:::: MENU ::::
  • slider image 1

    Take my hand, take my whole life too.

  • slider image 2

    I never want to live without you

  • slider image 3

    I am who I am because of you.

শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫

  • ১:১৪:০০ PM
#১৫ আগষ্ট একটা রাজনৈতিক ট্র‍্যাজেডী। স্বাধীন বাংলাদেশের একটি কালো দিন।
-----------------------
দীর্ঘদিনের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ আহত পাখির মত বাঙালি জাতি যখন মুক্তির জন্য ছটফট করছিলো,কিন্তু মুক্ত আকাশ দেখার সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারেনি ঠিক তখনি একজন মহান নেতার আবির্ভাব হয়।তিনি শুধু বাঙালিকে আকাশ দেখাননি বরং সেই আকাশে কিভাবে উড়তে হয় তাও শিখিয়েছিলেন।তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, সম্মোহনী বক্তৃতা,নিগূঢ়  দেশপ্রেম বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে করেছিলো উদ্ভাসিত । দু'শ বছরের বৃটিশ শৃঙ্খল ভেঙে যে জাতি মুক্তির স্বাদ পেতে চেয়েছে  পাকিস্থানের প্রতারণার শিকার হয়ে তারাই পুনরায় হয়েছিলো শৃঙ্খলে আবদ্ধ। কিন্তু বীর বাঙালির জন্মগত স্বাধীনতার অধিকার শোসন,নির্যাতন আর নিপীড়ন করে যে আটকে রাখা যায় না,তা বোধহয় ভুলে গিয়েছিলো পাকিস্তানি হানাদার রা।আর তাই পিছু হটতে হটতে দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে গিয়েছিলো তখন ঠিকই রুখে দাড়িয়েছে তারা। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে ছিনিয়ে এনেছে একটা  লাল সবুজের পতাকা,ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের একটা স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখন্ড,বাংলাদেশ।
কিন্তু এই সব কিছুর পেছনে যিনি ছিলেন,যিনি শৃঙ্খলাবদ্ধ বাঙালিকে মুক্ত আকাশ দেখিয়েছিলেন,ডানা মেলে উড়তে শিখিয়েছিলেন মুক্ত আকাশে তিনি আর কেউ নন,তিনি বাঙলার আপামর জনসাধারণের নেতা,বাঙালি জাতির পিতা,খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের "শেখ সাহেব" বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।
"শেখ" শব্দের অর্থ নেতা বা দলপতি।সত্যিই তিনি ছিলেন বাঙলি জাতির নেতা,দলপতি। তিনি তার নামের যে সুবিচার করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।তাই বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, যতদিন একজন বাঙালিও পৃথিবীতে থাকবেন ততদিন তিনি ইতিহাসের পাতায় চির অম্লান হয়ে রবেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম পরিচয় কিংবা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তার অবদান কতটা তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সে বিষয়ে ইতিহাসই চিরন্তন স্বাক্ষী হিসেবে রয়ে গেছে।তবে ঐতিহাসিক আলোচনা-সমালোচনার উর্দ্ধে রেখে তাকে মূল্যায়ন করাই শ্রেয়। তার অনবদ্য অবদান,দেশপ্রেম তাকে চিরস্মরণীয় বরণীয় করে রেখেছে এবং রাখবে।
কিন্তু ১৯৭৫ সালের আজকের এই দিনে এই মহান নেতাকে স্বপরিবারে হত্যা করে যে ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিলো তা বাঙালি জাতির জন্য একটা লজ্জাজনক ঘটনা।আমরা কেউই এই দায় থেকে মুক্তি পেতে পারিনা। আমাদের ব্যর্থতা যে,আমরা এমন এক নিবেদিত প্রাণকে ধরে রাখতে পারিনি।আমরা তাকে হারিয়েছি আমাদেরই কিছু বিপথগামী এবং বাঙলার স্বাধীনতার দোসরদের মদদে।কিন্তু তার বিচার আজো আমরা করতে পারিনি এটা আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।
হয়ত,অনেকেই আছেন যারা আজো এই নিকৃষ্ট ঘটনার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলবেন,"এটা সে সময় জরুরী ছিলো। কেউ কেউ বাকশাল গঠন কিংবা তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবেলায় শেখ মুজিবের ব্যর্থতাকে দায় করবেন। কিন্তু তাদের অন্তত এটা মাথায় রাখা উচিত যে,যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা দেশে মাত্র তিন বছরের মধ্যে কোন ভাবেই সম্পুর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
আর সম্ভব নয় এই কারনেই যে,শান্তি স্থাপনের জন্য যেসব নিয়ামক অপরিহার্য তা সেই সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন কিংবা পুনস্থাপন করা কখনোই সম্ভব নয়। এমনকি বর্তমান উন্নত প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক সীমা যখন হাতের নাগালে তখনো সম্ভব হচ্ছে না।আর তা বর্তমান লিবিয়া,সুদান,আফগানিস্তান কিংবা অন্যান্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত রাষ্ট্র গুলোর দিকে তাকালে সহজেই প্রমাণ করা যায়।
সেদিক থেকে ১৯৭২-১৯৭৫, ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত শেখ মুজিবর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ কে যতটুকু এগিয়ে নিয়েছিলেন তা কল্পনাতীত। তিনি তার এক বক্তব্যে নিজের স্বল্প সময়ের সফলতা ও বিফলতা অকপটে স্বীকার করেছেন। সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশের জন্য সংবিধান প্রনয়ন,আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়,যুদ্ধকালীন সময়ে দেশের ভঙ্গুর অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অবস্থাকে স্থিতিশীলকরন থেকে শুরু করে বহু উন্নয়ন কর্মকান্ড হাতে নেন এবং অনেক ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেন যা আজকের যুগেও অনেক রাষ্ট্র প্রধান করতে পারছে না।এত সব কিছুর পরেও দেশের তৎকালীন পরিবেশের জন্য তাকে এককভাবে দায়ী করা কোনভাবেই সমিচীন বলে আমি মনে করিনা।
তিনি যেসব কার্যাবলি হাতে নিয়েছিলেন বা যেভাবে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তা ওই সময়ের প্রেক্ষিতে যথাপোযুক্তই ছিলো।হাজার বছরেএ অগনতান্ত্রিকতায় অভ্যস্ত বাঙালি রক্ত মাত্র কয়েক বছরে গনতান্ত্রিক ভাবে প্রবাহিত হবে তা আসলে আবেগীয় ভ্রম ছাড়া আর কিছুই ছিলো না।এবং সে প্রমাণও আমরা নব্বই এর আগ পর্যন্ত পেয়েছি । এমনকি নব্বই এর পরেও বিভিন্ন দল ও উপদলের রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারীতা ও স্বৈরাতান্ত্রিক মনোভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এবং এটাই সত্যি যে,সেই একনায়কতান্ত্রিক প্রথাকে সাধারন  বাঙালি জাতি যত সহজে আপন করতে পেরেছে তা পক্ষপাতদুষ্ট গনতন্ত্রকে করতে পারেনি।এবং নানা ভাবে এটাও প্রমাণ হয়েছে যে,আবেগপ্রবণ বাঙালি অস্থির চিত্তের এক নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী । আর তাদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখতে হলে কঠোরতার বিকল্প নেই।
কিন্তু এত সব প্রমানিত সত্যকে অস্বীকার করে যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকে "Right act at right time" বলে আখ্যায়িত করেছে তাদেরকে স্বাধীনতার শত্রু বলতে আমি দ্বিধাবোধ করবো না।এমনকি তারা বর্তমান রাজনীতির আড়ালে যেভাবে ইতিহাস বিকৃতির ইন্ধদাতা হিসেবে নোংরা কুটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে তারা প্রকৃত পক্ষে দেশপ্রেমিক নন।বরং পরোক্ষভাবে বাংলার স্বাধীনতা ও স্বাধিন বাংলাদেশের আদর্শ বিচ্যুত এক দল কীট।
যাই হোক,দেশের উন্নয়নের পথে শেখ মুজিবের নির্মম,হৃদয়বিদারক হত্যা কান্ডের পর দু একজন এমন শাসক এসেছেন যারা প্রকৃত দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ ছিলেন।তারাও দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছেন অনেকটা পথ।তাদের অবদানকে অস্বীকার করারও উপায় নেই।
কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হলেও সত্যি যে,বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতি বিদরা যেভাবে এক জন অন্য জনের বিরুদ্ধে কাদা ছুড়াছুড়িতে ব্যস্ত এবং যেভাবে দেশের মহান নেতাদের অবদানকে ভূলুণ্ঠিত করছেন তাতে আমাদের ইতিহাস এবং ঐতিহাসিক গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ কে ছোট করা হচ্ছে।
#তারপরেও আমরা আশাবাদী যে,একদিন আমাদের রাজনীতিজ্ঞরা তাদের ভুল বুঝতে পারবেন।এবং মহান নেতাদের প্রাপ্য সন্মান-মর্যদা অক্ষুণ্ণ রেখে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবেন।
সর্বোপরি আজ ১৫ আগষ্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের ৪০ তম শাহাদত বার্ষিকী তে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি । এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।
#লেখকঃ
সরকার হারুন অর রশিদ
সিইও,SAVA BD
Writer information NILKANTO