পারু,
হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙে গেলো টিনের চালায় বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে।
একটু কান খাড়া করে শুনতে চাইলাম, আসলে এটা বৃষ্টি না তোমার নুপুরের নিক্কন।একবার
মনে হল, তুমি আমার বারান্দায় দাড়িয়ে আছো।
লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠলাম।দরজা খুলে দেখি,না সেখানে কেউ নেই বৃষ্টির ফোটারা ছাড়া।শুধু মাঝে মাঝে কে বা কারা যেন বেশ জোড়ে সোরে হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে একেরপর এক।আর কোন অশতীপর বৃদ্ধার দৃষ্টি শক্তি বোধহয় একটু বেশিই কমে গেছে।না হলে এরকম সকালে বিজলী বাতি জ্বালিয়ে আমার বোকা হয়ে দাড়িয়ে থাকা দেখত না।
টিনের চাল বেয়ে বৃষ্টির ধারা সারি করে মাটিতে পরছে, তারপর গড়িয়ে গড়িয়ে জমা হচ্ছে ঐ নিচু জায়গাটায়। জানো পারু, ওখানে বৃষ্টির ফোটারা এক এক করে স্পেস স্যুট এর মাস্ক পড়ে কি দারুন ভাবে ভেসে যাচ্ছে! ইস! তুমি যদি দেখতে।
পারু,
কথা ছিলো,সকালে তোমার সাথে দেখা করব।আমারো খুব ইচ্ছে করছে এই বৃষ্টিতে কাক ভেজা হয়ে তোমার সামনে দাঁড়াতে। তারপর, খোলা আকাশের নিচে, ঝুম বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হেটে যাব সাতমাথায়।ওখান থেকে পৌর পার্ক,খোকন পার্ক হয়ে আলতাবেলীর সামনের ফুট পাতে দাড়িয়ে দাড়িয়ে এক কাপ চা খাব ভাগা ভাগি করে।।লোকজন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে আর মাঝে মাঝে ঐ অশতীপর বৃদ্ধা হয়ত হাতের লাইট জ্বালিয়ে দেখবে আমাদের ছেলেমানুষি।
কিন্তু কি করব বলো, তুমিই তো বের হতে পারবে না। আর এখন যখন তোমাকে এত সব লিখছি তখন, হুমকি-ধামকির জোড় অনেক বেরে গেছে।বেড়ে গেছে বৃদ্ধার লাইটের চার্জ।।
এখন আমি কি করি বলো তো!!
পারু,
তুমিও কি জানালা খুলে বৃষ্টি দেখছ?
মনে হচ্ছে,তুমি হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির ফোটাগুলো ধরে আলতো করে ঠোটের কোনে লাগিয়ে মিষ্টি করে হেসে উঠছো আমাকে ভেবে! দেখো, কি আশ্চার্য ! আমিও তো তোমার ছুয়ে দেয়া বৃষ্টিতে ভিজছি।এ যেন,তোমার স্পর্শ বুলিয়ে যাচ্ছে আলতোভাবে।
অনেক মিস করছি তোমাকে, পারু। অনেক মিস করছি তোমাকে।
এভাবেই মিস করে যাব কাল হতে অনন্তকাল ধরে। ভাল থেক প্রিয় পারু।আমি দেবদাস হয়ে না হয় পথ চেয়ে রইবো তোমার!
ইতি
নীলকান্ত