্বক্ষণিক একজন নার্স,দু'জন কাজের লোক রেখেছে। প্রতি দুই দিন পর পর একজন এম বি বি এস ডাক্তার এসে কান্তাকে চেক আপ করে যায়। আর বাচ্চার জন্য প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে যেখানে যে খেলনা ভালো লাগে কিনে কিনে নিয়ে যায়,ঢাকার বাসায় জমা করে।
এসব দেখে কান্তা হেসে কুটি কুটি হয়। প্রকাশ্যে বলে,"ওকে কি পেটের মধ্যেই খেলতে দিবা নাকি? "
আর কানে কানে বলে,"শুধু বাবুর জন্য এত কিছু! বাবুর আম্মুর জন্য কই!বাবুর আম্মুর প্রতি ভালবাসা কি কমে গেল না কি।" তারপর হেসে কুটিকুটি হয়।
আজকেও অনেক অনেক খেলনা নিয়ে যাচ্ছে ও।অফিসের কাজে রাজশাহী এসে যেখানে যা দেখেছে কিনেছে।কান্তার জন্য রাজশাহী সিল্ক,বাবুর জন্য কাপড়,খেলনা ইত্যাদি ।

গাড়ি এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতে। বেশ কিছুক্ষণ আগে ফেনী পার হয়ে চট্টগ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।পাহাড়ের উপর দিয়ে সকালের সূর্য আভা ধীরে ধীরে জানান দিচ্ছে নতুন একটা দিনের শুরুর।আশে পাশের রাস্তাঘাটে ক্রমেই জন যাতায়াত বাড়ছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রিয় মানুষের কাছে পৌছানোর স্নায়ুবিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে নীলের সমস্ত দেহে।সারা রাতের ক্লান্তকর জার্নিকে যেন কিছুই মনে হচ্ছে না। চোখের সামনে অনাগত ভবিষ্যৎ এর সুখের কল্পনা। সমস্ত ঘর জুড়ে ছোট দু'খানা পায়ের চঞ্চল ছুটাছুটি, বাবার আদর,বাবুর মুখে প্রথম বাবা ডাক ইত্যাদি কেমন হবে তাই যেন ভেসে চলেছে নীলের কল্পনার আয়নায়।
গাড়ি দ্রুত এগিয়ে চলেছে । আর মিনিট ত্রিশের মধ্যে চট্টগ্রাম পৌছে যাবে।পাশ দিয়ে দ্রুত ছুটে যাচ্ছে সকালের বাস গুলো ঢাকা বা অন্যান্য জায়গার উদ্দেশ্যে।
তারপর হঠাৎই একটা ধাক্কা । একটা আর্তনাদ। তারপর সব শেষ।
সমস্ত ঘর জুড়ে ছোট দু'খানা পায়ের চঞ্চল ছুটাছুটি, বাবার আদর,বাবুর মুখে প্রথম বাবা ডাক সব কিছু সমাধিত হলো একটা আর্তনাদে ।ভবিষ্যৎ থমকে গেলো পিচ ঢালা পথের পাশে ছিটকে পড়া নিথর দেহে।।
তারপর.... ।
এর আর কোন পর নেই।
#নীলকান্ত®
  • ১০:৫১:০০ PM
এই শোন,
জেগে থেকো  । গভীর রাতে আসবো আমি কবিতা হয়ে।
হৃৎপিন্ডে হাতটা ধুয়ে বন্য কোন শব্দ হয়ে।
জেগে থেকো,
শব্দ পোড়া শবাসনে, শূন্য বুকের তৃষ্ণা নিয়ে।
গভীর রাতে আসবো দেখো,
ধ্রুপদী এক কবিতা হয়ে।।

বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৫

  • ১১:২৬:০০ AM
দেশের নাগরিককে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং দেশকে প্রকৃত অর্থে উন্নত করতে প্রত্যেক নাগরিককে প্রয়োজনীয় আইন শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা সবার আগে দরকার।
-----------------------+-----
প্রশ্ন হলোঃ

আমরা আমাদের অধিকার সম্পর্কে কি সম্পূর্নভাবে সচেতন?

আমরা কি আমাদের রাজনৈতিক ও আইনি অধিকার সম্পর্কে ভালভাবে জানি?
উত্তরঃ
জানি না/আংশিক জানি/তেমন কিছু জানিনা
তাহলে,

আমরা পদে পদে বিভিন্ন পরিস্থিতি তে হয়রানির শিকার কেন হই?

সরকারি কিংবা বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর দূর্নীতি করার সুযোগ পাচ্ছে কিভাবে?

রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে কেন?
উত্তরঃ
কি জানি? /বলতে পারবো না কিংবা এটা,ওটা,সেটা
কিন্তু আসলে একটু গভীর ভাবে ভেবে দেখলে বুঝতে পারবেন, এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর একটা কথাতে লুকিয়ে আছে।আর তা হলোঃ "জনসাধারণ আইন সম্পর্কে সচেতন না এবং তারা আইন জানেন না। "
অর্থ্যাৎ জনগণ যদি আইন সম্পর্কে যথাযথ ওয়াকিবহাল হোন তবে এসকল সমস্যাগুলো হত না কিংবা হলেও তা মোকাবেলা করা যেত।
প্রশ্ন জাগতে পারে, কিভাবে?
উদাহরণ সরূপঃ
আপনি একজন নিরপরাধ ব্যক্তি।রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছেন। এমন সময় কোন কারন ছাড়াই একজন পুলিশ কর্মকর্তা আপনাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায়(বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার) আটক করতে পারে।
পুলিশ কর্মকর্তার আটক করার অস্ত্র হলো তার উপর ন্যস্ত করা আইনি ক্ষমতা।যেখানে আপনাকে সন্দেহের বসে আটক করতেই পারে।(যদিও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নয়টি কারন উল্লেখ করা আছে।যেসব পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে একজন পুলিশ অফিসার ক্ষমতাপ্রাপ্ত হোন।)
কিন্তু সে সময় আপনার কি করণীয় আছে কিংবা আপনার কতটুকু আইনি অধিকার রয়েছে তা সম্পর্কে আপনি সচেতন না হলে বোকার মত চেয়ে দেখা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।
তিনি আপনাকে গ্রেফতার করার মত কোন কারন হয়ত পেলেন না কিন্তু আপনি হয়রানির শিকার হবেন।যদি এই হয়রানির শিকার যদি হতে না চাই তবে অন্তত নিজের আইনি অধিকার জানা আবশ্যক।
আচ্ছা,সে বিষয় না হয় গেলো।এবার ধরুন, আপনাকে মামুলি কোন  অপরাধে আটক করে মেজেস্ট্রেটের কাছে নেয়া হলো।সেক্ষেত্রে একজন ৩য় শ্রেনীর একজন মেজেস্ট্রেট আপনাকে ৫ বছরের জেল অথবা দুই লক্ষ টাকা জরিমানা করলেন।আপনিও বিনা দ্বিধায় পাঁচ বছরের জেলের পরিবর্তে দুই লাখ টাকা দেয়া শ্রেয় মনে করে টাকাই দিলেন।কিন্তু আপনি এটা জানলেন না যে, একজন তৃতীয় শ্রেনীর মেজেস্ট্রেটের  দুই বছরের অধিক কারাদণ্ড দেয়ার এখতিয়ার নেই কিংবা দুই হাজার টাকার বেশি জরিমানা করবার।
এক্ষেত্রে যা হলো তা, মেজেস্ট্রেটের ভয়ে আপনি তাকে দূর্নীতি করতে সহায়তা করলেন। (এটা শুধুমাত্র উদাহরণ। আমি বলছি না যে,মেজেস্ট্রেটগণ কোন দূর্নীতি করেন।)কিন্তু আপনি যদি আইন এবং অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতেন তবে আপনাকে অবশ্যই এরকম পরিস্থিতিতে পড়তে হত না।
আর আইনের ধারা এবং দন্ড সম্পর্কে সচেতন কোন নাগরিক সহজে কোন অপরাধ করতে সাহসও পাবেন না। কারন তিনি জানেন এই অপরাধের জন্য কি শাস্তি হতে পারে!
উদাহরণ শেষ। এবার মূল প্রসঙ্গে দুটি কথা বলি।
আমার লিখার প্রধান বিষয় ছিলো,
" দেশের নাগরিককে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং দেশকে প্রকৃত অর্থে উন্নত করতে প্রত্যেক নাগরিককে প্রয়োজনীয় আইন শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা সবার আগে দরকার।"
উপরের উদাহরণ থেকে আশা করি কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন সেটা কিভাবে সম্ভব!
এবার কথা হলো,হুম।দেশের নাগরিকদের আইন সম্পর্কে সচেতন করতে কি করা উচিত? কিংবা কিভাবে এটা করা যাবে?
উত্তরটা হচ্ছে,আইন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে।
কিন্তু যেহেতু আইন পরিবর্তনশীল এবং এটি সময় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে তাই এই শিক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটা নির্দিষ্ট শ্রেনী(৪র্থ বা ৫ম শ্রেনী) হতে আইন বিষয়টি পাঠ্য পুস্তকের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত এবং কমপক্ষে এইচ এস সি পর্যন্ত আইন বিষয় বাধ্যতামূলক পড়তে হবে। এই সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় আইন সমূহ সকলেই জানবে। ফলে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগার সাথে সাথে নিজের আইনি অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে।কেউ কোন ভাবে দূর্নীতি করতে গেলে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারবে এবং যুগ যুগ ধরে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন দপ্তর দ্বারা যেভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে তা হতে মুক্তি লাভ করবে।
কিন্তু
এইচ এস সি'র পরে যেহেতু আইন বিষয়ে আলাদা ভাবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা যায় তাই এ সময় বাধ্যতামূলক আইন পাঠ্য বিষয় জরুরী নয়।
সর্বশেষ কথাঃ
" জনগণ আইন সম্পর্কে সচেতন হলে দেশের দূর্নীতি প্রতিরোধ এবং নিজেদের অধিকার আদায় করা সম্ভব। আর দূর্নীতি প্রতিরোধ করা গেলে দেশও উন্নতি লাভ করবে এবং  দেশের সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সাধিত হবে।"
-নীলকান্ত ®ব্লগ

রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৫

  • ১১:০০:০০ PM
রক্তজবা -২
যেদিন রক্তজবা আর মিনারের গল্প লিখেছিলাম, সেদিন
তুমি বলেছিলে, "কখনো কি তুমি মানুষ হবা না? "
তারপর -
অনেকটা দিন কেটে গেছে!
রক্তজবার পাপড়িগুলো গোলাপি থেকে ধূসর হয়েছে,
মিনারের গায়ে যে শুভ্র ফুল ফুটেছিলো,
তাও ঝড়ে পড়েছে একটা একটা করে।
নুইয়ে পড়েছে,
শিরা-উপশিরা টানটান করে থাকা সাধের মিনার!
চামড়ার ভাঁজে ভাঁজে শুকিয়ে  কুঁকড়ে গেছে-
চুপসে থাকা সিক্ত গহ্বর!
রক্তজবার গোড়ায় ঘন ঘাস জেগেছে,
মিনারের দেয়াল বেয়ে একে বেঁকে
ছেয়ে গেছে জঞ্জালে!
দেখ,
আজ আমি কিন্তু মানুষ হয়েছি!
আর দশটা মানুষের মত।
তবুও যেন মানুষের মত না,
ভীষণ খরায় আগের মত তোমায় খুঁজি না,
রাত-বিরোতে রক্তজবার
গল্পও লিখি না।
নুইয়ে পড়া মিনারের গায়ে, শুভ্র ফুল ফোটে বটে,
কিন্তু-
তাতে গন্ধ থাকে কই!
বাগান ছাড়া মালী আমি-
বাগান মালিক নই!
#নীলকান্ত ®
  • ৭:২১:০০ PM
দূর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক ব্যক্তি দ্বারা দূর্নীতিমুক্ত প্রশাসন আশা করা যায় না।
প্রশাসনকে দূর্নীতিমুক্ত করতে সরকার এ পদক্ষেপ, সে পদক্ষেপ, অমুকের বেতন বাড়ানো, তমুকের জন্য ওমুক আইন ইত্যাদি পেশ করে,পাশ করে কিংবা জারি করে ততক্ষণ পর্যন্ত সফল হবেন না,যতক্ষন পর্যন্ত তার রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তিদের দূর্নীতিমুক্ত করতে পারছেন।
একটু গভীর ভাবে খেয়াল করে দেখুন, দেশে যত প্রকাশ্য কিংবা অপ্রকাশ্য দূর্নীতি হচ্ছে তা কোন না কোনভাবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়।প্রশাসন যখন রাজনৈতিকদের ক্রীড়ানকে পরিনত হন তখন স্বতন্ত্রভাবে প্রশাসনকে দূর্নীতিগ্রস্ত বলা যায় না,উচিতও না।
উদাহরণ সরূপঃ
ধরুন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।সার্কুলার দেয়া হলো।প্রার্থীগণ আবেদনও করলেন।এবার শুরু হলো ধরাধরি!
x  নামে ক্যান্ডিডেট  y নামে এক মন্ত্রীর সুপারিশ ধারী। " x" ব্যক্তি "y" এর সুপারিশ পাওয়ার জন্য " z" নামে একজন এমপি কিংবা স্থানীয় নেতার আশ্রয় নিলেন । z চাকুরী পাইয়ে দেবে বলে x কে প্রতিশ্রুতি দিলেন এবং সেই মোতাবেক y এর নিকট উপস্থাপন করলেন।y সাফ জানিয়ে দিলো, x এর চাকুরীর জন্য a পরিমান অর্থ লাগবে।এবার z এসে x কে a+1  পরিমাণ অর্থের চাহিদা দিলেন। x তাতে রাজিও হলেন।
এবার যা হলো, x পরীক্ষার হলে গেলেন পরীক্ষায় অংশ নিতে।z এর লোকজন ইতোমধ্যে পরীক্ষার হল পরিদর্শক এবং অন্যান্যদের এটা বুঝালেন যে,তারা কারা! হল পরিদর্শক নিরুপায়। কারন তার ক্ষমতা z এর নিকট পাঁচ বছরের জন্য পানি পান্তা। y এর কথা বাদই দিলাম।সুতরাং যা হবার হচ্ছে!
কি কি হতে পারে?
* z প্রশ্নপত্রের কপি বাহিরে এনে সলভ করে x কে সরবরাহ করতে পারে।
* z পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্বেই প্রভাব খাটিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করাতে পারে।
* এমনকি x কে z এটাও বলতে পারে যে,সাদা খাতা জমা দিয়ে আসতে।
* z, x এর সাদা ওএমআর পরীক্ষা শেষে পূরন করেও দিতে পারে।
* এমনকি x পরীক্ষার খাতায় যা কিছু লিখুক না  কেন z উক্তীর্ণদের তালিকায় x এর নাম নিয়ে আসতে পারে।
(এগুলো চোখের সামনে দেখা।তাই বিরোধিতা করে লাভ নাই। এমনকি সেটা অনেকেই জানেনও।বিদ্র. ব্যতিক্রম হতেই পারে।)
এবার পরের স্টেজ । ভাইভা পরীক্ষা।
z এর অনুরোধে y ভাইভা বোর্ড নিয়ন্ত্রণ কারীকে x এর জন্য সরাসরি ফোন দিতে পারেন। (২০০৯ সালে পাবনা পুলিশ লাইনে,পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে পুলিশ সুপার #জনাব মাঝি  এমনি এক নেতার অনুরোধ রাখতে না পারায় তাকে বদলি করা হয় সাত দিনের মাথায়।এমনকি স্থানীয় ওই নেতার লোকজন এসে এক্সাম পেপার ছিঁড়ে ফেলেন। নিজের চোখে দেখা। )
এমতাবস্থায়, নিয়ন্ত্রক অসহায়। বাধ্য হয়ে তিনি সব মেনে নিলেন।
(আমি শুধু মাত্র একটা দিকের একটা  উদাহরণ টানলাম, প্রশাসনের প্রায় সকল ক্ষেত্রে এরকম অজস্র দূর্নীতির মূল হোতা নেতারা।)
এখন কথা হলো,
প্রশাসন যদি চায়ও যে তারা স্বচ্ছভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।তাহলেও তারা তা করতে পারেন না রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে।
অপরাপর, তাদেরকেও রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তিদের দূর্নীতির সাগরেদ হতে হয়।
কিন্তু দোষের ভাগিদার শুধু হোন তারাই।
তাই যতক্ষণ প্রশাসনকে নিজের মত চলতে দেয়া হবে না,এবং প্রশাসনের উপর রাজনৈতিক হর্তাকর্তাদের অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হবে না,ততক্ষণ পর্যন্ত দূর্নীতিমুক্ত প্রশাসন আশা করা যাবে না।
তাহলে, নেতা খ্যাতারা কি করবে? তাদের হাতে তো কোন কাজই থাকলো না?
সাধারণ জনগণ নেতাদের নেতা নির্বাচন করেন তাদের মঙ্গলের জন্য।নেতাদের উচিত জনস্বার্থে কাজ করে যাওয়া।কোথায় জনগনের কি প্রয়োজন তা লক্ষ্য রাখা এবং সেই মোতাবেক স্বচ্ছভাবে সে কাজ সম্পন্ন করা।
শুধু এসি রুমে বসে বসে দূর্নীতির পরিকল্পনা আর মঞ্চে উঠে বড় বড় বক্তৃতা দেয়া নয়!

বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৫

  • ৮:০২:০০ PM
প্রিয়তমা,
পৃথিবীর সকলের সামনে মুখে আত্মভুলানো হাসি টেনে কষ্ট লুকোনো গেলেও নিজের কাছ থেকে নিজেকে লুকোনো যায় না। আজ আমিও পারলাম না।জানি তুমিও পারছো না।
সে কথা ভেবে আর কষ্ট পেও না।যেনে রেখো, কেউ কখনো তা পারে না।আমি কিংবা তুমি কিংবা অন্য কেউ,কেউই না।
আজ খেতে বসে গলা দিয়ে খাবার নীচে নামছিলো না। বুকের ভেতরটাতে হঠাৎ করেই সেই চিনচিনে ব্যাথা শুরু হলো। অনেক কষ্টে হাতের কাছের পানির জগটা নিয়ে দু ঢোক পানি দিয়ে কোন মত গলাধঃকরণ করলাম। কিন্তু তারপর আর কিছু ভেতরে গেলো না।বাধ্য হয়ে হাত ধুয়ে উঠে দাঁড়ালাম। সত্যি বলছি,আমি খুব চেষ্টা করেছি আরেকটু খেতে কিন্তু পারিনি।
চোখের সামনে জলে ভেজা আবছা স্মৃতিগুলো ভেসে উঠলো ধীরে ধীরে।ভুলে যাবো বলে নিকোটিনের সাদা ধোয়ায় ঘরের বাতাস ভারী হয়ে এলো,কিন্তু ভুলতে পারলাম না। সেই সব  দিনগুলি,সেই সব স্বপ্ন যা দেখেছিলাম তুমি আমি এক সাথে তা চোখের সামনে এসে উপহাস করতে শুরু করলো। আমি তাদের তাড়াতে পারিনি।
চোখে পানির ঝাপটা দিয়ে বের হলাম রাস্তায়। ব্যস্ত মানুষের ভীরে যদি কষ্টগুলো কে লুকিয়ে রাখা যায় তাই ভেবে।কিন্তু সেখানেও তুমি,তোমার আমার শত সহস্র স্মৃতিদের আনাগোনা।
মনে আছে তোমার?
রাস্তা পার হতে গেলেই তুমি আমার হাত খানা শক্ত করে ধরে থাকতে।আর যতবারই রাস্তা দিয়ে হেটে যেতাম ততবারই তোমার একটা আঙুল খেলা করত আমার হাতের তালুতে ।তুমি হয়ত মনে করতে,আমি বুঝি হারিয়ে যাবো ব্যস্ত রাস্তায় ব্যস্ত মানুষের ভীরে! কিংবা আমার হাতটা ধরে চির নিরাপত্তা আর ভরসা অনুভব করতে মনে মনে।
জানো,
আমিও তোমার হাতটা ধরে চিরদিন এমনি করে পথ চলার কথা ভেবেছি তখন।ভাবতাম, সারা জীবন যেন আমার হাতের তালুতে তোমার আঙুল এভাবেই খেলতে থাকে।চির সবুজ হয়ে থাকে আমাদের ভালোবাসা বার্ধ্যক্যের শেষ বেলাতেও।
কিন্তু দেখ,
কি আচানক সব কিছু বদলে গেলো জীবন থেকে! চোখের পলকে এতদিনের গড়ে তোলা স্বপ্ন গুলো ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো। বিনা অপরাধে নির্বাসিত হলাম দুজন দুজনার জীবন থেকে । কিছু মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চরম ত্যাগের মহিমা স্থাপন করলে তুমি। সেই সাথে চিরদিনের জন্য একটা মুখের হাসি হারিয়ে গেলো স্বার্থপর পৃথিবীর মানুষের থেকে ।।
আজকেও দিন শেষে নিয়ন বাতির শহুরে রাতে ব্যস্ত রাস্তায় যখন পার হচ্ছিলাম,তখন নিজের অজান্তেই একটা হাত পেছনে বাড়িয়ে দিয়েছি তুমি ধরবে বলে।কিন্তু দ্রুত ধেয়ে আসা রিক্সার হ্যান্ডেলে বারি খেয়ে নিজের জ্ঞান ফিরে এলো।বুঝলাম, তুমি নেই।তুমি তো আর থাকবে না!হাত গুটিয়ে নিয়ে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে গেলাম। নিকোটিনের শলাকা হাত থেকে মুখে চলে এলো আপনা আপনি।  তারপর এক গাল ধোয়ার কুন্ডলী ছেড়ে তোমার স্মৃতিকে ছড়িয়ে দিলাম দুর আকাশে।
হয়ত এভাবেই ছড়িয়ে দিতে হবে সারাটি জীবন ভর। কিন্তু তুমি যেখানেই থাকো, সুখে থেকো । খুব বেশি মনে পড়লে আকাশের তারাদের গুনো।আর ইচ্ছে মত কোন একটা কে ভেবে নিও,সেটা আমি।
একদিন আমাকেও তো আকাশের তারা হতে হবে,তাই না? সেই তারাটা না হয় আজ থেকেই স্থির করে রেখো!
ভালো থেকো।
ইতি
নীলকান্ত®
  • ১২:০২:০০ PM
জীবনের ভুল গুলো থেকে মানুষ শিক্ষা পায়।কিন্তু আমার মনে হয়, আমিই একমাত্র ব্যক্তি যে ভুলের উপর ভুল করি!
ছোটবেলা থেকে আজ অবধি যত ভুল করেছি তার প্রত্যেকটা যদি একটার পর একটা সাজাই তবে তা মাউন্ট এভারেস্ট হয়ে যাবে। আর সে জন্যেই নিজের ভুলের মাঝে কখনো কখনো খেই হারিয়ে ফেলি । কি করব? কি করা উচিত? কোনটা করা উচিত না? কিংবা কোন কাজ করতে গিয়ে বার বার মনে হয়, এটা করা ঠিক হচ্ছে তো? এরকম শত সহস্র সিদ্ধান্ত হীনতার জন্ম আমার ভুল থেকে।তারপরেও সব কিছু ঠেলে যখন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই,তখনই আবার কোন না কোন ভুল করে বসি।আর সে ভুল জীবনের তিল তিল করে গড়ে তোলা ছোট ছোট স্বপ্নের প্রাসাদ টা নিমিষে ধুলিষ্যাৎ করে দেয়।
নিজের প্রতি প্রচন্ড রাগ হয়,আর বিধাতার প্রতি অভিমান।
বারবার আমিই কেন!
আমাকেই কেন এত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়? আমারো তো ইচ্ছে করে নিজেকে নিজের মত করে বাঁচতে,নিজের মত করে নিজেকে গড়তে।
তবে কেন বারবার আমিই হোচট খাই?
তবে কি বিধাতা অন্য সবার জন্য,আমার জন্য নয়?? 
প্রচন্ড হতাশা, রাগ,অভিমান বাসা বাধে মনে। নিজের বিবেকের দংশন,প্রতিবেশীর ভ্রুকুটি, বন্ধু-বান্ধবের স্বার্থপর অবহেলা, পরিবারের সদস্যদের অসহায় মুখ গুলো আমাকে উপহাস করে।
ইচ্ছে হয়, পৃথিবীকে গুডবাই জানিয়ে উপরের জগতে চলে যাই।কিন্তু যে আমি অন্যদের এ পথে যেতে বারন করি,যে আমি অন্যদের হতাশাগ্রস্ততার উপর আশার প্রলেপ দেই কথায় কিংবা কাজে, সেই আমি এত হীন সিদ্ধান্ত নেই কি করে???
আমি যদি আত্মহত্যার মত বাজে,নিচু,ফালতু একটা সিদ্ধান্ত নেই তবে যারা আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রুকুটি করে,যারা আমায় দেখে উপহাসের হাসি ঠোটের কোণায় লাগিয়ে মিটিমিটি হাসে তারাই তো জিতে যাবে।
আমার বন্ধ নিঃশ্বাসের আড়ালে দাড়িয়ে তারা আরো মজা উড়াবে আমাকে নিয়ে! কিন্তু আমি সেটা কি করে হতে দিতে পারি??
নিজের ব্যর্থতার সকল দায়-ভার নিজের কাধে নিয়ে আমি আরেকবার ঘুরে দাড়ানোর শপথ নেই। যেটা হয়নি তা যে হবে না তা ত না।তাই নতুন করে স্বপ্ন সাজাই।আবারো স্বপ্ন দেখি বেঁচে থাকার,নিজের স্বপ্ন গুলোর সফল পরিনতি দেখার।।
আমাকে যে পারতেই হবে।।।

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

  • ৩:৩৬:০০ AM
ভাবনার জীবন ও জগৎঃ
-----------------+--------------
আমি এত এত ভাবি যে,ভাবতে ভাবতে ভাবনাগুলোও ভুলে যাই।
আমার গার্লফ্রেন্ড প্রায়শই বলে,"তুমি এত বেশি বুঝ ক্যান? এত বেশি ভাবো কেন? "
গার্লফ্রেন্ডকে কিভাবে বুঝাই,"সুস্থ মস্তিস্কই ভাবনায় ডুবে থাকে,একমাত্র  পাগলের কোন ভাবনা থাকে না।"
কে যেন বলেছিলো, "যে কোন চিন্তা করে না বা যার কোন টেনশন নাই সেই একমাত্র সুখি। আর যে সবচেয়ে বেশি সুখি সে অবশ্যই পাগল নয়ত ভগবান। কারন,পাগলের কোন ভাবনা থাকে না।আর মানুষ যেহেতু ভগবান নয় তাই সে পাগলই।"
আমার মনে হয় যিনি এ কথাটি বলেছিলেন তিনি এরিষ্টটলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বলেছেন।এবং যা বলেছিলেন তা খাটি সত্য কথাই বলেছেন।
মানুষের ভাবনার ধারা বিচিত্র।একেক জনের একেক ধরনের ভাবনা।একেক বিষয়ে একেক জন ভাবেন। কিন্তু যেটা সবার ক্ষেত্রে কমন সেটা হলো,"সবারই ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু জীবন ও জগৎ। "
জীবনের ভাবনা গুলো আবার দুই রকমঃ
এক, ব্যবহারিক জীবন
এবং দুই, আধ্যাত্মিক জীবন
ব্যবহারিক জীবনের মধ্যে রয়েছে, দৈনন্দিন কর্মকান্ড, কল্পনা-জল্পনা,অতীত,বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। এক কথায় ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমরা যা কিছু ভাবি তা আমার মতে, "ব্যবহারিক জীবন ভাবনা"।
আর জন্মের পূর্বের এবং মৃত্যুর পরের ভাবনা গুলো হলো আধ্যাত্মিক জীবন  ভাবনা।
মজার বিষয় হলো, আধ্যাত্মিকতা এবং ব্যবহারিক জীবন দু'টো পরস্পরের উপর নির্ভরশীল ।
আমরা জন্মের পর থেকেই এমন একটা আধ্যাত্মিক ক্ষমতা নিয়ে জন্মাই যা জন্মের পূর্বে আমরা মাতৃ গর্ভে ব্যবহার করতাম।আমার মনে হয়,মাতৃ গর্ভে শিশুরা যখন ধীরে ধীরে বড় হয় তখন বাহ্যিক পৃথিবী সম্পর্কে একটা কল্পনা করতে থাকে।আর তারা বাহিরের পরিবেশের সাথে সাথে নানাভাবে রিয়েক্ট করে এটা তো প্রমানিত সত্য।কিন্তু এসব রিয়্যাক্ট করার সাথে সাথে তারা পরিবেশ সম্পর্কে একটা কল্পনাও করে নেয়।
আর এই কল্পনা শক্তি বা আধ্যাত্মিক শক্তি আমরা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেও অনুভব করি।
কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে এসে আমরা যখন কোন বিষয়কে নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করি কিংবা আমাদের মন যদি কোন বিষয়ে একান্তভাবে সায়/সাপোর্ট দেয় তখন তা বাস্তব হয়।তবে বাস্তব অবস্থা কল্পনা করার জন্য আমাদেরকে মাতৃগর্ভে ফিরে যেতে হয়।অর্থ্যাৎ যে বিষয়টা আমাদের সাথে নেই বা যা আমরা দেখতে পাইনা কিন্তু তার অবস্থা কিংবা পরিবেশ বুঝতে চেষ্টা করি,তা বুঝতে হলে সেই বিষয়কে সেভাবে অনুভব করতে হয় যেভাবে মাতৃগর্ভে থেকে আমরা পৃথিবীকে অনুভব করি।
এজন্য ওই বিষয়ের প্রতি একটা গভীর ও নিস্পাপ ভালোবাসা থাকতে হয়,নিষ্পাপ শিশুর মত।
উদাহরণ সরূপঃ
ব্যবহারিক জীবনে আমরা অনেক সময় খুব প্রিয়জনদের অনুপস্থিতিতে তার মুভমেন্ট গুলো আন্দাজ করতে পারি। যা অনেক সময় ৭০-৮০% সত্য হয়।
কিন্তু, এটা কিভাবে সম্ভব?
এটা সম্ভব এই কারনে যে,আমরা যখন কোন কিছুকে গভীর এবং নিষ্পাপ মনে চাই/ ভালবাসি তখন আমাদের মধ্যে সেই স্প্রিচুয়াল পাওয়ারটা অনুভব করতে পারি।
কিন্তু বাস্তব জগতে এটাকে আমি সরাসরি আধ্যাত্মিক ভাবনা না বলে বলতে চাই,"অধি-কাল্পনিক অনুভব"।
#আর যখন আমরা আমাদের মৃত্যুর পরবর্তী জীবনকে কল্পনায় বা ভাবনায় নিয়ে আসি তখন তাকে আধ্যাত্মিক ভাবনা বলা যেতে পারে।মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে অবিনশ্বর আত্মার একটা সীমাহীন পথ যাত্রা শুরু হয়।সেই যাত্রা পথের সাম্ভাব্য বিষয়াবলী কে অনুভব করা বা উপলব্ধি করা হলো, "আধ্যাত্মিক জীবন ভাবনা"।
তাই শুধু জীবন নিয়ে আমরা যদি ভাবতে যাই তবে আজীবনেই জীবনের ভাবনা শেষ হবে না।
যে সৃষ্টির শুরু হয়েছে কোটি কোট বছর পূর্বে এবং যা অনন্ত কাল ধরে চলতে থাকবে তা মাত্র ৬০ কিংবা ৭০ কিংবা সর্বোচ্চ ১০০ বছরের ক্ষুদ্র জীবনে ভেবে শেষ করা কি সম্ভব?
না,কখনোই তা সম্ভব না।
তাই আমাদের ভাবতে হয় জগতের ভাবনা। কিন্তু বৃহৎ জগতের আদি ও অন্ত ভাবনা অনন্ত।তাই জগৎ এর আদি বা সৃষ্টি ভাবনা এবং অন্ত বা ধ্বংসের ভাবনাকে জীবনের আধ্যাত্মিক ভাবনার মধ্যে স্থান দিলে মানুষের আয়ুষ্কালে যে ক্ষুদ্র পরিসর পাওয়া যায় তাই টিকে থাকে জগৎ ভাবনা হিসেবে।
জগৎ ভাবনার বিষয়ের মধ্যে থাকে জীবনের লেনদেনের হিসেব,জগতে টিকে থাকার সংগ্রামের বিষয়বস্তু।
এটাকে ব্যবহারিক জীবন ভাবনার সাথে তুলনা করা যেতে পারে তবে ব্যবহারিক জীবন ভাবনা ও জগৎ ভাবনাকে এক বলা যাবে না।
ব্যাবহারিক জীবন ভাবনার বিষয়বস্তু গুলো হলো মানুষিক কিন্তু জগৎ ভাবনার বিষয়গুলো হলো বস্তুগত।
তবে সে যাই হোক,
জীবন ও জগতের মধ্যে ব্যবহারিক জীবন ভাবনা এবং জগৎ ভাবনাই হলো গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই দু'টি ভাবনাকেই আমরা বাস্তবে উপলব্ধি করতে পারি কিংবা বাস্তবে প্রয়োজন হয়।বাকি গুলোর অস্তিত্ব শুধুমাত্র মৃত্যুর পরেই উপলব্ধি করা সম্ভব।। তার আগে নয়।।
#নীলকান্ত®
  • ৩:৩৪:০০ AM
মিস ইউ সো মাচঃপত্র ৮
প্রিয়তমা,
কতদিন হলো, বল তো!
স্বপ্নভাঙা কষ্ট গুলির সুখ হারানোর  আর্তনাদের?
কতরাত গেল, ভাবো তো!
আঁধার ঘরে চক্ষু দু'টির নিদ হারানোর অশ্রুজলের?
দু-চার দিন? বছর,যুগ কিংবা শতাব্দী?
হবে হয়ত।
জানো,
সময়ের মিথ্যে অহংকারে কত দিন রাত হয়?
কত রাত তার জোসনা হারায় সূর্য তাপে?
জানো হয়ত।!
ডানাভাঙা পাখির মত স্বপ্নগুলোর আর্তনাদে দিনের আলো গোধূলির সাথে সাথে রাতের আধারে হারায়।
আমি ভাবি,এই তো আজ রাতটা বুঝি আমার। পূব আকাশে সকালের উদীয়মান সূর্যের দিকে তাকিয়ে ভাবি,আজকের দিনটা বুঝি আমার।
কিন্তু হায়! সেই দিন আর আমার থাকে না। সেই রাত আর আমার হয় না।এই সব দিন-রাত্রী আজ আমার বড় অচেনা কেউ।যার দিনের আলোয় সুখ থাকে না,রাতের আঁধারে স্বপ্ন থাকে না।
বরং কষ্টের ঝিঝিপোকাগুলো সারা রাত ধরে ডুকরে কাঁদে।
ডানা ভাঙা  স্বপ্নগুলো আগ্নি গোলায় পুড়তে থাকে।
এক আকাশ স্মৃতির মেঘেরা রাতের আধারে টপটপ করে ঝরে পড়ে বৃষ্টি হয়ে!
ঝরতে থাকে।
চোখের কার্নিশে জমা হয় বেদনার জলোচ্ছ্বাস । স্বপ্ন পোড়া কষ্ট গুলো বুকের ভেতর আইলা কিংবা সিডরের মত সবকিছু তছনছ করে দেয় ।
সময় থমকে যায়, আমি বুদ হয়ে থাকি স্মৃতির আফিমের নেশায়।সেই সব কয়েক হাজার শতাব্দীর ফেলে আসা স্মৃতিতে।তোমার আমার ফেলে আসা অতীতে।
প্রিয়তা,
তোমারও কি এমনি হয়?
তুমিও কি ডুকরে কাঁদো,স্বপ্ন পোড়ার আর্তনাদে!
তুমিও কি অশ্রু ঢালো,
জড়িয়ে স্মৃতি বুকের মাঝে মধ্যরাতে,
কষ্ট নিয়ে মিথ্যে তাদের অপবাদে??
হবে হয়ত।
হয়ত তুমিও আমার মত কষ্টে আছো। নষ্টা মানুষের ভ্রষ্টা হওয়া এই ধরাতে!!
#নীলকান্ত©
  • ৩:৩২:০০ AM
আই মিস ইউ -পত্রঃ১০
প্রিয়তমা,
"বেদনার বালুচরে দাড়িয়ে বুক ভরা হাহাকার আর আর্তনাদ নিয়ে বড় জানতে ইচ্ছে করছে,তুমি কেমন আছো? "
তেমনি আছো কি, যেমনটি ছিলে? নাকি চন্দ্র সূর্যের দিন রাত্রির চির আবর্তনে পাল্টে গেছে তোমার অবস্থান? তুমি কি শরতের নীল আকাশের তুলো মেঘের মত মাথার ঠিক উপরে যেভাবে ছিলে সেভাবেই আছো, না কি কুয়াশায় ঢাকা কোন হাড় কাঁপানো শীতের মধ্য দুপুরে সূর্য হয়ে দক্ষিন গোলার্ধ ঘেষে এগিয়ে যাচ্ছ অনাগত গ্রীষ্মের দিকে? সত্যিই খুব জানতে ইচ্ছে করছে।
জানো সোনা,
আজ আমার মনের আকাশটা বিরহের অমাবস্যার ঘুটঘুটে আঁধারে ঢাকা।স্বপ্নের জোনাকি গুলো ডানা ভেঙে লুটিয়েছে জমিনে। কষ্টের ঝিঝিপোকা গুলো আর্তনাদ করে চলেছে স্মৃতি গুলোর বুক জুড়ে।আমি না পেরেছি তাদের বুঝাতে, না পারি নিজেকে বুঝাতে।ব্যর্থতার এহেন পরিস্থিতিতে আমি আজ বোবা-কালা কিংবা, অন্ধ কিছু একটা হব হয়ত।
জানো,আর তাই
ভালোবাসার যে আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে তুমি ছিলে তা আজ আঁধারে ঢাকা। । ছোট ছোট স্বপ্ন আর সুখের স্মৃতিগুলো রাতের আকাশে যে তারা হয়ে জ্বলত,তারাও আজ নিভে গেছে প্রায়।অশরীরী স্বপ্নেরা মাঝে মাঝে সামনে এসে ভীর করে বটে,কিন্তু তাদের ধরা যায় না,ছোয়া যায় না।
সত্যি তুমি ছাড়া আমি আজ অসহায়। সত্যি আজ আমি সেই আমি আর নেই।।আমি মরে গেছি মন থেকে, শুধু অর্ধ মৃত খাঁচাটা পরে আছে মানুষের মাঝে একটা নাম নিয়ে!
আজ তুমি বললে,"কিছু একটা লিখো তো,তোমার লেখা কতদিন হল পড়িনা।"
আমি বললাম,"লেখার ভাষা হারিয়েছে তোমার সাথে সাথে।"
তবুও তোমার অনুরোধে মোবাইলের ডিসপ্লের উপর ঘন্টা চার কেটে গেলো শুধুই তাকিয়ে তাকিয়ে! কিন্তু
শেষ পর্যন্ত অনেক চিন্তাভাবনা করে একটা শব্দ বেরুলো না যা লিখা যায়। একটা বাক্য এলো না, যা দিয়ে মনের কথা গুলো তোমাকে জানাতে পারি। তাই এলোমেলো শব্দের বিন্যাসে অনর্থক কিছু কথা বলে গেলাম,যার হয়ত কোন মানে হয়না! তবুও লিখলাম, হয়ত এরই মধ্যে কোন শব্দের আড়ালে আমার লুকোনো বেদনার ছাপ তুমি খুঁজে পাবে বলে।হয়ত কোন অনর্থক শব্দের আড়ালে লুকিয়ে থাকা তোমাকে পাবার তীব্র বাসনা তুমি বুঝবে বলে।
আচ্ছা,
তুমি কি খুঁজে পেয়েছ সেরকম কোন কিছু? বুঝেছ কি শব্দের আড়ালে হৃদয়ের তীব্র আর্তনাদ??
জানিনা।
আর জানতেও চাই না।
লক্ষীটি,
শুধু একটা কথাই জানতে চাই,
তুমি কি এখনো ভালবাসো আমাকে? এখনো কি অমাবস্যার আধার ঠেলে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে আমার আকাশে উদিত হওয়ার তীব্রতা অনুভব কর তুমি? যেমনটি করতে!
এখনো কি মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে গেলে মোবাইলের ডায়াল প্যাডে আমার নাম্বার তুলো আনমনে? একলা ঘরে ভয়ে কাঁচুমাচু হয়ে, এখনো কি ইচ্ছে করে শক্ত করে জরিয়ে ধরে থাকতে?
হয়তবা!!
যদি এখনো হৃদয়ের কোন এক কোণে স্মৃতিগুলো জ্বলে উঠে হঠাৎ হঠাৎ, কিংবা চোখের কার্নিশে জমা হয় বিরহী লোনা জল, তবে চলে এসো।
চলে এসো চির উন্মুক্ত হৃদয়ের দরজা ঠেলে।আমি অপেক্ষায় থাকবো এভাবেই ।।
ভালো থেক।খুব বেশি মিস করলে আয়নায় নিজেকে দেখো।স্পর্শ গুনো একটা একটা করে। সেখানেই আমাকে খুঁজে পাবে!
#নীলকান্ত©
১৫/০৯
০৩:২৪

শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

  • ১:৩৯:০০ PM
চল একটা কবিতা লেখা যাক,
যেখানে প্রতিটি ছত্রে তুমি আর আমি,
যার প্রতিটি মাত্রায় যোগ হবে একেকটা স্বপ্ন,
পূর্ণিমার চাঁদ, বৃষ্টি ভেজা দুপুর আর
সময়ের উল্টো স্রোতে ভেসে বেড়ানো কষ্ট গুলি।
চল একটা গল্প লেখা যাক,
যেখানে স্বপ্নরা বাসা বাধে আবেগের তুলিতে,
নীল বেদনার লাল মেঘেরা উকি দেয় আকাশে,
আর ভালোবাসা হয়ে রয় সাদা ক্যানভাস।
চল,একটু খুনসুটি করা যাক,
যেখানে তোমার টোল পড়া গাল থাকবে,
চোখের তারায় কামনার ছাপ থাকবে,
কল্পলতার স্বল্পকালে মান থাকবে,রাগ থাকবে
আর থাকবে কাছে আসার উদাত্ত আহ্বান।
(সংক্ষিপ্ত)
#নীলকান্ত©

শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৫

  • ১২:২৫:০০ AM
পরাগায়ন
---------------
ঠোট দু'টো দারুনভাবে আশাহত!
কামনার তীব্রতায় ব্যাকুল প্রতিটি শিরা-উপশিরা।
আচানক শুভ্র ফুলের বর্ষণ
মিনারের শীর্ষদেশ।
কোথাও কিছু নেই,
রক্তজবার কোমল স্পর্শ কিংবা
অপরিস্ফুট গোলাপের কলি,
নেই কিছু নেই।
সাধের ভ্রমর ডানা ভেঙে আছে; থাকে,
লাউয়ের কলিগুলো ধীরে ধীরে ফুল হয়;ঝরে পরে,
শুধু অতৃপ্ত ক্ষুধা নিয়ে জেগে থাকে গাছটা।
আবারো অন্য কোনদিন-ফুল ফুটবে,
ডানা মেলে উড়ে আসবে সাধের ভ্রমর;
পরাগায়নের সুখে লাউয়ের ডগা মল পড়বে,
পাপড়িগুলো ভিজে থাকবে
ভোরের শিশিরে;
ফল ধরবে, এই ভেবে।।

শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫

  • ৩:৫২:০০ PM
হে বিবেক,
তুমি ঘুমিয়েই থাক।চির ক্লান্ত তোমার জেগে উঠার দরকার কি? যেখানে হাজারো চোখের সামনে নির্যাতিত, নিপীড়িত, অত্যাচারিতের আর্তনাদ আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয় তখনও তুমি ঘুমিয়েই থাক,বরং তাই ভালো।।হাজারো চোখের মধ্যে যখন এক জোড়া চোখে অবিরত বারি বয়,তখনও তুমি ঘুমিয়েই থাক। শত আকুতি-মিনতি,বাঁচতে চাওয়ার তীব্র ব্যকুলতায় যখন কারো কন্ঠস্বর চারিদিকে আর্তনাদের সুর তোলে, তখন তুমি বধিরের মত পাশ কাটিয়ে চলে যাও।ঘুমিয়ে থাকো। তুমি ঘুমিয়েই থাক।
বিবেক,তুমি আজ বধির হয়ে গেছো। তুমি আজ অন্ধ হয়ে গেছো ।
আফসোস, কোন একদিন তুমিও জেগে উঠবে নিজের আর্তনাদ শুনে  কিন্তু তোমার আশ পাশের সবাই অন্ধ,বধির হয়ে থাকবে,যেভাবে তুমি ছিলে ।সেদিন তোমার বুক ফাটা আর্তনাদ কারো বিবেকে স্পর্শ করবে না। তারাও যে তোমারি মত অন্ধ,বধির আর ঘুম কাতুরে।
বিবেক, তুমি জেগে উঠো। দেখতে শিখো,বলতে শিখো, প্রতিবাদ করতে শিখো। আর তা না হলে ঘুমিয়েই থাকো।
  • ৩:৫১:০০ PM
"ভালোবাসা(Love) হল এমন একটা শব্দ যার মোট বর্ণ  সংখ্যা চার। এবং এর প্রথম বর্ন L,ইংরেজি বর্ণমালার ১৬ নাম্বার বর্ণ এবং তৃতীয় বর্ণ V, ২৪ নাম্বার বর্ণ। দু'টোই ৪ দ্বারা বিভাজ্য।দ্বিতীয় বর্ণ
O,  হল ১৯ নাম্বার বর্ণ এবং পঞ্চম বর্ণ  E হলো ইংরেজি বর্ণমালার ৫ নাম্বার বর্ণ, যাদের যোগফল আবার  ২৪। এবং এটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য।
এবং সকল বর্নের অবস্থানের ক্রমিক একসাথে যোগ করলে হয় ১৬+১৯+২৪+৫=৬৪,যা ৪ দ্বারা বিভাজ্য এবং ভাগফল হয় ১৬। এবং অবাক করার বিষয় হলো ১৬ এর বর্গমূলও কিন্তু চার (৪)।
অন্যদিকে, চারটি বর্ণ দ্বারা একটা শব্দ হয় LOVE, যা বাংলাতেও চারটি বর্ণ দ্বারা গঠিত (ভা২৪+লো২৮+বা২৩+সা৩১)।
"ভালোবাসা" শব্দের "ভ" বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণের ২৪ নাম্বার বর্ণ এবং "ল" হলো ২৮ নাম্বার বর্ণ। দু'টি বর্ণের অবস্থান গত ক্রমিক ৪ দ্বারা বিভাজ্য এবং ভাগফল যথাক্রমে ৬ এবং ৭  । এই দু'টি ভাগফলের যোগফল ৬+৭=১৩।
আবার ২৪+২৮= ৫২ । এই ৫২ কে ১৩ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল হয় ৪।
অবাক করা বিষয় যে "ভালোবাসা" শব্দের বাকি দু'টি বর্ণ "ব" এবং "স" বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণমালার যথাক্রমে  ২৩ এবং ৩১ নাম্বার বর্ণ। যাদের সমষ্টিও আবার ৫২ এবং তা ১৩ দ্বারা ভাগ করলে দ্বারায় (৫২/১৩=৪)। অর্থ্যাৎ ৪ সংখ্যা টি ভালোবাসার জন্য একটা লাকি সংখ্যা।এবং ভালোবাসা এই ৪ সংখ্যার উপরই আবর্তিত হয়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, "ভালোবাসা" একটি গানিতিক যুক্তিতে প্রবাহমান। ভালোবাসার গানিতিক হিসেব যদি না মিলাতে পারেন তবে ভালোবাসা আপনার কাছে ধরা দেবে না কিংবা আপনি কখনোই তাকে ধরে রাখতে পারবেন না।
Now check it out.
গানিতিক বিশ্লেষনঃ
_নীলকান্ত
  • ৩:৫০:০০ PM
ভালোবাসা হলো কিছু সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম  অনুভূতির সমষ্টি। এর মধ্যে একটির অভাব অন্যটিতে প্রভাব ফেলে।
আগে বলতে শুনেছি,"যাকে ভালোবাসো,তাকে উজার করে দাও।প্রতিদান আশা করো না।"
এই উক্তিটা কে প্রথম করেছিলেন জানিনা,কিন্তু যে এই উক্তিটির জন্মদাতা তিনি পরোক্ষভাবে প্রেমিক প্রেমিকাদের আত্মহত্যাকে উৎসাহিত করেছিলেন।কেননা,এক পক্ষ শুধু দিয়েই যাবে প্রতিদানে এতটুকু ভালোবাসা পাবে না,তা মেনে নেয়া যায় না । আমার মতে, "যখন তুমি কাউকে ভালবাসি বল কিন্তু সে কখনো তোমাকে বলে না কিংবা এড়িয়ে যায় কিংবা গেছে কিংবা এড়িয়ে যাচ্ছে,মনে রেখ সে তোমাকে ভালোবাসে না,বাসেনি কিংবা এখন তোমার চেয়ে Better  কাউকে পেয়েছে। "
অতএব,এখন না পরে বলবে,পরে না পরশু বলবে কিংবা আজ বাসে না কাল বাসবে, এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে মানে মানে কেটে পর।That'll b better.
কেননা, ইমানের যেমন তিনটে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত রয়েছে তেমনি ভালোবাসারও তিনটে শর্ত আছে।
এক, মনে প্রাণে বিশ্বাস করা যে তুমি ভালোবাস।
দুই, মুখে স্বীকার করা যে তুমি ভালোবাস এবং
তিন, তুমি যে ভালবাস তা কার্যে পরিনত করে দেখানো।
এই তিনটে শর্তের একটি কম হলে সে ইমান যেমন দূর্বল, তেমনি সে ভালোবাসাটা দূর্বল। যাকে রসায়নের ভাষায় বলে "ভ্যানডারওয়াল"।
সুতরাং কেউ একজন কোন একজনকে পাগলের মত জান-প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে যাবে কিন্তু প্রতিদানে অন্যের সন্তানের আংকেল বা আন্টি হবে তা মেনে নেয়া যায় না।আর তখনই বিগত দিনের পাগলামি ভুল মনে করে কেউ বখে যায় আর বিগত দিনের স্মৃতি গুলো নিয়ে কেউ হারিয়ে যায়। কিংবা আমৃত্যু মৃতপ্রায় মন নিয়ে বেঁচে থাকে কিংবা অন্যের ভুলের প্রতিদান দিতে হয় অন্য কাউকে।
কিন্তু তা কেন?
ভালোবাসলে সোজা বল,যে ভালবাস,আর না বাসলে নিজের রাস্তা মাপ।
বি.দ্রঃ ভালোবাসার অন্য কোন শ্রেনীবিভাগ করার দরকার নেই। আমি একটা ছেলে ও মেয়ের মধ্যে যে ধরনের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাই বুঝিয়েছি।
  • ৩:৪৮:০০ PM
জীবন চলার পথে ভুল পদক্ষেপের মাশুল ভয়াবহ এবং ভোগীই জানে তা কতটা ভয়াবহ হতে পারে।
"Life is like playing chess. Every step you r taken, taking risk to lose or live there.
And in every squire you are stepping, leading you to the game over."
এই বিখ্যাত উক্তিটি কে করেছিলেন ঠিক মনে করতে পারছি না।তবে নিজের মত করে এর অনুবাদ করলে দাঁড়ায়।
"জীবন হলো দাবা খেলার মত।এখানে আপনার প্রতিটি  চালে ঝুঁকি নিতে হয় হারার কিংবা জিতার।
এবং আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ আপনাকে চালনা করবে খেলার সমাপ্তির দিকে।"
সত্যিই তাই। এক চাল, দু'চাল করে জীবনের এমন এক পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছি, যেখানে পদে পদে হেরে যাবার ভয়।সময়ের স্রোতধারায় থেমে থাকার সুযোগ নেই।
পরিস্থিতি এমন যে," হয় এগিয়ে চল, নয়ত এখানেই ডুবে মর।
যদি এগিয়ে যাও তখনও মরতে হবে,কিন্তু কিছুটা সময় পাবে।কিন্তু যদি থেমে যাও তবে তোমার চারপাশের উত্তাল ঢেউ তোমাকে চাপা দিয়ে যাবে।"
#এখন মনে হয়,
দিক বিদিক জ্ঞান শূন্য আমি কাষ্ঠ ছেড়ে খড়কুটো কে আকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন বুঝছি সেই ছেড়ে দেয়াটা কত বড় ভুল ছিলো । আজ ডুবে যেতে যেতে ঊঠে দাড়ানোর যে নিরলস চেষ্টা করছি, তা আগে কেন করিনি তাই ভেবে নিজেকে ধিক্কার দেই।কষ্ট হয়,  কেন আমি দেখে না শিখে ঠেকে শিখতে গেলাম!ঠেকে শেখার জ্বালা যে কি তা আজ খুব বুঝি। আফসোস, দেখে শিখলে আজ হয়ত এই ঠেকে থাকার যন্ত্রণা টা হত না।
তারপরেও সৃষ্টিকর্তাকে শত সহস্র ধন্যবাদ যে, তিনি আমাকে এতটা পথ টেনে এনেছেন এবং এতটা পথ চলার জন্য সময় এবং সাহস দিয়েছেন।
  • ৩:৪৮:০০ PM
"জীবনটা মোকাবেলা করার জন্য, ভয়ে চুপসে থাকার জন্য নয়।"
------------------------------
আমার এক বান্ধবী হঠাৎ ফোন করলো আজ।তা, কমপক্ষে বছর খানেক পর হবে!
অপরিচিত নাম্বার দেখে একটু ইতস্তত করে ফোন টা রিসিভ করলাম।
ও পাশ থেকে কোন সম্বোধন কিংবা কুশল বিনিময়ের কোন বালাই নেই।ফোন রিসিভ করতেই ঠাস ঠাস করে কানের উপর কয়েকটা পড়লো,"তোরে থাপ্ড়াইয়া দাঁত খুলে ফেলবো। ফেসবুকে এসব কি লিখিস, হ্যা? "
আমি ঘটনার আকষ্মিকতায় হতবম্ভ। কে এত অধিকারের সাথে কথাগুলো বলছে তাও ভাবার কথা আমি ভুলে গেছি।সে যে কে, সেটাও জিজ্ঞাসা করার সাহস পাচ্ছি না।
এদিকে, অন্য পাশ থেকে তিনি এক নাগারে বলে চলছেন,
"আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।তুই কি সেই? যে মৃত দেহেও জীবনের সন্ধান খোঁজে? তবে আজ কেন এতটা হতাশ? স্ট্রেঞ্জ!
তুই যে এতটা হতাশ,জিরো কনফিডেন্টেড হবি তা ভাবতেই পারছি না।"
এবার একটু দম নিলেন তিনি।আর আমিও সুযোগ পেলাম একটু ভেবে দেখার আসলে তিনি কে!
"কিরে কথা বলিস না কেন? তোরে চাপড়াইয়া কিন্তু সোজা করে ফেলবো। "
আমার ভাবার আর সময় নাই।কেন জানি মনে হচ্ছে,উত্তর না দিলে সত্যি সত্যি বোধহয় কপালে দুঃখ আছে।তাই সম্বোধন এড়িয়ে বললাম,"না মানে,নিজেকে নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে আছি।তাই ভেতরের কিছু কথা নিজের অজান্তেই বের হয়ে যাচ্ছে! "
ও পাশ থেকে বান্ধবী বলল,"দূর.. কি যা তা ভাবিস! B positive man.Everything is a part of living. Take these as simple as u can."
ও আমাকে উপদেশ দিয়ে যাচ্ছে, আর আমি মিলাতে চেষ্টা করছি সে কে! বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পর বুঝতে পারলাম, হায়রে! এত সেই টিনা! ২০০৮ এ যে সামান্য একটা বিষয় নিয়ে আত্মহত্যার মত দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়েছিলো ।প্রাইমারি থেকে কলেজে যে সেরাদের সেরা হয়েও এইচ এস সি তে চরম ফলাফল বিপর্যয়ে হতাশ ছিলো ।তারপর কত দিন-রাত ওকে বুঝিয়েছি তার ঠিক নেই!   দু'জনের জীবনের চরম মুহুর্ত গুলো শেয়ার করে সেদিন জীবন থেকে হালকা হয়েছিলাম।সামনে এগুনোর পথ ধরে আমিই ওকে চলতে শিখিয়েছিলাম ভবিষ্যতের পথে। তারপর ও গেছে ওর পথে আর আমি আমার।
মাঝখানে প্রায় ৬ টি বছর কেটে গেছে।পাল্টে গেছে জীবনের লেনদেন,বদলে গেছে হিসেব। কিন্তু সাত বছর পর হঠাৎ করে উল্কা পিন্ডের মত উদয় হয়ে ও যে আমাকে নতুন করে পথ দেখিয়ে দেবে তা কখনোই ভাবিনি।
ও কথা বলেই চলেছে। সেসব কথা নয়,উপদেশ।আমি মনযোগী ছাত্রের মত শুনে চলেছি। হ্যা,হু কিচ্ছু নেই।
বেশ কিছুক্ষণ পর ও বলল,"কি রে,বুঝেছিস, কি বললাম? "
আমি ওকে বললাম, "তুই কেমন আছিস? ভালো আছিস তো? "
"ওহ! সরি রে! দেখ, তোর স্ট্যাটাস পড়ে এত মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিলো যে,তুই কেমন আছিস তা জিজ্ঞাসা করতেও ভুলে গেছি? আমি ভালো, তুই? "
-"যেমন দেখছিস।তেমনি আছি। আগে যেমন ছিলাম সেরকমই আছি,শুধু মাঝখানের সময়টা বদলে গেছে।
কত বছর হলো বলত? "
আমি কিছুটা শুকনো গলায় ওকে জিজ্ঞাস করলাম।
ও একটু পেছনে ফিরে গিয়ে বলল,"Its about six years. তাই না? লাষ্ট তোর সাথে কথা হয়েছে এডমিশনের পর।তারপর তো তুই হাওয়া হয়ে ছিলি।তোর আগের নাম্বার বন্ধ। কত ট্রাই করেছি!
কিন্তু গত ছয় মাস ধরে তোকে ফেসবুকে পেয়েছি। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিলাম,কিন্তু তুই তো এখনো আমাকে ঝুলায়ে রাখছিস! তোর ফেসবুকে দেয়া নাম্বারে কম করে হলেও দিনে দু বার ট্রাই করি।কিন্তু ওই যে, তুই হাওয়া হয়ে আছিস! তোকে মেসেজ করলেও কোন রিপ্লাই দিস না।ইচ্ছা করে ... । "
আমি বললাম, "কি ইচ্ছা করে? থাপড়াইয়া দাঁত খুলে ফেলার? "
ও বলল,"হু।তুই তো জানিস,আমি কারাতে ব্লাক বেল্ট। সো, তোর দাঁত খুলতে খুব বেশি পরিশ্রম হবে না!  হা হা হা। "
ওর কথা শুনে আমি না হেসে পারলাম না।
সেই সাথে সাত বছর আগে ওর অনুপ্রেরণায়য় কারাত শিখতে যাওয়ার দিনগুলি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। আমি দু একটা কাতা শিখে মাঝ পথেই ছেড়ে দিয়েছিলাম। তখন ওত পরিশ্রম সহ্য হয়নি।কিন্তু ও ধরে ছিলো  । মাঝে মাঝে কোন ছেলে কে কারাত ক্লাসে কিভাবে কাত করেছে সেসব বলে বলে আমাকে ঝারি মারতো,হাসাহাসি করতাম  ।
হা হা হা।সেই বাঘিনী কন্যাই কিনা আবার আত্মহত্যার মত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো দু দুইবার । শেষ বার ও এতটাই হতাশ আর জীবন বিতৃষ্ণায় ভুগতো যে,ওকে ফেরানো ছিলো মৃতকে প্রাণ ফিরিয়ে দেয়া ।
সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সেবার সে জীবন যুদ্ধে আরেকবার লড়াই করার শক্তি পেয়েছিলো । আমি শুধু ওর কষ্ট গুলো ভাগ করে নেয়ার দায়িত্ব পালন করেছিলাম।
আর সেদিন থেকে একটা কথা আমি বুঝেছি,"কেউ যখন অত্যধিক হতাশাগ্রস্থ আর আত্মহত্যা প্রবন হয়ে উঠে তখন তার কষ্ট গুলো সে কাউকে শেয়ার করতে চায়।চায়,কেউ তার কথাগুলো শুনুক।কেউ তার পাশে এসে দাঁড়াক।মাথায় হাত বুলিয়ে বলুক,সব ঠিক হয়ে যাবে।আমি তো আছি।"
মুলত,কষ্ট গুলো যখন বুকের মধ্যে চাপা পরে থাকে, তখনই আত্মহত্যার মত দূর্ভাবনা মাথায় আসে।কিন্তু যখন কেউ তার কষ্ট গুলো কাউকে শেয়ার করতে পারে,কেউ যখন তার চাপা কষ্ট গুলো মনযোগ দিয়ে শোনে তখন হতাশাগ্রস্থ ব্যক্তির কষ্ট গুলো হালকা হয়ে যায়।।জীবন সংগ্রামে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস পায়। ঘুরে দাঁড়ায়।
টিনার বেলাতেও তাই হয়েছিলো। ও নিজেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে, স্বইচ্ছায়।
আমার দাঁত ভেঙে নেয়ার খুব একটা ইচ্ছে নেই।ওকে বললাম, "নে বাবা,আমারই ঘাট হয়েছে।দয়া করে মাফ কর।"
ও বলল,"তোকে সে জন্য মাফ করে দিলাম। কিন্তু ফেসবুকে যে উল্টা-পাল্টা লিখিস সেটার কি হবে,বল? "
"তুই হঠাৎ করে এতটা হতাশ হলি কিভাবে? প্রোবলেমটা কি? "
আমি একে একে গত ছয় বছরকে হাইলাইট করলাম । জীবনের এ বেলায় এসে আমার উপলব্ধি কি, তাও ওকে বুঝিয়ে বললাম । আর ও নিজেও কয়েকদিনের স্ট্যাটাস গুলো থেকে বেশ বুঝতে পেরেছে, আমি কি ভাবছি আর কি চাই।
অনেকক্ষণ ধরে কথা বলার পর ওর শেষ কথা হলো,
"যদি পারিস তবে আজ থেকে ছয়/সাত বছর পেছনে চলে যাস।আর টিনার জীবনের মোড় ঘুরানোর স্মৃতি গুলো একবার খুঁজে দেখিস।যদি না পারিস তবে, একটা কথা মনে রাখিস,"জীবনটা মোকাবেলা করার জন্য, ভয়ে চুপসে থাকার জন্য নয়।"
  • ৩:৪৭:০০ PM
এ পথে আমার আগে বহুজন হেটেছে,পদচিহ্ন এঁকেছে আমাদের পথ দেখাতে। এবং আমিও শেষ নই, আমার পরেও অনেকেই এ পথে যাবে।
কিন্তু, এ পথে হাটতে গিয়ে কে কতটা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এগিয়ে যেতে পেরেছে তাই দেখা হবে এক সময়। হয়তবা বারবার হোচট খেয়েও আমাদের মত আরো অনেকেই এগিয়ে যাবে চূড়ান্ত সীমানা ছোয়ার তীব্র আকাঙ্খায়। কিংবা অনেকেই পিছু হটবে যেভাবে হটেছে এর আগেও অনেকে।শুধু আফসোস, যারা পিছু হটেছিলো তাদের শুরুটা হয়েছিলো প্রচন্ড জোশ আর আত্ম অহংকারে।
কিন্তু যারা পথের ধুলো-কাদা মেখে একাকার হয়ে বারবার হোচট খেয়েও ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো, তারাই আজ পথের সীমানায় জয়মালা পড়েছে। অভ্যর্থিত হয়েছে জীবনের কাছে।
বড় সাধ হয়,  তাদের পদধূলি ললাটে মেখে যেন একদিন আমিও দাঁড়াতে পারি এক কাতারে। কিন্তু,এখনো যেতে হবে অনেক দূর। অনেকটা পথ বাকি যে এখনো!
  • ৩:৪৫:০০ PM
দু'চোখ ভরা অভিমান নিয়ে ও প্রায়ই বলে,"তুমি আমাকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাও না। "
"বল তো,আমাকে নিয়ে তুমি কোথাও বেড়াতে গেছো? "
তারপর
ওর অভিমানী চোখের পাতায় না পাওয়ার শিশিরেরা ভর করে । আমি একটু ভেবে দেখি,সত্যিই তো, ওকে নিয়ে কোথাও সেভাবে ঘোরা হয়নি!আমাদের সীমাবদ্ধ ঘোরা ফেরা শুধু সাত মাথা থেকে খোকন পার্ক আর বড়জোর বিসিএল কিংবা কোয়ালিটিরর ফাস্ট ফুড শপ।তার বাইরে তেমন কোথাও যাওয়া হয়নি।এমনকি এক দেড় ঘন্টার বেশি বাহিরে যে ওকে সময় দিতে পেরেছি তাও না! বরং যা দিতে পেরেছি তা হল, অনাগত ভবিষ্যৎ জীবনে দু'জন সারা দেশ ঘুরে বেড়াবো সেই অনিশ্চিত প্রতিশ্রুতি।
তবে কি এ অভিমান যথার্থ নয়? হ্যা,,অবশ্যই তার এ অভিমান করা অমূলক নয়।অমূলক নয় অভিমানের বাহিরে এসে সম্পর্ক কে সেখানেই ইতি টানা।
কিন্তু না,সে সামান্য অভিমান করেছে বটে আবার পরক্ষণেই সে অভিমান ভুলে কখন যে দীর্ঘ ঘর সংসার করা গৃহিণীদের মত বড় মানুষ হয়ে গেছে ও নিজেও বুঝত না।
আমি ওকে বলি,"তো চল যাই,কোথাও থেকে ঘুরে আসি।"
ও তখন বড় মানুষের মত বলে,"আগে তোমার চাকরী বাকরি কিছু একটা হোক।তারপর সব সুদে আসলে উশুল করবো। কিন্তু এখন না। "
কথা বলতে বলতে ওর চোখ মুখ চকচক করে উঠত ভবিষ্তের দিকে তাকিয়ে।মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে কাঁধের উপর হেলান দিয়ে আস্তে আস্তে বলত,"আই লাভ ইউ সো মাচ সোনা।উই হ্যাভ আদারস টাইম টু গো।"
আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবি,"যেন সে সময় আসার আগে বিধাতা আমাকে তুলে না নিয়ে যান। তা না হলে মৃত্যুর পরেও এই অপ্রাপ্তির ভার আমায় বয়ে বেড়াতে হবে।"
এভাবে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরে বলি,আই লাভ ইউ টু।ইয়া,উই হ্যাভ আদারস টাইম টু গো।বাট উই উইল নেভার গেট দিজ মোমেন্ট ব্যাক।"
কিছুটা কষ্ট বুকের মধ্যে বাসা বাঁধতে চায়। কিন্তু ওর টোল পড়া গালের মিষ্টি হাসি আর আমার বর্তমান পরিস্থিতি বুঝে ওর এমন বড় মানুষের মত কথা শুনে সব ভুলে যাই।একে একে গত প্রায় এক বছরের সুন্দর মুহুর্ত গুলো চোখের তারায় এসে ভীর জমায়। সেই সব স্বপ্ন দেখার আর স্বপ্ন দেখানোর দিনগুলো।
ও আমাকে এতটা ভালোবাসে,এতটা কেয়ার করে,মাত্র উনিশের কোঠায় সে যখন হঠাৎ অনেক বড় হয়ে যায় তখন
নিজেকে খুব লাকি মনে হয়। মনে হয়,আমার চেয়ে পৃথিবীতে খুব কম মানুষই আছে যারা এতটা সৌভাগ্যবান হয়,এতটা ভালো কাউকে জীবন চলার সঙ্গী হিসেবে পায়।।
সত্যি কথা বলতে কি জানেন,
জীবনের ছোট ছোট সুখের মুহুর্ত গুলো আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃসময় কেও ভুলিয়ে রাখতে পারে। ছোট ছোট অভিমান ভরা মুহুর্ত গুলো আপনার বন্ধুর পথচলায় আনন্দ এনে দেয়।আপনি তখন অনায়াসে দুঃস্বপ্নের এভারেস্ট জয় করতে পারেন সহজেই।পারেন নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেতে।
আপনার প্রিয় মানুষটির প্রতিটি মুহুর্ত কে বুঝার চেষ্টা করুন।তার ভালোলাগা, মন্দ লাগাকে যথার্থ মূল্যায়ন করুন।প্রচন্ড খারাপ লাগার মুহুর্ত গুলোতে একটু পেছন ফিরে তাকান,প্রিয় মানুষের সাথে কাটানো প্রিয় মুহুর্ত গুলো স্মরণ করুন, দেখবেন কত সহজেই সেই খারাপ লাগা ভালোলাগায় বদলে গেছে।
সম্পর্কের মাঝে রাগ-অভিমান, সুখ দুখ,হাসি-কান্না খুব পাশাপাশি। এগুলো কে এড়িয়ে যেতে কেউ পারে না।কিন্তু একটু চেষ্টা করলে নেতিবাচক বিষয়গুলোকে অবশ্যই কমিয়ে আনা সম্ভব। প্রিয় মানুষটি যখন আপনার উপর প্রচন্ড অভিমান করেছে,যখন আপনার কোন ভুলে সে কষ্ট পাচ্ছে তখন অবলীলায় তাকে "সরি" বলুন। নিজের ভুলের জন্য তার কাছে মন থেকে ক্ষমা চান।অভিমান ভাঙান।
আমার মতে,সম্পর্কের মাঝে রাগ-অভিমানকে জিইয়ে রাখা কখনোই উচিত নয়। অনেক সময় আপনি যেটাকে ভাবছেন কিছুই নয়,সেটাও অন্য কারো কাছে অনেক বড় কিছু হতে পারে। তাই যত দ্রুত নিজেদের মধ্যে মিউচুয়াল হওয়া যায় ততই মঙ্গল। ততই সম্পর্ক টা দীর্ঘস্থায়ী ও সুদৃঢ় হয়।
আপনি বিশ্বাস করবেন কি না জানি না,কিন্তু আমার আর ওর মাঝে প্রতিদিন ঠুক ঠাক লেগেই থাকে।কখনো কখনো আমি ইচ্ছে করেই লাগাই আবার কখনো ভুল বুঝাবুঝিতে লাগে।কিন্তু তা সত্বেও ও কখনোই আধা ঘন্টার বেশি রাগ করে থাকেনি।এমনকি আমিও না।তবে মাঝে মাঝে আমি একটু বেশি রাগ করেছি হয়ত,একটু বেশি সময় ধরে ওকে ফোন দিচ্ছি না,কথা বলছি না কিংবা ফোন ধরছি না, তখন ও পাগলের মত আমাকে ফোন দেবে।ফোন ধরলে ধরা গলায় যখন বলে,"আই য়াম সরি।ভুল হয়ে গেছে আমার।"কিংবা "সরি জান আই লাভ ইউ।"
তখন রাগ তো দূরের কথা, আমি যে কেন রাগ করেছিলাম সেটাও আর মনে করতে পারিনা।
আচ্ছা,এটা কে কি তবে ভালোবাসা বলে? হ্যা,এটাই ভালোবাসা।আর সম্পর্কের মাঝে দুঃখ গুলো, রাগ অভিমানের কারন গুলো ভুলে যাওয়াই উত্তম।ভুলে যাই,ভুলে যায়,আপনিও ভুলে যান।
দেখবেন কত সহজেই সবকিছু সুন্দর হয়ে গেছে।পৃথিবীটাকে কত প্রেমময় কাব্যিক মনে হচ্ছে।
বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা বেড়ে গেছে শতভাগ ।
আমি নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করি ওকে পেয়ে।কারন ওই আমাকে শিখিয়েছে, কিভাবে ভালোবাসতে হয়। কিভাবে বাঁচতে হয়।সুন্দর পৃথিবীটাকে কিভাবে নিজের করে নিতে হয়!
তোমাকে অনেক ভালবাসি আমি,যতটা ভালোবাসা যায়।
  • ৩:৪৫:০০ PM
কয়েকটা কষ্ট ও তার অনুভূতি
#এক
যখন আপনি চাচ্ছেন কেউ আপনাকে নিজে থেকে বুঝুক কিন্তু সে বুঝছে না, কিংবা আপনার মনের কথাটা তাকে আকার-ঈঙ্গিতে বুঝাতে চাচ্ছেন কিন্তু সে বুঝতেই চাচ্ছে না তখন যে অনুভূতি টা আপনার হৃদয়ে অনুভব করবেন তা হলো কষ্ট । একটু খেয়াল করলেই বুঝবেন, আপনার হৃৎকম্পন হঠাৎই শীথিল হয়ে গেছে, জামাট কষ্টে বুকের ভেতর টা হাহাকার করছে,বুকটা চিনচিন করছে।কিন্তু সেই অনুভূতির, সেই ব্যাথা ব্যাখ্যা করার শব্দ আপনি খুঁজে পাচ্ছেন না।
#দুই
কারো জন্য আপনি পাগলপ্রায়।তার সাথে দেখা না হলে, এক-দেড় ঘন্টা কথা না হলে চারপাশের সব কিছু অর্থহীন মনে হয়,কিন্তু সে যদি আপনি ফোন না করলে ফোন না করে, তবে এক সুক্ষ্ম হতাশা আপনার মনের উঠোনে বেদনার বীজ বুনে(বোপন) দেবে।
হয়ত কোনদিন ব্যস্ততা বশত এরকম হতে পারে কিন্তু প্রতিদিন নিশ্চয়ই নয়।আর যখন প্রতিদিন এরকম হবে সেদিন বুঝবেন He/She wasn't your's but unfortunately only you were..
#তিন
আমার চোখে দেখা দু একজন বন্ধু আছে।যারা তাদেরকে নিশ্চিত চালাক চতুর আর জ্ঞানী ভাবে।এখানে ভাবনাটা দোষের কিছু না কিন্তু সেই মত কাজ করতে গিয়ে অন্যের কাছে নিজেকে ছোট করাটা দোষের।
নিজে যত বোকা থাকবেন ততই ভালো।বোকার কোন শত্রু থাকে না। কিন্তু নিজেকে চালাক জাহির করতে গিয়ে অন্য কোন বাটপারের ক্ষপ্পরে পরে ইউজড হবার কোন মানে হয়না।
এই ধরুন,
আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। যিনি অত্যধিক চালাক চতুর হিসেবে নিজেকে মনে করে।চলাফেরা করে তার চেয়ে বড় চালিকের(চালাকের স্ত্রী লিঙ্গ ধরে নেন) সাথে। সম্পর্ক বন্ধুত্বের কিন্তু ইউজড হয় ভৃত্যের মত।
উদাহরণ সরূপঃ চালিকের পিরিয়ড কালীন তেনা থেকে সব কিছু যেন চতুরের দ্বারাই ক্রীত হয়।
তো একদিন ওকে বললাম,"শোন,তুই অন্তত কিছুদিন এসব করতে অস্বীকার কর।তারপর দেখবো তোর বন্ধুত্ব কত শক্ত! "
আমি শিওর,
যে আপনাকে তার নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে,যার জন্য আপনি এত শত ত্যাগ স্বীকার করছেন সে কিন্তু তার নিজের স্বার্থের বিপরীতে আপনাকে এতটুকু পাত্তা দেয় না।
নিজের স্বার্থে একটু আঘাত লাগলে যে কেটে পরে সে কোনদিন আপনার বন্ধু ছিলো না।
তখন বিগত দিনগুলোর কথা মনে হয়ে যে কষ্ট পাবেন তা হবে ক্ষোভ। সে ক্ষোভ উদয় হয়ে আবার নিভে যাবে কিন্তু পোড়া জায়গাটা জ্বলতে থাকবে আপনি কাউকে দেখাতে পারবেন না।
#চার
নিজের সবচেয়ে কাছের বন্ধু যদি একজন থাকে তবে তিনি আপনার "মা"। আর যদি দুই জন থাকে তবে আপনার "বাবা"।
পৃথিবীতে একমাত্র স্বার্থহীন/নিঃস্বার্থ  ভাবে এই দুটো সম্পর্কই আপনার সবসময় পাশে থাকবে । বাকি সবাই স্বার্থে টান লাগলে লেজ গুটয়ে পালাবে।কিন্তু সন্তান কখনো তার বাবা-মা'র জন্য নিঃস্বার্থ হতে পারে বলে মনে হয় না।
এর প্রমাণ লাগলে একটা বিয়ে করে ফেলুন। বিয়ের পর স্ত্রী যখন সেপারেট বাসা ছাড়া থাকবেই না তখন বুঝতে পারবেন আপনি আপনার বাবা-মা'র জন্য কতটা নিঃস্বার্থ ভাবে দিতে পারেন!
আর যদি কপাল ভালো হয়,তবে হয়ত একটা নিঃস্বার্থ বৌ পেতে পারেন।আর শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই আপনি হবেন সুখী। কিন্তু যদি বিপরীত হয় তবে??
জৈবিক চাহিদার একটা সম্পর্ক আপনাকে বুকের মধ্যে নাড়ীর টান অনুভব করতে দেবে না। কিংবা আপনি অনুভব করলেও তাতে সারা দেবার শক্তি জৈবিক প্রনালীতেই আটকে থাকবে  । আপনি বের হতে পারবেন না।
তখন যে ব্যাথা অনুভব করবেন তা হলো বিষ মুখে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে গিলে ফেলে বাঁচতে চাওয়ার আকুতির মত। মৃত্যু নিশ্চিত কিন্তু বাঁচা???
- অনিশ্চিত
#নীলকান্ত
  • ৩:৪৫:০০ PM
যখন হতাশা আমাকে ঘিরে ধরে তখন স্বপ্ন আমাকে  বাঁচাতে শেখায়।
প্রথমত, যে কোন কারনেই হোক মাঝে মাঝে ভীষন মেজাজ খারাপ হয়।
যেমনঃএই মুহুর্তে আমার মেজাজ খুব খারাপ। আর মেজাজ খারাপ থেকে আসে হতাশা,অভিমান, জীবনের প্রতি মায়াহীনতা।
২য়ত, মেজাজ খারাপ থাকলে আমার কষ্ট লাগে।যেহেতু কষ্ট টা মস্তিস্ক নিয়ন্ত্রিত তাই মাথা ব্যাথা শুরু হয়।
তৃতীয়ত, হার্ট অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে। যেমনঃ বুকটা চাপ ধরে থাকে,মনে হয় শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘ নিশ্বাস নিলে তবে একটু ভালো লাগে কিন্তু অস্থিরতা বেড়ে যায়।
গলা ছেড়ে চেঁচাতে ইচ্ছে করে কিন্তু পারিনা।
৩য়ত, এরকম পরিস্থিতি তে নিজেকে অন্যরকম অসাহায় লাগে। মনে হয় কারো আদর ভালোবাসা মাখা দু'টো কথা হয়ত আমার সবকিছু ভালো করে দিতে পারে।কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তা পাওয়া তো দূরে থাক বরং ......।
#৪র্থত
তখন আমি নিজেকে একা করে রাখি। ইচ্ছে হয় কেউ খোঁজ নিক,কেউ বলুক,আমি পাশে আছি।কিন্তু সেরকম কিছুই হয় না। ঘরটা অন্ধকার করে রাখি, যেন কেউ আমার কষ্ট টা বুঝতে না পারে।তারপর আঁধারের বুকে স্বপ্ন আঁকি সফেদ রঙের আচড়ে লাল নীল স্বপ্ন।।কিন্তু সে স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়!
এর মধ্যে মেজাজটা কিছুটা ডাইভার্টেড হয় কল্পনার জগতে।এখানে চাইলেই সব পাওয়া যায়,সব করা যায়। হওয়া যায় কুখ্যাত কিংবা বিখ্যাত। সব চাই,সবই পাই
তারপর ধীরে ধীরে হারিয়ে যাই নিদ্রাজগতের ফাস্ট ফোরওয়ার্ড মুডে।
ব্যস,যখন ঘুম ভাঙে তখন ভুলে যাই বিগত কিছু সময় আগের সব কিছু।অভিমানে সিলিং এ ঝুলানো পাটের দড়ি,গামছা কিংবা হাতে ধরে রাখা হেমলকের পেয়ালা  সব কিছু।
ফিরে পাই নতুন উদ্যম।বেঁচে থাকার নতুন মানে।
বুঝি,
এভাবেই বাঁচতে হয়।নিজেকে বাঁচাতে হয়। জাগাতে হয়।জাগতে হয়।
  • ৩:৪২:০০ PM
It was better than the good.
(Its how i have spent my last 72 hours.)
#৮ তারিখ,
সারা রাত ইউ টিউবে ইংলিশ মুভি।
#৯ তারিখ,
সাকাল ১০ টায় ঘুম থেকে উঠলাম। তারপর গোসল & ব্রেকফাস্ট ১১:৩০।
#১২ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত পারসোনাল অফিস ট্যুর উইথ মাই পারসোনাল সেক্রেটারি।
#৬:৩০ থেকে ক্লান্ত শরীর শ্রান্ত মনে এক ঘুমে রাত ১০:৩০ টা।
দ্যান আ সিম্পল ডিনার & দ্যান ফেসবুকিং ভোর ছয়টা পর্যন্ত।
#১০ তারিখ,
সোয়া ছয়টায় ঘুমিয়ে উঠলাম ১১ টা নাগাদ।তারপর...
দেড় ঘন্টার ছোট্ট একটা সী অফ ট্যুর।বাসায় এসে গোসল,লাঞ্চ ইত্যাদি ইত্যাদি দুপুর তিনটে।
#তখনই মনে হলো,ওহ হো! বাসা ভাড়ার টাকা তো গোছানো হলো না। (টাকা আগেই খেয়ে শেষ করে ফেলেছি।)
কয়েক জায়গায় ফোন দিলাম, অবশেষে আপন পিতার নিকট অন্যকে দিয়ে টাকা ধার করা।
#টাকা উঠাতে যাবো,সেই মুহুর্তে আমার সাবেক বাড়িওয়ালারর ফোন। উনার এক মেয়ে থাকেন আমেরিকায়।টাকা পাঠাবে কিন্তু তিনি তার ছেলের একাউন্টে টাকা নিতে রাজি নয়।(ছেলেটা টোটালি ড্রাংকেন।)। তিনি আমার একাউন্ট নাম্বার চাইলেন।বৃদ্ধার কথায় না করতে পারলাম না।এদিকে আমার ক্রেডিট কার্ডের বিল এখনো বাকি। টাকা ইন হওয়ার সাথে সাথে হাজার খানেক টাকা নাই হয়ে যাবে।আমি তাকে বুঝিয়ে বললাম সব।তিনি কিছুই শুনবেন না।উনার মেয়ে আমাকে ফোন দিলেন। বাধ্য হয়ে আমার ব্যাংক একাউন্ট দিলাম।
#বিকেল ৩:২০ আমার একাউন্টে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ইন করলো। সংগে সংগে মেসেজে কনফার্ম হলাম।
#৩:৩০ - সাত মাথায় গিয়ে ব্যাংক থেকে দরকারি এমাউন্টের  টাকা তুলে, সেই সাথে আমার ধার করা টাকা তুলে সাবেক বাড়িওয়ালার বাসায়।
ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যে সাতটা বেজে গেলো ।
#আমার বর্তমান বাড়িওয়ালা কে টাকা পাঠিয়ে দিয়ে যখন চেয়ারে বসলাম তখন বুঝলাম, আমি খুব ক্লান্ত। অন্তত একটু ঘুম দরকার।এক ফ্রেন্ড কে বললাম রাত দশটা সাড়ে দশটা নাগাদ যেন ডেকে দেয়।
ঘুমিয়ে পড়লাম । সাড়ে দশটায় বন্ধু ডাক দেয়ার আগেই আমি ১০:২৩ এ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে, খেতে খেতে ১১ টা।
#যখন ভাবছি যে কালকে তো আমার খবর আছে,ঠিক তখনই আমার পারসোনাল ফোন। রিসিভ করে কথা বলতে বলতে ১১:২০।
#সাড়ে ১১ টায় যখন পড়তে বসলাম, তখন আমার হাতে আর মাত্র ৯ ঘন্টা সময় আছে এক্সাম হলে ঢোকার।
#এই নয় ঘন্টার মধ্যে বিরতি আছে,একটু ঘুম আছে, সকালের গোসল,প্রকৃতির ডাক, খাওয়া ইত্যাদি মিলিয়ে ৫ ঘন্টা মিনিমাম ।
#১১:৩০ থেকে সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত পড়লাম(এর মধ্যে প্রতি ২৫ মিনিট পর পর ৫মিনিট বিরতি। এবং দুইবার #১৫+১৫=৩০ মিনিট বিরতি ছিলো।)
রাত সাড়ে তিনটায় আর কোনভাব
চোখ আটকে রাখতে পারছি না।বাধ্য হয়ে বেডে এলাম। ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস আপডেট দিয়ে ঘুমতে গেলাম ৪ টায়। দুই ফ্রেন্ডের পড়ার টেবিলে দুইটা চিরকুট লিখে রাখলাম যেন ৬:৩০ এ ডাক দেয় তারা।
#সকাল ৬:২৮ ঘুম থেকে উঠলাম। ফ্রেশ হতে হতে ৭ টা।আধা ঘন্টা এদিক সেদিক পাতা উল্টয়ে বই গুলো সব টেবিলেকে পড়ার জন্য দিয়ে আমি গেলাম গোসল করতে।
এদিকে অল্প ঘুমে শরীর টা টালমাটাল অবস্থা।
#৮ টা নাগাদ যখন ঘর থেকে বের হয়ে পরীক্ষার হলে গেলাম,তখন ভেবে দেখে #গত ৭২ ঘন্টার মধ্যে আমি বই পড়েছি মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘন্টা। আর এটেন্ড করতে যাচ্ছি চার ঘন্টার এক্সামে!!
#পরীক্ষার হলে যখন কোশ্চেন পেপার হাতে পেলাম তখন মনে হচ্ছিলো সবই পারি আবার কিচ্ছু পারি না।
কিন্তু যখন লিখতে শুরু করলাম, তখন লিখেই যেন শেষ করতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত পারলামও না।কিন্তু যা লিখলাম #its better than the good.
মনে মনে উপরওয়ালা কে একটা থ্যাংকস দিয়ে বের হলাম।
প্রমথ চৌধুরী কে স্মরণে এনে ভাবলাম,
যাক অল্প কথায় যদি কাজ হয় তবে বেশি কথার দরকার কি??
১১/০৮

বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৫

  • ১:০৮:০০ AM
স্বপ্ন দেখাটা ছাড়তে পারিনি বলে খুব পস্তাতে হয়।সেই ছোট বেলা থেকে বড় বড় স্বপ্ন দেখে এসেছি। সেসব স্বপ্ন গুলো সে সময় এতই বাস্তব ছিলো যে,মনে হত যেন স্বপ্ন গুলোকে আমি ধরতে পারতাম,স্বপ্নের স্পর্শ অনুভব করতে পারতাম।কিন্তু সময়ের সাথে সাথে নিজের অবহেলা আর অনাদরে স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে লাগলো। আমি স্পষ্টতই স্বপ্নের এই হারিয়ে যাওয়াকে উপলব্ধি করতে পারছিলাম। কিন্তু কেন জানি তাকে ধরে রাখতে ইচ্ছে করেনি।
তারপর দিনের পর দিন চলে গেছে,বছরের পর বছর, যুগ পেরিয়ে আরেক যুগ এসেছে। আমার স্বপ্নের ভেলাও সময়ের সাথে সাথে দিক পরিবর্তন করতে থাকে।কিন্তু কেন জানি স্বপ্ন দেখা ফুরিয়ে যায়নি।
আমার আকাশ কুশুম স্বপ্ন দেখাকে বাবা বলতে,"কাঁচের স্বপ্ন।"
আমি বাবাকে কখনোই সাপোর্ট করিনি।বরং বলেছি,"উহু,It'll b true."
কিন্তু আজ বহু বছর পর,বহু পথ ঘাট ঘেটে জীবনের এমন এক লগ্নে উপনীত হয়েছি যে মনে হয়, বাবার কথাই ঠিক ছিলো । সত্যি আমার স্বপ্নগুলো ছিলো কাঁচের স্বপ্ন।
তবে এত শত ভাবনার ভেতরেও স্বপ্নরা বাসা বাঁধে।আবারো স্বপ্ন দেখি,অবাস্তব স্বপ্ন গুলোর বাস্তবায়নের।
কিন্তু কি জানি! স্বপ্ন গুলো বোধ হয় অনেক বেশিই স্বপ্ন ছিলো।
বাস্তবতার কষাঘাতে জর্জরিত জীবনে কল্পনাবিলাস মানায় না। এ কথাটি এতদিন পরে এসে বুঝলাম।
সেই সাথে ভুলের চক্রবৃদ্ধি সুদের হার সময়ের সাথে সাথে আজ আকাশ ছুঁয়েছে। যেখান থেকে মুলধন বাঁচিয়ে জীবন গড়া হয়েছে প্রায় দুঃসাধ্য। জীবনের দেউলিয়াত্বে আমি কেবলি এক পরীক্ষণের বস্তু ছিলাম কি? আজ কেন জানি এ প্রশ্নের ইতিবাচক জবাব মেলে।তবে কি এ পথ চলা থমকে যাবে সময়ের নিষ্ঠুর পরিহাসে?
কি জানি,আমি কেন জানি তাও মেনে নিতে পারছি না।
স্বপ্নগুলোর ভাঙাচোরা অংশ গুলো এবার জোড়া দিতে ইচ্ছে করছে খুব। আরেকবার পরিপূর্ণ এক স্বপ্ন দেখতে চাই।নিবিড় সান্নিধ্য চাই স্বপ্নের চরিত্রগুলোর,সুকোমল স্পর্শ একটি বারের জন্য উপলব্ধি করতে চাই বাস্তবে।
আমি কি পারবো?
অন্তত একটি বারের জন্য হলেও যে আমাকে পারতে হবে।
আমি যে এখনো নিঃশেষ হয়ে যাইনি।বেঁচে আছি।
#নীলকান্ত

সোমবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৫

  • ১২:৫৩:০০ PM
ভালোবাসার গানিতিক ভিত্তিঃ
"ভালোবাসা(Love) হল এমন একটা শব্দ যার মোট বর্ণ  সংখ্যা চার। এবং এর প্রথম বর্ন L,ইংরেজি বর্ণমালার ১৬ নাম্বার বর্ণ এবং তৃতীয় বর্ণ V, ২৪ নাম্বার বর্ণ। দু'টোই ৪ দ্বারা বিভাজ্য।দ্বিতীয় বর্ণ
O,  হল ১৯ নাম্বার বর্ণ এবং পঞ্চম বর্ণ  E হলো ইংরেজি বর্ণমালার ৫ নাম্বার বর্ণ, যাদের যোগফল আবার  ২৪। এবং এটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য।
এবং সকল বর্নের অবস্থানের ক্রমিক একসাথে যোগ করলে হয় ১৬+১৯+২৪+৫=৬৪,যা ৪ দ্বারা বিভাজ্য এবং ভাগফল হয় ১৬। এবং অবাক করার বিষয় হলো ১৬ এর বর্গমূলও কিন্তু চার (৪)।
অন্যদিকে, চারটি বর্ণ দ্বারা একটা শব্দ হয় LOVE, যা বাংলাতেও চারটি বর্ণ দ্বারা গঠিত (ভা২৪+লো২৮+বা২৩+সা৩১)।
"ভালোবাসা" শব্দের "ভ" বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণের ২৪ নাম্বার বর্ণ এবং "ল" হলো ২৮ নাম্বার বর্ণ। দু'টি বর্ণের অবস্থান গত ক্রমিক ৪ দ্বারা বিভাজ্য এবং ভাগফল যথাক্রমে ৬ এবং ৭  । এই দু'টি ভাগফলের যোগফল ৬+৭=১৩।
আবার ২৪+২৮= ৫২ । এই ৫২ কে ১৩ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল হয় ৪।
অবাক করা বিষয় যে "ভালোবাসা" শব্দের বাকি দু'টি বর্ণ "ব" এবং "স" বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণমালার যথাক্রমে  ২৩ এবং ৩১ নাম্বার বর্ণ। যাদের সমষ্টিও আবার ৫২ এবং তা ১৩ দ্বারা ভাগ করলে দ্বারায় (৫২/১৩=৪)।
অর্থ্যাৎ ভালোবাসার গানিতিক ভিত্তি হলো ৪ এবং ভালোবাসা এই ৪ সংখ্যার উপরই আবর্তিত হয়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, "ভালোবাসা" একটি গানিতিক যুক্তিতে প্রবাহমান। ভালোবাসার গানিতিক হিসেব যদি না মিলাতে পারেন তবে ভালোবাসা আপনার কাছে ধরা দেবে না কিংবা আপনি কখনোই তাকে ধরে রাখতে পারবেন না।
Now check it out.
গানিতিক বিশ্লেষনঃ
_নীলকান্ত®

শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫

  • ১:১৪:০০ PM
#১৫ আগষ্ট একটা রাজনৈতিক ট্র‍্যাজেডী। স্বাধীন বাংলাদেশের একটি কালো দিন।
-----------------------
দীর্ঘদিনের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ আহত পাখির মত বাঙালি জাতি যখন মুক্তির জন্য ছটফট করছিলো,কিন্তু মুক্ত আকাশ দেখার সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারেনি ঠিক তখনি একজন মহান নেতার আবির্ভাব হয়।তিনি শুধু বাঙালিকে আকাশ দেখাননি বরং সেই আকাশে কিভাবে উড়তে হয় তাও শিখিয়েছিলেন।তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, সম্মোহনী বক্তৃতা,নিগূঢ়  দেশপ্রেম বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে করেছিলো উদ্ভাসিত । দু'শ বছরের বৃটিশ শৃঙ্খল ভেঙে যে জাতি মুক্তির স্বাদ পেতে চেয়েছে  পাকিস্থানের প্রতারণার শিকার হয়ে তারাই পুনরায় হয়েছিলো শৃঙ্খলে আবদ্ধ। কিন্তু বীর বাঙালির জন্মগত স্বাধীনতার অধিকার শোসন,নির্যাতন আর নিপীড়ন করে যে আটকে রাখা যায় না,তা বোধহয় ভুলে গিয়েছিলো পাকিস্তানি হানাদার রা।আর তাই পিছু হটতে হটতে দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে গিয়েছিলো তখন ঠিকই রুখে দাড়িয়েছে তারা। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে ছিনিয়ে এনেছে একটা  লাল সবুজের পতাকা,ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের একটা স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখন্ড,বাংলাদেশ।
কিন্তু এই সব কিছুর পেছনে যিনি ছিলেন,যিনি শৃঙ্খলাবদ্ধ বাঙালিকে মুক্ত আকাশ দেখিয়েছিলেন,ডানা মেলে উড়তে শিখিয়েছিলেন মুক্ত আকাশে তিনি আর কেউ নন,তিনি বাঙলার আপামর জনসাধারণের নেতা,বাঙালি জাতির পিতা,খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের "শেখ সাহেব" বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।
"শেখ" শব্দের অর্থ নেতা বা দলপতি।সত্যিই তিনি ছিলেন বাঙলি জাতির নেতা,দলপতি। তিনি তার নামের যে সুবিচার করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।তাই বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, যতদিন একজন বাঙালিও পৃথিবীতে থাকবেন ততদিন তিনি ইতিহাসের পাতায় চির অম্লান হয়ে রবেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম পরিচয় কিংবা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তার অবদান কতটা তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সে বিষয়ে ইতিহাসই চিরন্তন স্বাক্ষী হিসেবে রয়ে গেছে।তবে ঐতিহাসিক আলোচনা-সমালোচনার উর্দ্ধে রেখে তাকে মূল্যায়ন করাই শ্রেয়। তার অনবদ্য অবদান,দেশপ্রেম তাকে চিরস্মরণীয় বরণীয় করে রেখেছে এবং রাখবে।
কিন্তু ১৯৭৫ সালের আজকের এই দিনে এই মহান নেতাকে স্বপরিবারে হত্যা করে যে ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিলো তা বাঙালি জাতির জন্য একটা লজ্জাজনক ঘটনা।আমরা কেউই এই দায় থেকে মুক্তি পেতে পারিনা। আমাদের ব্যর্থতা যে,আমরা এমন এক নিবেদিত প্রাণকে ধরে রাখতে পারিনি।আমরা তাকে হারিয়েছি আমাদেরই কিছু বিপথগামী এবং বাঙলার স্বাধীনতার দোসরদের মদদে।কিন্তু তার বিচার আজো আমরা করতে পারিনি এটা আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।
হয়ত,অনেকেই আছেন যারা আজো এই নিকৃষ্ট ঘটনার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলবেন,"এটা সে সময় জরুরী ছিলো। কেউ কেউ বাকশাল গঠন কিংবা তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবেলায় শেখ মুজিবের ব্যর্থতাকে দায় করবেন। কিন্তু তাদের অন্তত এটা মাথায় রাখা উচিত যে,যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা দেশে মাত্র তিন বছরের মধ্যে কোন ভাবেই সম্পুর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
আর সম্ভব নয় এই কারনেই যে,শান্তি স্থাপনের জন্য যেসব নিয়ামক অপরিহার্য তা সেই সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন কিংবা পুনস্থাপন করা কখনোই সম্ভব নয়। এমনকি বর্তমান উন্নত প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক সীমা যখন হাতের নাগালে তখনো সম্ভব হচ্ছে না।আর তা বর্তমান লিবিয়া,সুদান,আফগানিস্তান কিংবা অন্যান্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত রাষ্ট্র গুলোর দিকে তাকালে সহজেই প্রমাণ করা যায়।
সেদিক থেকে ১৯৭২-১৯৭৫, ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত শেখ মুজিবর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ কে যতটুকু এগিয়ে নিয়েছিলেন তা কল্পনাতীত। তিনি তার এক বক্তব্যে নিজের স্বল্প সময়ের সফলতা ও বিফলতা অকপটে স্বীকার করেছেন। সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশের জন্য সংবিধান প্রনয়ন,আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়,যুদ্ধকালীন সময়ে দেশের ভঙ্গুর অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অবস্থাকে স্থিতিশীলকরন থেকে শুরু করে বহু উন্নয়ন কর্মকান্ড হাতে নেন এবং অনেক ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেন যা আজকের যুগেও অনেক রাষ্ট্র প্রধান করতে পারছে না।এত সব কিছুর পরেও দেশের তৎকালীন পরিবেশের জন্য তাকে এককভাবে দায়ী করা কোনভাবেই সমিচীন বলে আমি মনে করিনা।
তিনি যেসব কার্যাবলি হাতে নিয়েছিলেন বা যেভাবে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তা ওই সময়ের প্রেক্ষিতে যথাপোযুক্তই ছিলো।হাজার বছরেএ অগনতান্ত্রিকতায় অভ্যস্ত বাঙালি রক্ত মাত্র কয়েক বছরে গনতান্ত্রিক ভাবে প্রবাহিত হবে তা আসলে আবেগীয় ভ্রম ছাড়া আর কিছুই ছিলো না।এবং সে প্রমাণও আমরা নব্বই এর আগ পর্যন্ত পেয়েছি । এমনকি নব্বই এর পরেও বিভিন্ন দল ও উপদলের রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারীতা ও স্বৈরাতান্ত্রিক মনোভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এবং এটাই সত্যি যে,সেই একনায়কতান্ত্রিক প্রথাকে সাধারন  বাঙালি জাতি যত সহজে আপন করতে পেরেছে তা পক্ষপাতদুষ্ট গনতন্ত্রকে করতে পারেনি।এবং নানা ভাবে এটাও প্রমাণ হয়েছে যে,আবেগপ্রবণ বাঙালি অস্থির চিত্তের এক নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী । আর তাদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখতে হলে কঠোরতার বিকল্প নেই।
কিন্তু এত সব প্রমানিত সত্যকে অস্বীকার করে যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকে "Right act at right time" বলে আখ্যায়িত করেছে তাদেরকে স্বাধীনতার শত্রু বলতে আমি দ্বিধাবোধ করবো না।এমনকি তারা বর্তমান রাজনীতির আড়ালে যেভাবে ইতিহাস বিকৃতির ইন্ধদাতা হিসেবে নোংরা কুটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে তারা প্রকৃত পক্ষে দেশপ্রেমিক নন।বরং পরোক্ষভাবে বাংলার স্বাধীনতা ও স্বাধিন বাংলাদেশের আদর্শ বিচ্যুত এক দল কীট।
যাই হোক,দেশের উন্নয়নের পথে শেখ মুজিবের নির্মম,হৃদয়বিদারক হত্যা কান্ডের পর দু একজন এমন শাসক এসেছেন যারা প্রকৃত দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ ছিলেন।তারাও দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছেন অনেকটা পথ।তাদের অবদানকে অস্বীকার করারও উপায় নেই।
কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হলেও সত্যি যে,বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতি বিদরা যেভাবে এক জন অন্য জনের বিরুদ্ধে কাদা ছুড়াছুড়িতে ব্যস্ত এবং যেভাবে দেশের মহান নেতাদের অবদানকে ভূলুণ্ঠিত করছেন তাতে আমাদের ইতিহাস এবং ঐতিহাসিক গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ কে ছোট করা হচ্ছে।
#তারপরেও আমরা আশাবাদী যে,একদিন আমাদের রাজনীতিজ্ঞরা তাদের ভুল বুঝতে পারবেন।এবং মহান নেতাদের প্রাপ্য সন্মান-মর্যদা অক্ষুণ্ণ রেখে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবেন।
সর্বোপরি আজ ১৫ আগষ্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের ৪০ তম শাহাদত বার্ষিকী তে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি । এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।
#লেখকঃ
সরকার হারুন অর রশিদ
সিইও,SAVA BD

বুধবার, ১৭ জুন, ২০১৫

  • ১:০১:০০ PM
haunted palace photo
Haunted House: Photo collected 

মতি চোরা ও ডাইনির গল্পঃ

অনেক দিন আগের কথা। কাঞ্চিপুরের শেষ সীমানায় থাকতো মতি চোরা।তার নাম ডাক আর চুরির গল্প সাত গাঁয়ের মধ্যে  সবসময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরতো। কিন্তু কেউই কোনদিন তাকে দেখে নি।সবাই এর ওর কাছে গল্প শুনেছে মাত্র, কিংবা কোন ভাবে যারা ভুক্তভোগী , শুধু তারাই জানে মতি চোরা কি!
হয়ত ভাবছেন,কেউ যখন মতি চোরাকে দেখেনি, তাহলে সেই যে চুরি  করেছে তা নিশ্চিত হলো কিভাবে, তাই না?
হা হা হা।  এই মতি চোরা ছিলো আর বাকি দশটা চোরের চেয়ে একদম আলাদা। ইদানীং আপনারা যে ধুম-২ হিন্দি সিনেমা দেখেন, সেই সিনেমায় হৃত্তিক যেমন চিহ্ন রেখে যেত, তেমনি মতি চোরারও একটা বিশেষ চিহ্ন ছিলো। সে যে বাড়িতে চুড়ি করত, সে বাড়ির দেয়ালে কিংবা অন্য কোন জায়গায় "মতিগতি" কথাটা লিখে রাখতো।তাতে অবশ্য বুঝা যায়,মতি চোরা ছিলো শিক্ষিত এক চোর। আর তার চুরির শিকার হত গ্রামের বড় বড় সম্পদশালী লোকগুলাই।
মতি চোরা নিজের চুরির দক্ষতা নিয়ে মনে মনে বেশ গর্ব বোধ করতো।আর তাই সে তার চুরির পর সরাসরি নিজের নাম লিখে দিয়ে আসতো সদর্পে!  অনেক পুলিশ,দাড়োয়ান,চৌকিদার দিয়েও তাকে ধরা যায় নি।আর ধরা যাবেই বা কি করে! তাকে যে কেউ কোনদিন দেখেই নি!!  আর এই চোরের বাড়ি কই? কখন চুরি করে? কিভাবে করে তা বলা খুব মুশকিল।
যাই হোক,
বেশ কয়েক বছরের তার নাম ডাক বেশ হয়েছে।সারা কাঞ্চিপুর, বৌভিটা,চুমিনগর আর ফতেহপুরের সকল লোক মতি চোরার চুরিতে অতিষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি তাকে ধরিয়ে দিতে কিংবা সন্ধান দিতে পারলে ২০০০০ টাকা নগদ পুরস্কার ঘোষনা করেছে কয়েক গ্রামের চেয়ারম্যানরা।কিন্তু কিছুতেই তাকে ধরা যায় না!! বরং মতি চোরার চুরির ঘটনা দিনদিন বেড়েই চলছে,বৈ কমছে না।
এভাবে মতি চোরার পোয়া বারো, আর এলাকা বাসীর সর্বনাশ। কিন্তু কথায় আছে, "চোরের দশ দিন আর গৃহেস্তের একদিন।"হলোও তাই।
তাহলে ঘটনা টা বলি,
তখন মাঘ মাস চলছে।চারিদিকে কুয়াশা আর ঘুটঘুটে অন্ধকার। মতি চোরা আজ বৌভিটার উত্তর সীমানায় ফেঞ্চুর বন নামে এক জঙ্গলে যাচ্ছে।ওখানে কয়েকদিন ধরে এক রাজাবাড়ির সন্ধ্যান পেয়েছে সে! রাজ বাড়ি ঠিক রাজবাড়ি না। আসলে সেটা দেখলে মনে হবে যেন বনের মধ্যে কেউ অবকাশ যাপনের জন্য সুন্দর একটা প্রাসাদ তৈরি করে রেখেছে।প্রথম প্রথম এই বাড়িটা দেখে সে অবাকই হয়েছিলো। এমন একটা বাড়ি জঙ্গলের মধ্যে আছে,তা সে ভাবতেই অবাক!
আর সেদিনই তার চোরা মন এই রাজপ্রাসাদ চুরি করার জন্য অস্থির হয়ে আছে।আর তাই প্রায় সাতদিন ধরে  সে এ বাড়ির উপর নজর রেখেছে।বাড়িতে খুব বেশি মানুষ যে থাকে না,তা এর নীরবতা দেখলেই বুঝা যায়।কিন্তু আশ্চার্য ভাবে প্রাসাদের সামনের বাগান,ঘর গুলো এমনকি মেইন গেট থেকে ভেতরে ঢোকার রাস্তা টাও ঝকঝক করছে।তার মানে লোকজন তো থাকেই এখানে। কিন্তু কেন জানি কোন সারা শব্দ পাওয়া যায় না।কোথাও কোন পিন পতনের শব্দও নাই।
শুধু রাত্রে বেলা ঝিঝিপোকা আর দূরে কোথাও হতে খেঁকশিয়ালের ডাক শোনা যায় মাঝে মাঝে।আজকেও শোনা যাচ্ছে।কিন্তু মতি চোরার কন্সেন্ট্রেশন এখন প্রাসাদের দিকে।গেটের বাইরের এক কড়ই গাছের উপর উঠে প্রাসাদের মানুষজনের গতিবিধি লক্ষ্য করছে।দোতালার টানা বারান্দা দিয়ে দুইটা হারিকেন হাতে দুজন মানুষ পুব দিক থেকে পশ্চিম দিকের একটা ঘরে ঢুকলো।তার কিছুক্ষন পর একজন বেড়িয়ে এসে নীচতলায় নেমে ঢুকলো প্রথম ঘরটায়।
কুয়াশা আর অন্ধকার হলেও এই কয়েক দিন ধরে প্রাসাদে নজর রাখায় এ সব কিছু সে সহজেই বুঝতে পারলো। কিন্তু সমস্যা হলো, এখনো মানুষ জেগে আছে।অতএব চুরি করার সময় এখনো আসেনি।আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।
গাছের ডালে বসে মশার সাথে অতি কষ্টে যুদ্ধ করে ঘন্টা দুই কেটে গেলো।ইতোমধ্যে যেসব ঘরে আলো জ্বলছিলো,তা নিভে গেছে।তাছাড়া কুয়াশাও বেড়ে গেছে।আর বাহিরে গাছের উপর বসে থাকতে থাকতে মতি চোরা ঠান্ডায় প্রায় জমে যাচ্ছিলো।কিন্তু যত যাই হোক,মতি চোরা সহজে হারবার পাত্র না।চুরি সে করবেই।
সে ধীরে ধীরে গাছ থেকে নীচে নেমে এলো।তারপর হামাগুড়ি দিয়ে প্রাচীরের প্রধান ফটকে আসতেই মাথার উপর দিয়ে সাৎ করে একটা কিছু উড়ে গেলো। আকষ্মিক একটু ভয় পেলেও ঠিক পাত্তা দিলো না। তার সকল মনযোগ এখন প্রাসাদের ভিতরে ঢোকার। চারপাশে একটু দেখে নিয়ে ধীরে ধীরে প্রাচীর সংলগ্ন একটা আমগাছের সাহায্যে প্রাচীর পার হলো। গেটের উপর দিয়েও পার হওয়া যেত,কিন্তু তার চেয়ে আম গাছটাই বেশি নিরাপদ মনে হলো তার কাছে। প্রাচীর পার হয়ে আবার হামাগুড়ি দিয়ে, কখনো বুকে ভর দিয়ে প্রাসাদের পূর্ব পাশের সিড়িটার কাছে চলে এসেছে সে।
এবার সে পেছনে ফিরে একটু তাকালো,তারপর যা দেখলো তাতে তার চোখ চড়কগাছে!!  মেইন গেট থেকে শুরু করে সারা বাগানের মধ্যে কোথাও কোথাও ক্ষীন আলো জ্বলছে।আর বেশ কয়েকজন পাইক-পেয়াদা তরবারি আর বল্লম হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।যেন ঠিক আগেকার দিনের রাজা-বাদশাহদের রাজ প্রাসাদে যেভাবে সৈন্য সামন্ত পাহারা দিত,ঠিক তেমনি ভাবে।
সে মনে মনে ভাবলো,কি ব্যাপার,এরা কোথা থেকে এলো ? দেয়াল পার হওয়ার সময়েও তো কেউ ছিলো না।এমনকি যখন সে বাগানের মধ্য দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে আসছিলো তখনো তো কাউকে দেখা গেলো না।তাহলে??
হঠাৎ করেই যেন সাহসী মতি চোর ভয়ে চুপসে গেলো।গা-মাথা বেশ ভারী ভারী হয়ে এলো।
যে আশা নিয়ে চুরি করতে এসেছিলো তা ভয়ের সাথে মিশে রাজপ্রাসাদের সিড়িটার কাছে ঠকঠক করে কাঁপছে।  কি করবে ঠিক মাথায় আসছে না।তারউপর শেয়াল গুলো আরো জোরে জোরে ডাকছে।মনে হচ্ছে খুব কাছে কোথাও।কিন্তু দেখা যাচ্ছে না।হঠাৎ করে একটা চাপা কান্নার আওয়াজ কানে এলো। কেউ যেন ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে।
কান্নার আওয়াজ শুনে তার ভয় কোথায় যেন হারিয়ে গেল।কিন্তু কান্নাটা কোথা থেকে আসছে তা দেখার কৌতুহলে সে দুই একবার এদিক সেদিক তাকালো। কিন্তু ঠিক বুঝে ঊঠতে পারলো না।।
  ।
একটু সাহস নিয়ে সে সিড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে এলো।হ্যা,আওয়াজ টা এবার স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। একটা মেয়েলী কান্না।কিন্তু কান্নার শব্দটা বেশ মায়াবী। ধীর পায়ে একটু একটু করে সামনে এগুচ্ছে সে।যতই সামনে এগুচ্ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে কান্নার আওয়াজ।
কিন্তু একি?
এবার মনে হচ্ছে, একটি না, দুটি কান্নার আওয়াজ।মতি চোরা একটু কানটা কনিষ্ঠ আঙুল দিয়ে চুলকে নিলো। নাহ, সে ঠিকই শুনেছে।দুইটা মেয়ে একসাথে কান্না করছে। একই ভাবে।
মতির গা ছমছম করে উঠলো। এবার সে দু'পা আগায় তো এক পা পিছায়।তারপর যে ঘর থেকে কান্নার শব্দ আসছে,সেই ঘরের সামনে চলে এলো।
ঘরের দরজাটা ভিরানো।দুই কপাটের মাঝের ফাক দিয়ে ভেতরটা বেশ দেখা যাচ্ছে। দু'জন বসে আছে। দুই জনই মেয়ে। দুজনের সামনে একটা হারিকেন জ্বলছে মিটি মিটি। আর হারিকেন কে সামনে রেখে আশ্চার্য সুরে কান্না করছে দু'জন।
মতি চোরা সাবধানে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে সব।হঠাৎ একটা মেয়ে উঠে দাড়ালো,তারপর একটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আবার নিজের আসনে বসল। এবার আরেকজনের হাতে বড় ছুরি হারিকেনের আলোতে ঝকঝক করে উঠলো। তারপর বাচ্চাটাকে মাঝখানে শুইয়ে দিয়ে ছুরি দিয়ে গলা কেটে ফেললো ঐ মহিলাটা।
এসব দেখে মতি চোরা ভয়ে জড়োসর হয়ে জোরে করে এক চিৎকার দিয়ে পেছন দিকে দৌড়াতে শুরু করলো। যখন প্রায় সিড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে তখন দেখা গেলো মাথাহীন একটা ধর উপরে উঠে আসছে।তাই দেখে মতি চোরার প্রান যায় যায় ভাব।
এদিকে পেছন দিক থেকে ওই ডাইনি মহিলা দু'জন  প্রায় কাছে এসে গেছে।
সামনে পেছনে কোথাও যাবার যায়গা নেই। ডাইনি মহিলা হাসতে হাসতে এগিয়ে আসছে। একজন আরেকজন কে বলছে,
"আজ আরেকটা পেয়েছি  । আজকের খাবারটা ভালোই হবে ।"
বলেই দু'জনে এক সাথে মতি চোরকে জাপটে ধরতে গেলো।আর সঙ্গে সঙ্গে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলো মতি চোরা।।
তারপর কি হয়েছে আর মনে নেই।যখন মতি চোরার জ্ঞান ফিরলো,তখন সে নিজেকে জঙ্গলের মধ্যে এক ফাঁকা জায়গায় আবিস্কার করলো।কোথায় সে প্রাসাদ? নাহ, কিচ্ছু নাই।
তারপর....
তারপর আর কোন দিন সে রাতের বেলায় বাহিরে যেত না।চুরি তো দূরের কথা!
Nilkanto( নীলকান্ত)
Nilkanto( নীলকান্ত)

সোমবার, ১৫ জুন, ২০১৫

  • ২:০২:০০ AM

--------------
ছেলেটার সর্বশেষ স্ট্যাটাস ছিলো
"ফ্রেন্ডস,
আজ থেকে আর আমি কখনো এফবি তে আসবো না।
বিদায় all...
মিস ইউ অল।
ভালো থেকো সবাই।
আসি...."
তারপর একটা বিকেল কিংবা সন্ধ্যা এলো।একটা প্রাণ হতাশার অনলে দগ্ধ হয়ে পৃথীবি ছাড়লো।
এরপর সব শেষ!  একটা নাম মুছে গেলো পৃথীবির জীবিত মানুষের তালিকা থেকে।
শেষ শব্দে যে আসার প্রতিশ্রুতি ছিলো, সে আসা আর কখনো হলোই না।
এবার আসি  কেন,কি কারনে তার এই আত্নহনন  সে বিষয়ে।
ছেলেটার ফেসবুক টাইমলাইনের প্রথমেই বেশ কয়েকটা ছবি।তার মধ্যে হতাশাগ্রস্ততা, বিধ্বস্ততা আর মলিনতার সুস্পষ্ট ছাপ।
পরপর বেশ কিছু স্ট্যাটাসে মায়ের প্রতি তীব্র অভিমান। কোন এক কারনে কিংবা অকারনে "মায়ের কাছে তার অধিকার খর্ব। মা'কে মা ডাকার অধিকার হতে বঞ্চিত হওয়ার তীব্র অভিমান।"
কোথাও আবার মায়ের বিরুপ আচরন তার মনে রেখাপাত করেছে বেশ গভীর ভাবে।তার ভাষায়,
"মা যদি তার প্রতিবন্ধী শিশুটিকে বোঝা মনে করে,তাহলে সেই শিশুটির মত অসহায় আর কেউ না।"
আমি জানি না কেন সে একথা লিখেছিলো। এমনকি এও জানিনা সে নিজেই সেই শিশুটি কিনা।
অতঃপর তার ভাষায় সে ছোট বেলা থেকে পারিবারিক অনাদর-অবহেলায় বড় হয়েছে।এবং যখন সে সব কিছু বুঝতে শিখেছে,বড় হয়েছে, তখনো তার সাথে ঠিক একই আচরন করা হয়েছে।
"এভাবে সে কিভাবে বাঁচতে পারে? "
ছেলেটির এই এক প্রশ্ন ছিলো সেখানে।
টাইমলাইনের আরো গভীরে গেলে তার হতাশার আরো কিছু দৃশ্য চোখে পড়ে তার লেখায়।যখন সে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত যে, সে কি করবে।এমনকি নিজের অতি আপনার স্থান, "মায়ের কোল" সেখানেও ফিরে যাবার সাহস পাচ্ছে না,বারবার সে ভীত হচ্ছে। আর হওয়াটাই এখানে বোধহয় স্বাভাবিক ছিলো, যদি পূর্বোল্লিখিত কথাগুলো সত্য হয়। এবং সে কথা গুলো অবশ্যই সত্য ছিলো, কারন "মানুষ মৃত্যুর আগে চাইলেও মিথ্যা বলতে পারে না।"
আত্মহত্যার কারণ মোটামুটি পরিস্কার।
কিন্তু এটাই কি সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা ছিলো,  নিজেকে সেই অনাদর-অবহেলা,হতাশা থেকে মুক্তি করার?
না, কখনোই না।
আজ ছেলেটি পৃথীবিতে নেই।তার খুব কাছের যে ক'জন মানুষ ছিলো, তারা হয়ত আর দু'দিনের মধ্যে সব ভুলে যাবে।
যার বা যাদের জন্য ছেলেটি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে,সে বা তারাও সব ভুলে যাবে। এই সুন্দর পৃথীবিতে তারা ঠিকই সুখের সাথে বসবাস করবে।
কিন্তু যে অবহেলা-অনাদরের জন্য ছেলেটি আত্মহত্যা করলো সেই অবহেলা অনাদরের কি কোন পরিবর্তন হবে? হবে না।
কিংবা নিজের বা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে কি কেউ ছেলেটির জন্য সারা জীবন কাঁদবে?  না,কাঁদবে না।
কিংবা নিজের ভুলের কথা ভেবে কেউ ছেলেটির মত স্বেচ্ছা মৃত্যুও গ্রহন করবে না।
তাহলে তার এই আত্মহত্যার কোন মূল্যই কারো কাছে নেই।এবং থাকেও না।
যে আত্মহত্যা করলো,সে নিজের কাছেই  নিজেই হেরে গেলো এবং হেরে গেলো বাকি পৃথীবির কাছে।
##
আমি যে ছেলেটির কথা বললাম, ওর নাম #আকাশ রোজারিও, বাড়ি পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার উথুলি নামক গ্রামে।যে অত্যন্ত অভিমান আর হতাশা নিয়ে গত কাল পৃথীবি ছেড়েছে।
#আকাশ,
যদি আমার সাথে তোমার পরিচয় থাকতো, তবে আমি কখনোই তোমাকে অকালে ঝরে যেতে দিতাম না।
তোমার কাছে আরো অনেক পথ খোলা ছিলো। কিন্তু তুমি সঠিক ডিরেকশনটা সঠিক সময়ে পাওনি। এটাই সবচেয়ে বেদনাদায়ক। বেদনাদায়ক তোমার মৃত্যু।
##
তাই আত্মহত্যা কোন সমাধান হতে পারে না।বরং প্রতিকূলতা কে টেক্কা দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যদি সকলের মত উচু দরের না হতে পারেন সমস্যা নেই।নিজের নিম্ন দর নিয়ে খুশি থাকেন। আর উচু দরে উঠার জন্য চেষ্টা করতে থাকুন।
মনে রাখবেন, জীবন একটাই।এর কোন ডেমো ভার্সন অথবা এক্সট্রা ভার্সন পাবেন না। জীবনের মূল্য টা বুঝুন।আর আত্মহত্যার মত কোন বাজে চিন্তা মাথায় এলে অবশ্যই ঝেরে ফেলুন।
"Remain calm when a storm hits your life and remember, the sun never too far away."
Writer information NILKANTO