:::: MENU ::::
  • slider image 1

    Take my hand, take my whole life too.

  • slider image 2

    I never want to live without you

  • slider image 3

    I am who I am because of you.

বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪

  • ৬:৩৫:০০ PM

অনেকবার ভেবেছি রাজনৈতিক কোন বিষয় নিয়ে কোন পোষ্ট করবো না। দেশ যেখানে আছে,যেখানে যাচ্ছে যাক। কিন্তু একজন নাগরিক হিসাবে চুপ থাকিতেও পারছিনা।

আচ্ছা, বলেন তো, বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা কেন স্বৈরাচারী হয়ে উঠে?
কেন তারা সত্যের পথে থাকতে পারে না? কিংবা কেনই বা রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসন যন্ত্র দূর্নীতিগ্রস্থ হয়?

আপনারা আপনাদের মতামত দিয়ে যাবেন আশা করি। আর আমার ব্যক্তিগত মতামত টা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি, দেখেন ব্যাপারটা আপনার সাথে মেলে কিনা!

আমার মতে, আমাদের দেশের সংবিধান আমাদের দেশের রাজনৈতিক দল গুলোকে স্বৈরাচারী আর দূর্নীতিগ্রস্থ করার একটা লাইসেন্স দিয়ে রেখেছে। আর যেহেতু স্বৈরাচার ও দূর্নীতি সরাসরি সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত, সুতরাং দল গুলো তো স্বৈরাচারী হবেই, ব্যক্তিগুলো তো দূর্নীতিবাজ হবে সেটাই স্বাভাবিক!  তাই না? হা হা হা!

বলতে পারেন, আমি বোধহয় পাগলের প্রলাপ করছি। 😊 কিন্তু আমি এখন যে যুক্তিগুলো দেবো সেটা শোনার পরও আপনার যদি মনে হয় আমি পাগলের প্রলাপ করছি তাহলে ভিন্ন কথা! আমি বুঝে নেবো, আমি আপনাকে বুঝাতে ব্যর্থ হয়েছি অথবা আমার যুক্তিগুলো কেয়ার করার যোগ্য না।

আচ্ছা, আমাকে কি আরেকটু সময় দেবেন??
কথাটা বলে শেষ করি তাহলে! কি শুনবেন তো? শুনুন তবে...

বাংলাদেশের সংবিধানের একটা আর্টিকেল নিয়ে কথা বলি। সবচেয়ে বিতর্কিত একটা আর্টিকেল। যেটি আর্টিকেল 70 নামে পরিচিত। এখন প্রশ্ন জাগছে হয়ত, আর্টিকেল ৭০ কি? কেনই বা আমি এটা নিয়ে কথা বলছি! আর রাজনৈতিক দলের স্বেচ্চাচারীতা বা স্বৈরাচারী হওয়ার সাথে এই আর্টিকেলের কি সম্পর্ক!

হ্যা ভাই সম্পর্ক আছে। খুব গভীর সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক আলোচনা করার আগে আর্টিকেল সেভেনটি কি সেটা আগে জেনে নেই চলুন।

সংবিধানের আর্টিকেল সেভেন্টিঃ
এই আর্টিকেলটির শিরোনাম হলোঃ
Vacation of seat on resignation or voting against political party.
অর্থ্যাৎ, "রাজনৈতিক দল হইতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোটদানের কারণে আসন শূন্য হওয়া"। 

শিরোনামেই বুঝতে পারছেন যে, এই আর্টিকেল টা মূলত সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ কিংবা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে কি হবে সেই আইনের কথা বলা হয়েছে। এবার চলেন অনুচ্ছেদটা পড়ি-

Artical 70:
" A person elected as a member of Parliament at an election at which he was nominated as a candidate by a political party shall vacate his seat if he –

(a) resigns from that party ; or
(b) votes in Parliament against that party ;

but shall not thereby be disqualified for subsequent election as a member of Parliament."

যদি বাংলায় বলি তাহলে-
"কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-
 
(ক) উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা
(খ) সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন,
 
তাহা হইলে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।]"

এই আর্টিকেল থেকে কি বুঝলেন? আর সংবিধানের এই আর্টিকেলটার সাথে রাজনৈতিক দলের সরকার গঠন করার পর স্বৈরাচারী হওয়ার সাথেই বা সম্পর্ক কি সেটা কি বুঝলেন?
হয়ত কেউ কেউ ইতোমধ্যে এটা বুঝতে পেরেছেন। কেউ কেউ হয়ত আগে থেকেই জানতেন। 

যাই হোক, এবার আমি আসি মূল কথায়। অর্থ্যাৎ এই আর্টিকেলের সাথে আমার উপরের বক্তব্যের সম্পর্ক স্থাপনে।

মূলত সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ একটা রাজনৈতিক দলের প্রধানকে কিংবা সরকার প্রধানকে কিংবা দলের মোটোকে তার নিজ দলের সাংসদদের বিদ্রোহ থেকে সুরক্ষা প্রদান করেছে। সেই সাথে সাথে সাংসদদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার হরণ করেছে। আর সাংসদ যেহেতু জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে সংসদে যান তাই পরোক্ষভাবে জনগণের মত প্রকাশের অধিকারকে হরণ করেছে খুবই সুকৌশলে। 

এর ফলে কি হচ্ছে?
এর ফলে কোন জনবান্ধব সাংসদ দলের অনৈতিক, জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত কিংবা আইনের বিরোধিতা করতে পারে না। যদিও সে চায় কিন্তু সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠে না। কারণ দল কোন সিদ্ধান্ত বা আইন সংসদে উত্থাপন করলে তার পক্ষে ভোট না দিলে সংসদ সদস্যের সদস্যপদ শূন্য হয়ে যায়।  ফলে দল যে সিদ্ধান্তই গ্রহন করুক কিংবা উত্থাপন করুক তা সংসদে সহজেই পাশ হয়ে যায়। 

ব্যাপারটা অদ্ভুত না? একটা সাধারণ মানুষও এই আইন জানলে বলবে,এর চেয়ে অদ্ভুত,ফালতু আইন আর হয়না! 

কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানেন?
এ যাবৎকালে অর্থ্যাৎ ১৯৭২ সালে সংবিধানে এই ধারা সংযুক্তির পর এ পর্যন্ত একাধিক রাজনৈতিক দল একাধিকবার দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচিত হলেও কেউই এই অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের কথা ভাবেন নাই। 
আরে বাবা,ভাববেই বা কি করে! এই অনুচ্ছেদের পরিবর্তন হলে যে দলের স্বেচ্ছাচারিতায় প্রভাব পড়বে। সেটা কি আর কেউ চায়? তার মানে কি তারা এই অনুচ্ছেদ বুঝতেন না? তারা কি এই আইন সংশোধন করতে চাইতেন না? 
হ্যা। চেয়েছে। কিন্তু ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী থেকেই আমি উপরের আর্টিকেল ৭০ হুবুহু তুলে ধরেছি। এবার বুঝেন কি সংশোধন হয়েছে!! ঘন্টা সংশোধন হয়েছে। বরং সবাই এই আইনের ফয়দা লুটেছেন। কেউ ১০ বছর তো কেউ ১৬ বছর! 

আচ্ছা, এত কথা বললাম,জিজ্ঞাসা করলেন না, এর মধ্যে দলগুলোর স্বৈরাচারী হওয়ার ব্যাপারটা কিভাবে এলো? 
যদি এই জিজ্ঞাসা আপনার মনের মধ্যে আসে তাহলে বুঝতে হবে আপনার এই লেখার পুরো অংশটা আবার করে পড়া উচিত। আর যদি না আসে,আপনি যদি বুঝতে পারেন ব্যাপারটা  তাহলে বুঝবেন আপনি সত্যিই বিবেক সম্পন্ন জ্ঞানী ব্যক্তি। 

আর যারা সম্পর্ক টা ধরতে পারেন নাই কিংবা আরো ডিটেইলস জানতে চাইছেন তাদের জন্য একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝাই।

ধরেন, একটা রাজনৈতিক দল দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচিত হলো। এদের মধ্যে দলকানার বাহিরে জন বান্ধব সংসদ সদস্যও আছেন কিছু। এবং এর মধ্যে আরো কিছু সাংসদ আছেন যারা সময়ে সময়ে অন্যের ভাল কাজের দ্বারাও ইনফ্লুয়েন্ড হন। এবং তিনিও ভাল কিছু করতে চান। এখন, দলের মধ্য হতে একটা সিদ্ধান্ত হলো এমন একটা আইন পাশ করার যার ফলে কোন নাগরিকের প্রাইভেসি বলে কিছু থাকবে না।  বিলটা সংসদে উত্থাপিত হলো।যথারীতি স্পীকার মহোদয় বিলটির সামর্থনে ও বিপক্ষে কারা তাদের হা/না ভোট করলেন।

এবার সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ এর কারণে যেটা হবে সেটা হলো বেশিরভাগ সাংসদ বিলের বিপক্ষে থাকলে হ্যা ভোট দিতে বাধ্য হবেন। কারণ তা না হলে তার সংসদ সদস্যপদ শূন্য হয়ে যাবে। অর্থ্যাৎ তিনি এমপিত্ব হারাবেন। 
আর যদি এমন হতো, এই আর্টিকেল টা বিলুপ্ত করা হয়েছে। তাহলে কি হত? তাহলে এই বিলের বিপক্ষে ওই রাজনৈতিক দলের জনবান্ধন সাংসদগণও "না" ভোট প্রদান করতে পারতেন। ফলে এরকন একটা কালো আইন পাশ করা সম্ভব হত না। 

এবার বুঝলেন? কি কারণে এই আর্টিকেল টার বিলোপ দরকার? কিভাবে এই আর্টিকেল টা রাজনৈতিক দলগুলোকে যা ইচ্ছা তা করার সুযোগ করে দিচ্ছে! যার চাক্ষুষ ও রিসেন্ট উদাহরণ হলো বিগত সরকারের শাসনামল।  

আচ্ছা,এবার আসি এই আর্টিকেলের সাথে দূর্নীতির সম্পর্ক কি?

আচ্ছা একটা কথা বলেন তো, আপনার কোন বন্ধু যদি একটা আকাম করে আর সেটা যদি আপনি বাধ্য হয়েও সামর্থন করেন কিংবা আপনি ব্যাপারটা জানেন। তাহলে আপনার বন্ধু আপনার কাছে ধরা থাকবে কিনা!
 এর ফলে আপনি কোন আকাম করে ফেললেও আপনার ওই বন্ধু যতই জানুক সে বিষয়ে সেও কিন্তু আপনাকে সামর্থন দিতে বাধ্য হবে।সেটা প্রকাশ্যে হোক আর মৌন ভাবে হোক। দেবে কিনা বলেন??

যদি আপনার আকামে আপনার বন্ধু সামর্থন দেন, আর আপনার বন্ধুর আকামে আপনি, তাহলে দেশের মাথায় বসে যারা একজন আরেকজনের সামর্থনে কিংবা ব্যবহার করে বড় বড় আকাম করবে তাদেরকে কে রুখতে যাবে? কে বাধা দেবে? কেই বা আইনের আওতায় আনবে!! 

দূর্নীতির ব্যাপারটা দেশের টপ টু বোটম এই চেইন মেইন্টেইন করেই হয়। কারণ সংসদে যখন দলের এক আকাম করার কিংবা ঢাকার জন্য সকল সদস্য ব্যবহৃত হয় তখন তাদের দূর্নীতি করতে রুখবে কে? আর এরা দূর্নীতি করতে, প্রতিপক্ষ কে ঘায়েল করতে, দখলদারী, নিয়োগ বানিজ্য করতে যখন সরকারের কর্মচারীদের ব্যবহার করে তখন ওই প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও দূর্নীতির সুযোগ নেবে এটাই স্বাভাবিক।।

আর এভাবেই এরকম প্রতিটা ক্ষেত্রে সংবিধান এর এই আর্টিকেল সবাইকে সুরক্ষা দিচ্ছে কিংবা সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।। আপনার কি মনে হয়? ভিন্ন কিছু মনে হলে জানাতে পারেন। আমি একটু শিখতে চাই,জানতে চাই কেন এই দেশের রাজনৈতিক দলগুলো স্বৈরাচারী আর সবাই দূর্নীতিগ্রস্থ হয়ে উঠে।😊

লেখাঃ 
সরকার মোহাম্মাদ হারুন অর রশিদ©
Writer information NILKANTO