:::: MENU ::::
  • slider image 1

    Take my hand, take my whole life too.

  • slider image 2

    I never want to live without you

  • slider image 3

    I am who I am because of you.

শনিবার, ৩০ মে, ২০১৫

  • ১:১০:০০ PM

ভূতের গল্পঃ ঘোর..!
কয়েকদিন হলো রাতে ঠিক ঘুম হচ্ছে না।চোখ বন্ধ করলেই কি সব বিভৎস চেহারাগুলি ভেসে উঠে। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে??
দুই তিনবার ডাক্তারের কাছে গেলাম সমস্যাটা নিয়ে। ডাক্তার নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন,
"নীলকান্ত সাহেব, কোথায়? আপনার তো কোনই সমস্যা নেই। আপনি তো একে বারে ফিট আছেন।"
ডাক্তারকে বললাম,"ডাক্তার,তাহলে আমি যেসব দেখি, সেগুলো? "
ডাক্তার হাসতে হাসতে বললেন,"আপনি সম্পুর্ন সুস্থ আছেন মি. নীলকান্ত। ওসব আসলে কিছুই না।আপনি অত্যাধিক ঘোষ্ট স্টোরি পড়েন আর মিস্ট্রিয়াস বই পড়েছেন একসময়,  তাই হয়ত সামান্য হ্যালিসুলেশন।তবে আমার ঠিক তা মনে হয়না। "
ডাক্তারকে বললাম, "তাহলে কি করবো ডাক্তার? "
তিনি হাসতে হাসতে বললেন, "কিচ্ছু করা লাগবে না।বাসায় গিয়ে দিব্যি রেষ্ট নেন কিছুদিন।অথবা সম্ভব হলে সপ্তাহ খানেক কোথাও থেকে ঘুরে আসুন। তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে।"
আর হ্যা, এসব হরর মুভি আর বই পড়া থেকে পারলে একটু দুরে থাকবেন আপাতত। "
ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে বেশ প্রফুল্ল লাগছিল।যাক,তেমন কোন সমস্যা নেই তাহলে।
খুশি মনে মেডিক্যাল থেকে বের হয়ে সোজা সাত মাথায় এসে চা-টা খেলাম।তারপর রাত সাড়ে দশ'টা নাগাদ সি এনজি ধরে বাসায় চলে এলাম। আমার বাসা,আই মিন মেসটা বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের পেছনে,জহুরুলনগর।  এ পাশটা কলেজের উত্তর দিক। মোটামুটি ফাঁকা একটা সুন্দর এলাকা। কলেজের দু'টো হল,"তিতুমীর "ও "মুন" হল আজ প্রায় বছর সাতেক হলো বন্ধ পড়ে আছে।হলের জানালা,দরজা গুলো ভেঙে গেছে,দু'একটা যাও বা জানালা দরজা আছে তাও কোন মত লুলা হয়ে জানালার চৌকাঠের সাথে আটকে রয়েছে কোনমত।
গভীর রাতে ও দিকে তাকালে পোড়া বাড়ির মত লাগে।মনে হয় কখন বা জানালা দিয়ে কোন বিভৎস মুখ বেড়িয়ে আসে! তারপর গলা কাটা কোন মাথা দেয়াল বেয়ে নেমে আসে নীচে,রাস্তায়। আমি পারত পক্ষে রাতের বেলা ওই দিকে তাকাইই না। আজো বাসায় আসার সময় কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা রুমে চলে এসেছি।  
যাই হোক,
রুমে এসে দেখি আমার বন্ধু আপেল রুমে নেই।মেইন গেটের দরজার সাথে একটা চিরকুট ঝুলানো রয়েছে। তাতে লিখা,"আজ রাতে আর আসতে পারবো  না।কষ্ট করে আজ রাত একাই থাক।"
নাহ!  একা থাকায় আমার কোন আপত্তি ছিল না।এর আগে মাসের পর মাস একা একা একবাসায় থেকেছি।ওটা কোন সমস্যা ছিল না।কিন্তু সমস্যা টা  হয়েছে ইদানীং।মেসে সবাই থাকতেও একা এক রুমে আজকাল ভয় লাগে! সেখানে পুরো মেসে আজ আমি একা।সম্ভবতই গা টা ছমছম করে উঠলো।
কিছুক্ষন পর বুঝতে পারলাম, আমি ঘামছি। শুধু ঘামছি তা না,শরীরটাও বেশ ভারী ভারী লাগছে। এ কেমন যেন অন্যরকম অনুভুতি।
রাত কেবল এগারোটা। আর রাত এগারোটা এসব এলাকায় কিছুই না।ছেলে-মেয়েরা রাত বারোটা একটা পর্যন্ত রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করে।তবে আমি কেন ভয় পাচ্ছি?
দূর! এটা কোন কথা হলো! নিজের মনে নিজেই বলে উঠলাম।
বাসার অন্যান্য রুমের দরজা জানালা লাগানো আছে কিনা দেখে নিজের রুমে এলাম।নাহ! খুব ক্ষুধা লেগেছে মনে হচ্ছে। কিন্ত আজ ডাক্তারের কাছে যাওয়ায় রান্না-বান্না কিছুই করা হয়নি।ভাবলাম , পাশেই মাহাবুব মামার ছোট্ট হোটেল টা থেকে কিছু খেয়ে আসি। আসার সময় হোটেল খোলাই ছিলো, এখনো থাকার কথা।
#
বাসার গেটে তালা মেরে আমি হোটেলের দিকে হাটা ধরলাম। খুব বেশি দূর না।আমার বাসা থেকে এক মিনিটের পথ।কিন্তু একটা মোড় থাকায় দোকান খোলা আছে কিনা ঠিক বুঝা গেল না। আমি হাটা ধরলাম।
কিন্তু আজ কেন জানি,রাস্তাঘাট সব ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। ছেলে পেলে কাউকে দেখছি না।ব্যাপার কি? মনে মনে ভাবলাম।হয়ত আজ একটু ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া তাই কেউ বাহিরে নেই।
রাতও অবশ্য কম হয়নি।এখন রাত ১২ টা ১৩ বাজে।তাই স্বাভাবিক ভাবেই রাস্তা সুনসান হওয়ার কথা। এবং তাই হয়েছে।
এদিকে রাস্তার মোড়ের কাছে আসতে না আসতেই রোড লাইট হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল! দূর কারেন্ট টাও গেল বোধ হয়।
চার পাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে গেছে।কোথায় পা ফেলছি ঠিক বুঝতে পারলাম না।কিছুক্ষন পর চোখ আপনা আপনি আধার সয়ে নিলো।এখন বেশ দেখা যাচ্ছে। মোড় টা পার হতেই দেখলাম, মাহবুবের হোটেল বন্ধ। ধুর! এটা একটা কাম হলো!
এদিকে পেটে যেন রাক্ষস ঢুকেছে।খুব ক্ষুধা পাচ্ছে।যে করেই হোক কিছু খেতেই হবে।তবে এত রাতে আর রান্নার ঝামেলা করতে চাই না।
মাহবুবের দোকানের সামনে দাড়িয়ে ভাবছি,কি করা যায়? কই যাই?
এমন সময় হঠাৎ তিতুমীর হল থেকে একটা চিৎকার শোনা গেল।আমি আসে পাশে কাউকে দেখলাম না। একটু সামনে এগিয়ে বুঝতে চেষ্টা করলাম ঘটনা কি! যদিও মনের মধ্যে একটা দুরুদুরু ভাব রয়েছে তবুও এগিয়ে গেলাম।
বলা যায় না,এমনও তো হতে পারে যে,কেউ হয়ত কাউকে মারছে কিংবা এরকম কোন কিছু!!
আওয়াজ লক্ষ্য করে সামনের দিকে একটু এগুতেই হলের তিনতলার একটা জানালা ধপাস করে মাটিতে আছড়ে পড়লো। আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম পূর্বের রুমটার দুইটা জানালার মধ্যে একটা জানালা মাটিতে পড়েছে।আর অন্যটা ঝুলছে!
আমি আর ওখানে দেরী করলাম না। তাড়াতাড়ি বাসার দিকে হাটা ধরলাম।আর বাসায় গিয়ে পাশের মেসের কাউকে ডেকে নিয়ে যাবো এইটাই স্থির করলাম।
বলতে গেলে একটু দৌড়েই "নামহীনের" সামনে এলাম।মেসের দরজায় টোকা দেব কিন্তু কোথা থেকে যেন একটা কালো বিড়াল এসে পথ আটকে ধরলো। আমি এগুতে চাইলেই বিড়ালটা আমার দু'পায়ের মধ্যে আসতে চাইছে।কিন্তু আমি জানি,
রাতের বেলায় দু'পায়ের ফাক দিয়ে বিড়াল যাওয়া ভালো লক্ষন না। এতে মৃত্যুও নাকি হয়। এদিকে ভয়ে আমার আত্মারাম খাঁচা ছাড়া। আমি যে চিৎকার করবো  তাও করতে পারছি না।কেউ যেন আমার কন্ঠ রোধ করে রেখেছে। গলা থেকে যে আওয়াজ বের হচ্ছে তা অন্য কেউ তো দূরের কথা  নিজেই শুনতে পাচ্ছি না।
আমার সারা গা থরথর করে কাঁপছে।ঘেমে অস্থির হয়ে যাচ্ছি,যেন এই মাত্র বৃষ্টি হয়েছে আর আমি সেই বৃষ্টিতে ভিজছি।
বিড়ালটা কিছুতে পথ ছাড়ছে না। বরং সুযোগ পেলে যেন আমার কন্ঠনালী ছিড়ে নেয়। বারবার দাঁত বের করে আমার দিকে দৌড়ে আসছে,আর আমি হাত পা ছুড়ে লাত্থি দিচ্ছি।কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
হাত ঘড়িতে ১টা বাজার এলার্ম হলো। আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। প্রচুর পানি তৃষ্ণা লেগেছে। এদিকে এই নির্জন পথে আমি একা অসহায় হয়ে আছি।বুক ফেটে চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছি না।
নিজের জানা যত দোয়া দরুদ ছিল, সব একে একে শেষ করেছি প্রায়।এবার চোখ বন্ধ করে জোড়ে করে আল্লাহকে ডাকলাম!
হে আল্লাহ, আমাকে রক্ষা করো।
তারপর চোখ খুলতেই দেখি সামনে কিছু নেই।
ঘরের এনার্জি বালবটা জ্বলছে। মাথার উপর স্ববেগে সিলিং  ফ্যানটা বনবন করে ঘুরছে।কিন্তু আমি ঘেমে অস্থির।পিঠের নিচে বিছানা ভিজে চুপসে গেছে।আর হার্ট বিট এতটাই দ্রুত ও জোড়ে জোড়ে হচ্ছে যে,নিজেই নিজের হার্ট বিট শুনতে পাচ্ছি।
হাত বাড়িয়ে টেবিলের উপর থেকে জগ ভর্তি পানি ঢকঢক করে গিলে খেলাম।
যাক বাবা, বাঁচলাম!!!
কিন্তু মোড়টা এখনো পাচ্ছি না কেন?
ঘরের দরজা জানালা লাগিয়ে শুয়ে আছি।
Nilkanto( নীলকান্ত)
Writer information NILKANTO