:::: MENU ::::
  • slider image 1

    Take my hand, take my whole life too.

  • slider image 2

    I never want to live without you

  • slider image 3

    I am who I am because of you.

মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

  • ২:১৮:০০ PM

ছোটবেলার দিনগুলো খুব বেশিই মনে পড়ে এখন। কৈশোরের ছোটাছুটি, যৌবনের বন্ধুত্ব,প্রেম আর স্বাধীনতা খুব মিস করি। এখন বয়স তেত্রিশ। যৌবনকে যদি তিনভাগে ভাগ করা যায় তবে এটা যৌবনের শেষভাগ বলা যায়। বেঁচে থাকলে হয়ত আর বছর পাঁচেক পর নিজেকে মধ্যবয়সীদের দলে দেখবো। 
আর যৌবনের এই শেষভাগে এসে জীবন সম্পর্কে এতদিনের ধ্যান ধারণা অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে গেছে। জীবনের অনেক প্রিয় মানুষদের ইতোমধ্যে হারিয়েছি,আনেককে হয়ত আগামীতে হারাবো,অথবা যে কোন সময় নিজেকে হারিয়ে ফেলবো মৃত্যুর সেই অমোঘ সত্যতে। যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

এই তেত্রিশ বছরের মধ্যে আমার প্রিয় ফুফু, চাচা,আমার প্রাণ প্রিয় দাদা দাদী আর সব শেষে আমার মাথার তাজ,আমার মাথার ছাদ,বাবাকে হারিয়েছি। বাবাকে হারানোর পর মাথার উপর থেকে স্নেহ ভালবাসার, নিরাপত্তা আর ভরসার ছাদ সরে গেছে। এখন প্রতিদিনই নিজেকে ইনসিকিউরড ফিল করি। প্রতিদিনই চারপাশের স্বার্থান্বেষী মহলের লোলুপ দৃষ্টিকে ভয় পাই। এখন প্রতিদিনই একেকটা দুস্বপ্নের মত কাটে।

জীবনে বাবা মায়ের তাৎপর্য তাদের হারানোর পরেই বোধহয় মানুষ বুঝতে পারে। আজ আমি যেভাবে বুঝতে পারছি। বাবাকে হারিয়ে মা আর আমার পরিবার কে নিয়ে প্রতিদিন এত এত ভাবনা মাথায় কেড়ে পোকার মত খাচ্ছে যে, মাঝে মাঝে মনে হয়,আমি যদি হারিয়ে যাই তবে এই মানুষগুলোর কি হবে! আমি যে বেদনা সহ্য করছি নিজের ভেতর তা কি তারাও ভোগ করবে! কিভাবে এই জগতের নিষ্ঠুর চাপ তারা বয়ে বেড়াবে! 

কিন্তু আজ হোক, কাল হোক একদিন তো আমাকেও সব ছেড়ে ছুড়ে চলে যেতে হবে। আফসোস থাকবে যদি আমার পরিবার আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সিকিউর করে যেতে না পারি। হয়ত এখন আমি যেভাবে সব মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি তারাও সব মানিয়ে নেবে। কারণ এই দুনিয়াতে বাঁচতে হলে আমাদের মানিয়ে নিতে হয়,মানিয়ে চলতে হয়! 

গত তেত্রিশ বছরে জীবনের অভিজ্ঞতা সুখ দুখ, সঠিক আর ভুলের সংমিশ্রনে ছিলো। জীবন থেকে যা কিছু শিখেছি আর যা কিছু পেয়েছি তা এখন মনে হয় অতি অপ্রতুল। এই অভিজ্ঞতা আসলে কিছুই না। এই শেখা আসলে কোন শিক্ষাই না। আরো অনেক কিছুই শেখার ছিল,অনেক অভিজ্ঞতাই নেয়ার ছিল, যা শিখতে পারি নি। যা নিতে পারিনি।

ছোট বেলার পরিবারের সবার যে ভালবাসা পেয়েছি আর একে একে যেভাবে ভালবাসার প্রিয় মানুষ গুলোকে চিরতরে হারিয়েছি তা আমাকে ব্যতীত করে। আমার হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের কাছে আমি এতটাই ঋণী যে তাদের ঋণ আমি পরিশোধ করতে পারবো না কখনো। হয়ত তারাও চান না যে আমি তাদের ঋণ শোধ করি। হয়ত শোধ করতে পারলে তাদের এভাবে আর মনে পড়ত না। আর তাদের ঋণ পরিশোধ করার যোগ্যতাহীনতা আমাকে এতটাই ব্যথিত করে যা বুঝানো সম্ভব না।  আমি প্রতিদিন সেই যন্ত্রণায় ছটফট করি। আর যে প্রিয়জনেরা এখনো আছেন আমার পাশে তাদের জন্য কিছু করতে না পারার অপারগতা আমায় আরো বিমর্ষ করে তোলে প্রতিনিয়ত। 

জীবনের এই ধাপে এসে আসলে শারিরীক অবস্থার যথেষ্ট অবনতি হয়ে গেছে। হয়ত তা আমার বেহিসেবী জীবন যাপনের কারণে অথবা এই বয়সে এসে সবারই একটু আধটু এমনি অভিজ্ঞতা হয়। ঠিক জানিনা। তবে আগে যেভাবে সব কিছুকে থোরাই কেয়ার করতাম তা এখন আর পারি না। চাইলেও অনেক কিছু আর করা হয়ে উঠে না।

আর এভাবেই তেত্রিশ বছর পার হয়ে যায়। জীবন থেকে হারিয়ে যায় সোনালী দিন,সোনালী স্মৃতি।।

#আত্মোপলব্ধি #নীলকান্ত #nilkanto
Writer information NILKANTO